বৃষ্টিতে বেহাল মন্দিরের রাস্তা, দাবি সংস্কারের
ঙ্গলের মধ্যে মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাটি সংস্কার হয় না দীর্ঘ দিন। টানা বর্ষণের জেরে তা বেহাল। ফলে পুজোয় কী ভাবে কাঁকসার ওই মন্দিরে যাবেন, তা নিয়ে চিন্তায় আশপাশের বাসিন্দারা। পুজোর আগে রাস্তা সারাই করে চলাচলের উপযুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। মলানদিঘি পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে উদ্যোগের আশ্বাস দিয়েছেন কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়।
কথিত আছে, কাঁকসার ওই জঙ্গলের মধ্যে শ্যামারূপা মন্দিরে কয়েকশো বছর ধরে দেবী চণ্ডীরূপে পুজিত হয়ে আসছেন। শ্যমারূপা মন্দিরের প্রতিষ্ঠা নিয়ে মতভেদ আছে। তবে অনেকের মত, এই মন্দির স্থাপনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন সামন্ত রাজা ইছাই ঘোষ। গৌড়ের সিংহাসনে তখন রাজা দেবপাল। অন্য দিকে, কাঁকসার জঙ্গল ঘেরা ত্রিষষ্টিগড়ের সামন্ত রাজা কর্ণ সেন। তাঁর আশ্রিত সোম ঘোষের পুত্র ইছাই ঘোষ ত্রিষষ্টিগড়ের মধ্যেই ঢেকুরগড় স্থাপন করে কর্ণ সেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধে কর্ণ সেনের হার হয়। জয়ের নিশান হিসাবে ইছাই ঘোষ গড়ে তোলেন এক সুউচ্চ দেউল। যা ঘিরে বর্তমানে গড়ে উঠেছে পর্যটনক্ষেত্র।
কাঁকসার শ্যামারূপা মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।
ইছাই ঘোষ ছিলেন দেবী চণ্ডীর ভক্ত। তিনি গড়ের মধ্যে মন্দির তৈরি করে সেখানে দেবীর নিত্যপুজোর ব্যবস্থা করেন। জনশ্রুতি, সেন বংশের রাজা লক্ষণ সেন এই গড়ে আসতেন। এখানেই নাকি কবি জয়দেবের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। প্রথম জীবনে জয়দেব দেবী চণ্ডীর সাধনা করতেন। পরে তিনি বৈষ্ণব হয়ে যান। দেবী চণ্ডী ভক্তের ভক্তিতে আপ্লুত হয়ে এই মন্দিরে তাঁকে ‘শ্যাম’ রূপে দেখা দেন। তাই দেবী এখানে শ্যামারূপা। দুর্গা রূপেই তিনি পূজিত হন। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে গড় জঙ্গলের ভিতরে এই মন্দিরে বহু মানুষের সমাগম হয়। জেলা ও সংলগ্ন বীরভূম, বাঁকুড়া থেকেও ভক্তেরা আসেন। বিষ্ণুপুর গ্রামের রায় পরিবার মন্দিরের সেবাইত। তাঁরাই দুর্গাপুজোর পূজারি।
মন্দিরে যেতে হলে মুচিপাড়া-শিবপুর পাকা রাস্তা থেকে লাল মোরামের সরু রাস্তা ধরে জঙ্গলের ভিতরে যেতে হয়। কিন্তু বালির লরি যাতায়াতের ফলে রাস্তা অনেক জায়গাতেই বসে গিয়েছে। বৃষ্টিতে খানাখন্দে জল জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। দুর্গাপুর শহর থেকে পুজোর সময়ে সপরিবারে এক দিন ওই মন্দিরে যান বি-জোনের বাসিন্দা শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাস্তাটি একেবারে বেহাল। এ বার পুজোয় যেতে সাহস হচ্ছে না।” মন্দিরের সেবাইত পরিবারের সদস্য পিন্টু রায় বলেন, “ওই রাস্তা আমাদের প্রতিদিন ব্যবহার করতে হয়। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পুজোর আগে রাস্তা সারাই না হলে ভক্তেরা মন্দিরে আসতে পারবেন না।”
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, জায়গাটি বন দফতরের। ওই রাস্তায় কাজ করতে গেলে বন দফতরের অনুমতি লাগবে। এলাকাটি মলানদিঘি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। বন দফতর অনুমতি নিয়ে পঞ্চায়েতের তরফে ওই রাস্তা সংস্কার করা হবে বলে জানান জনার্দনবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.