বণ্টন সংস্থার ঘাটতি মাসে ২০০ কোটি
বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধিতে পুজোর আগে
সায় দেবে না রাজ্য
ণ্টন সংস্থার লোকসান কমাতে বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির মতো ‘অপ্রিয়’ সিদ্ধান্ত অন্তত পুজোর আগে নিতে চায় না রাজ্য।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দাবি, বর্তমান দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করে প্রতি মাসে তাদের আয় হয় ৭০০ কোটি টাকা। অথচ সেখানে ব্যয়ের অঙ্ক প্রায় ৯০০ কোটি। অর্থাৎ, ঘাটতির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা। রাজ্য সরকার শুল্ক (ইলেকট্রিসিটি ডিউটি) মকুব করার পর হয়তো এই লোকসান ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা কমেছে। কিন্তু তার পরেও প্রতি মাসে ক্ষতি হচ্ছে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা। এমন চলতে থাকলে, অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো তাদের ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেবে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। কিন্তু এ সব সত্ত্বেও মাসুল সংশোধনের জন্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে তাদের দরখাস্ত পর্যন্ত জমা দিতে নিষেধ করে দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর।
গত সপ্তাহে এই নিয়ে উদ্বেগের কথা দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়েছে বণ্টন সংস্থা। জানতে চেয়েছে যে, কবে নাগাদ মিলতে পারে ওই দরখাস্ত দেওয়ার অনুমতি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার জবাব পায়নি তারা। এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বলেন, “মাসুলের বিষয়ে যা হওয়ার, তা পুজোর পরেই হবে বলে আশা করা যায়।” যদিও অক্টোবরেই রাজ্য সরকার এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে কি না, তা নিছক ‘অনুমানের ভিত্তিতে’ বলতে চাননি তিনি।
সংস্থার আর্থিক সঙ্কট যে কতটা ঘোরালো, এক কর্তার কথায় তা স্পষ্ট। তাঁর আশঙ্কা, ইতিমধ্যেই তীব্র আর্থিক সঙ্কটের কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। এ বার এই ঘটনা ঘটতে চলেছে বণ্টন সংস্থার ক্ষেত্রেও। সে ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে আয়-ব্যয়ের ঘাটতি মেটানোর উপায়ও আর থাকবে না। তা ছাড়া এখন যা পরিস্থিতি, তাতে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আর নিগমকে বিদ্যুতের দাম মেটাতে পারবে না বণ্টন সংস্থা। টাকা না-পেলে কয়লা কিনতে পারবে না নিগমও। ফলে তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ কমবে। শুধু তাই নয়। টাকা না-পেলে, সরবরাহ বন্ধ করে দেবে এনটিপিসি-সহ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলি।
বেহাল আর্থিক দশার কারণে, এই মুহূর্তে কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বাড়ানোও প্রায় অসম্ভব বলে বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়ে দিয়েছে বণ্টন সংস্থা। সম্প্রতি এই ভাতা আর এক দফা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তাই ‘রেওয়াজ’ অনুযায়ী তা বাড়ার কথা বণ্টন সংস্থার কর্মীদেরও।
শুধু তাই নয়। গত পাঁচ বছর ধরে প্রতি বার উৎসবের মরসুমে কর্মীদের ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে সংস্থা। কিন্তু এ বার আর্থিক সঙ্কটের কারণে তা কমিয়ে ২,১০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। যা রাজ্য সরকারি কর্মীদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ঠিক হয়েছিল, তা-ও দেওয়া হবে শুধুমাত্র মাসে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া কর্মীদেরই। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতর নির্দেশ দেয় যে, আগের বছরের মতো ৫ হাজার টাকা করেই অনুদান দিতে হবে সব কর্মীকে। যার জন্য অন্তত ৮ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে বলে এক কর্তার দাবি।
ফি-মাসে কোন কোন খাতে ৯০০ কোটি টাকা খরচ হয়, তা-ও স্পষ্ট করেছে সংস্থা। এক কর্তার দাবি, শুধু বিদ্যুৎ কেনার খরচই ৭০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে রয়েছে কর্মীদের বেতন-সহ প্রশাসনিক ব্যয় (৯৫ কোটি), ঋণ শোধের খরচ (১০০ কোটি) ইত্যাদি। তাই অবিলম্বে এই ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আয় না-বাড়লে, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ভবিষ্যৎ ‘অন্ধকার’ বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.