সত্য-ধর্মের রাম-রাজ্যে নারী পাচারের রাজসূয়
ক জন সত্যবান, এক জন ধর্মবীর, এক জন রাম। সীতা-সাবিত্রীদের নিয়েই তাদের কারবার।
সত্যবানের খপ্পর থেকে ধর্মবীরের হাত ঘুরে একেবারে খোদ রামের রাজত্বে গিয়ে পড়েছিল এক জন। মিজোরাম পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে নাম-মাহাত্ম্যের এমন ত্রিবেণীসঙ্গমও সামনে এসেছে।
সত্যবান কে? খাতায়-কলমে বিএসএফ কর্মী। আসল ব্যবসা: মেয়ে পাচারের দালালি। পাচারকারীদের বড় চাঁই যে, তার নাম ধর্মবীর। তার কাছ থেকে মেয়ে কিনে, বকলমে বিয়ে করে এবং বাপ-ছেলে মিলে ধর্ষণ করার দায়ে ধরা পড়েছে যে, সে তবে ‘রাম’ না হয়ে যায় কোথায়? আরও একটি পরিচয় আছে তার। ভদ্রলোক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, বয়স ৬৫।
মেয়ে পাচারের রমরমা নিয়ে অনেক দিন ধরেই জেরবার মিজোরাম পুলিশ। এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে হরিয়ানা থেকে একটি ১৫ বছরের কিশোরীকে উদ্ধার করে তারা। উত্তর আইজলের এসডিপিও পুই পুলামতে নিজে হরিয়ানা গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। সেই সূত্রেই পাচার-চক্রের মাথাদের নাম জানা গিয়েছে। প্রত্যেকেই এখন পুলিশের হেফাজতে।
মেয়েটিকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার সূত্রপাত জুন মাসে। ডারট্লাং এলাকায়, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শিবিরের পাশে একটি গ্রামে থাকত সে। বিএসএফ শিবিরের সামনের মাঠে শুয়োর, গরু চরাতে যেত। বিএসএফ কর্মী সত্যবান সিংহের সঙ্গে সেখানেই তার আলাপ। ২৯ বছরের সত্যবানের বাড়ি এমনিতে রাজস্থানে। বিএসএফ শিবিরে রান্নার কাজে বহাল ছিল সে। রাজস্থানি ঠাটবাটের গল্প বলে, মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে মেয়েটিকে বশ করে সত্যবান। বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দেয়। তার পরেই ভুলিয়েভালিয়ে হাতে তিন হাজার টাকা গুঁজে দিয়ে সত্যবান মেয়েটিকে দিল্লি পাঠিয়ে দেয়। সত্যবানের ভাই রাজু মেয়েটিকে ট্রেন থেকে নামিয়ে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয়। বিনিময়ে মেলে ৯০ হাজার টাকা। তার থেকে ৫০ হাজার টাকা সত্যবানের পকেটে ঢুকেছে বলে জানা গিয়েছে।
পাচারকারীরা মেয়েটিকে নিয়ে গিয়েছিল হরিয়ানায়। ধর্মবীর এদেরই পাণ্ডা। তত দিনে মিজোরাম পুলিশ তদন্তে নেমে পড়েছে। পুলিশে জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে ধর্মবীর প্রথমে মেয়েটিকে হত্যা করতেই চেয়েছিল বলেও পরে জেনেছে পুলিশ। কিন্তু সেই সময়ই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাম যাদব (৬৫) ও তার ছেলে দীনেশ মেয়েটিকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে কিনে নেয়। ধর্মবীরও মেয়েটিকে গছিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে নাবালিকা মেয়েটিকে বেআইনি ভাবে বিয়ে করে নাম বদলে দেয় রাম। বাপ ও ছেলে দু’জনেই তারা মেয়েটিকে ধর্ষণ করত বলে জানা গিয়েছে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। এই সপ্তাহের গোড়ায় পুলিশ মেয়েটির খোঁজ পেয়ে যায়।
রাম-দীনেশ-ধর্মবীর-সহ মোট ছয় জন প্রথমে গ্রেফতার হয়েছিল। সত্যবানকে গ্রেফতার করা হয় বৃহস্পতিবার। শুক্রবার আদালত তার অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের আবেদন নাকচ করেছে। মেয়ে ফিরেছে পরিবারের কাছে। রাম-সত্যবান-ধর্মবীরেরা ধর্মাবতারের আদেশে সকলেই আপাতত আইজল কেন্দ্রীয় কারাগারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.