কয়েক দিন আগেই বর্ধমানে এসে তাঁদের কর্মীদের উপরে শরিকদলের হামলা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তার পরেও ফের একই অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
মহালয়ার আগের রাতে বাজেপ্রতাপপুরের সুভাষপল্লি পাড়ায় এই হামলা হয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলায় তাদের দলের অন্তত চার কর্মী আহত হয়েছেন। দু’জনের আঘাত গুরুতর। তাপস দাস ও শিবু দাস নামের ওই দু’জনের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
|
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার জেলা কংগ্রেস নেতা লক্ষ্মী নায়েক ও আজিজুল হক মণ্ডলের নেতৃত্বে দলের কর্মী ও সমর্থকেরা বর্ধমান থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার দাবিও জানানো হয়। হাসপাতালে শুয়ে আহত তাপসবাবু অভিযোগ করেন, “কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এলাকায় তোলা আদায় করত। নানা অসামাজিক কাজেও যুক্ত ছিল। আমরা সে সবের প্রতিবাদ করায় ওরা আমাদের শিক্ষা দেওয়ার সুযোগ খুঁজছিল। এলাকার ক্লাবের সামনে বাজি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে ওরা আক্রমণ করে। বৈদ্যনাথ লেট নামে আমাদের এক কর্মীকে তাঁর বাড়ির কাছেই বেধড়ক মারধর করা হয়।” তাপসবাবুর দাবি, বৈদ্যনাথবাবুকে মারধরের খবর তিনি জানতেন না। তাই রোজকার মতো এ দিন সকালেও স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতে যান। তৃণমূলের সূর্য মণ্ডল, গোবিন্দ মাল, চন্দন চৌধুরীদের নেতৃত্বে বেশ কিছু লোক তাঁকে সেখান থেকে বের করে রাস্তায় ফেলে পেটায় বলে অভিযোগ। তাদের বাধা দিতে গিয়ে মার খান শিবু দাস। জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) আজিজুল হক মণ্ডলের আক্ষেপ, “জোটসঙ্গী হওয়া সত্ত্বেও আমাদের কর্মীরা তৃণমূলের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। প্রদেশ নেতাদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাব।” যদিও শহর তৃণমূলের নেতা খোকন দাস বলেন, “আমাদের কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকলে রেহাই দেওয়া হবে না। তবে শুনেছি, ওই এলাকায় এত বেশি বাজি পোড়ানো হচ্ছিল যে স্থানীয় মানুষজনই রেগে গিয়ে ওদের উপরে চড়াও হন।”
কংগ্রেসের তরফে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে পুলিশকেও। স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী রমেশ দাস, অনিরুদ্ধ কোঙারদের অভিযোগ, “বর্ধমান থানায় হামলার খবর দেওয়া পুলিশ আসে। কিন্তু আমাদের কাছে কিছু জানতে না চেয়ে উল্টে অভিযুক্তদের সঙ্গে গল্পগুজব করেই তারা চলে যায়। এখনও পুলিশ এলাকায় এসে শুধু ঘুরে যাচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের কোনও চেষ্টাই নেই।”
তবে বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়ে বলেন, “থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমরা মামলাও শুরু করেছি। অভিযুক্তদের অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।” |