বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনের তদন্তে দলেরই কয়েক জন উঁচুতলার নেতার নাম উঠে এসেছে বলে আদালতকে জানাল সিআইডি। শনিবার তারা যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে এই নেতাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ আনা হয়নি।
সিআইডি জানিয়েছে, কয়েক জন সাক্ষী এবং তপনবাবুর পরিবারের লোকজন কয়েক জন নেতার নাম জানালেই তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা সম্ভব নয়। তার জন্য যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণের প্রয়োজন। সেই তথ্যপ্রমাণ এখনও জোগাড় করা যায়নি। সে কারণেই চার্জশিটে নাম রাখা হলেও এই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও নির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়নি। খুনের তদন্ত এখনও চলছে। তদন্তে যদি ওই নেতাদের বিরুদ্ধে খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করে তারা আদালতকে তা জানাবে।
সিআইডি তদন্তে জেনেছে, ৬ মে বাড়ির কাছেই খুন হন তপনবাবু। তাঁর পরিবারের লোক দাবি করেন, বালি এলাকায় জলাভূমি ভরাটের প্রতিবাদ করতে গিয়েই খুন হয়েছেন তপনবাবু। তদন্তে নেমে সিআইডি জানায়, জমি ভরাটের কাজে যাঁরা নিযুক্ত ছিল, তারাই ষড়যন্ত্র করে ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে তাঁকে খুন করেছিল। এই মামলায় গত ৩০ অগস্ট হাওড়া আদালতে যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হয়েছে, তারা হল বাবন ভৌমিক, কার্তিক দাস (ওরফে শ্বেতী বাপি), ষষ্ঠী গায়েন, অসিত গায়েন ও রমেশ মাহাতো। খুনের সময় রমেশ জেলে থাকলেও, সে-ও এই খুনের চক্রান্তে জড়িত ছিল বলে সিআইডি-র অভিযোগ। এই ঘটনায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয় বাবন ও কার্তিককে। পরে ধরা হয় ষষ্ঠী ও তাঁর ভাই অসিতকে। ষষ্ঠী ছিল তৃণমূল নেতা। দল-বিরোধী কাজের জন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সিআইডি সূত্রের খবর, এ দিনের চার্জশিটে তৃণমূলের যে নেতাদের নাম রয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তপনবাবুর পরিবারের লোকজন ও কয়েক জন সাক্ষী তাঁদের কথা বলেছেন। জলাজমি ভরাট নিয়ে তপনবাবুর সঙ্গে ওই নেতাদের মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল। এ ব্যাপারে হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েক জন নেতার সমর্থন না পেয়ে ক্ষুব্ধ তপনবাবু দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে চিঠি লেখেন। সেই চিঠিও সিআইডি-র হেফাজতে রয়েছে। |