দুই নেতাই দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তবু তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল থামেনি। মঙ্গলবার সকালেই এক বহিষ্কৃত নেতা জয়ন্তকুমার পাঁজা বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন, তৃণমূলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত দলবল নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয়েছেন। বর্ধমানের শহরের কালিবাজারে তাঁকে লক্ষ করে তিন রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়েছে। উত্তমবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরেওনি।
পুলিশের কাছে অভিযোগে জয়ন্তবাবু জানিয়েছেন, ইছলাবাদের এক জনের কাছ থেকে তিনি কিছু টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে তা ফেরত না পেয়ে সোমবার রাতে তিনি সেই লোকের বাড়িতে তাগাদা দিতে যান। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ফেরার সময়ে জয়ন্তবাবু খবর পান, কিছু দূরে কালিবাজার পাড়ায় সেই ব্যক্তি তৃণমূলের কিছু লোকের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন। তিনি সেখানে গেলে টাকা শোধ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।
জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা জগন্নাথ পালচৌধুরীর মধ্যস্থতায় ঝামেলা মিটে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি ফেরার সময়ে উত্তমবাবু ও তাঁর সঙ্গী সুচাঁদ ঘোষাল তাঁকে আটকান। সুঁচাদ তাঁকে লক্ষ করে পিস্তলের গুলি ছোড়েন। তিনি কোনও মতে পালিয়ে বেঁচেছেন বলে জয়ন্তবাবুর দাবি। জগন্নাথবাবুও বলেন,“উত্তমবাবু জয়ন্তকে ধরে রেখেছিলেন আর সুচাঁদ তাঁকে লক্ষ করে তিন রাউন্ড গুলি চালায়। আমরা ঘটনাটির কথা নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। আশা করি, ওরা সাজা পাবে।”
উত্তমবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমি কাল ওই সময়ে পাড়ায় ছিলামই না। আর, কালিবাজার পাড়ায় কেউ পিস্তল নিয়ে ঘুরলে তাকে তো আমিই ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেব! আমার নামে মিথ্যে বদনাম দেওয়া হচ্ছে।” কিছু দিন আগে বর্ধমানের ম্যান্ডেলা পার্কের দখল নিয়ে এই উত্তম সেনগুপ্ত এবং শিবশঙ্কর ঘোষ নামে আর এক নেতার অনুগামীদের মধ্যে মারপিট হয়েছিল। জয়ন্ত পাঁজা শিবশঙ্করবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ওই ঘটনার জেরে উত্তমবাবু, শিবশঙ্করবাবু ও জয়ন্তবাবু-সহ পাঁচ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও যে পরিস্থিতি পাল্টায়নি, এই ঘটনায় বস্তুত সেটাই প্রকাশ্যে চলে এল।
পুলিশ অবশ্য এখনই জয়ন্তবাবুর অভিযোগকে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ। বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমনও হতে পারে, অপর নেতাকে ফাঁসানোর লক্ষ্যে অভিযোগকারী মিথ্যে গল্প ফেঁদেছেন। তদন্ত করে দেখে তবেই প্রয়োজনে মামলা দায়ের করা হবে।” |