আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হল হাওড়ায়। আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত শ’খানেক। পুরসভার পানীয় জলের পাইপ ফুটো হয়ে নর্দমার জল মিশে যাওয়াতেই এই বিপত্তি বলে অনুমান করছেন মেয়র ও প্রশাসনের কর্তারা। হাওড়া বেলগাছিয়া এলাকায় পুরসভার কল থেকে জলের সঙ্গে কেঁচো, পোকামাকড় বেরোচ্ছে গত কিছু দিন ধরেই। সেই জলই ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে ব্যবহার করছেন বাসিন্দারা। কিন্তু শুক্রবার থেকে বেলগাছিয়ার পি-৪৪ কলোনিতে বহু লোকের বমি-পায়খানা শুরু হয়। শুধু শুক্রবার রাতেই ২১ জনকে হাওড়া জেলা হাসপাতাল, টি এল জয়সওয়াল হাসপাতাল, সত্যবালা হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়।
শনিবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁদেরই এক জনের মৃত্যু হয়েছে। নাম শ্রীকৃষ্ণ সাউ (৬৫)। তিনি হাওড়ার বেলগাছিয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী সুলোচনা সাউ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে। স্বামী মারা যাওয়ায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে বন্ডে ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন আত্মীয়স্বজন।
|
বেলগাছিয়ার পি-৪৪ কলোনি এলাকাটি এমনিতেই ঘিঞ্জি। তার উপর নর্দমা উপচে নোংরা জল রাস্তায় চলে এসেছে। তার ভিতর দিয়েই গিয়েছে পদ্মপুকর জল প্রকল্পের পাইপলাইন। সেটিতে ফাটল ধরে পাইপের ভিতরে নর্দমার নোংরা জল ঢুকেছে বলে অনুমান জেলা প্রশাসনের। এর জেরে ওই এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনের পদস্থ অফিসাররা। বেলগাছিয়ার বাসিন্দা বকুল বৈরাগীর অভিযোগ, “শুক্রবার থেকে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু শনিবার সকাল পর্যন্ত পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এমনকী, সংক্রমণ রোধ করার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।”
আন্ত্রিক ছড়িয়ে পড়ার খবর যে তাঁরা জানতেন না, সে কথা স্বীকার করেছেন হাওড়া পুরসভার মেয়র মমতা জয়সওয়াল। তাঁর বললেন, “পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর এ ব্যাপারে কোনও খবর দেয়নি। তবে এটা আমাদের সবার ত্রুটি। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, পানীয় জল থেকেই সংক্রমণ ঘটেছে।”
এখন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরসভা? মেয়রের বক্তব্য, “তিন গাড়ি পানীয় জল, হ্যালোজেন ট্যাবলেট, ওআরএস-সহ মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে এলাকায়। স্বাস্থ্য দফতরের সব কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।” এ ব্যাপারে জেলারমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তাঁরা সাহায্য চেয়েছেন। তাঁদেরও একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। জলের পাইপলাইনে ফুটো থাকলে, দ্রুত তা মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের। |