|
|
|
|
আগডুম বাগডুম কথা
|
ফাঁকা হল বা দু’কামরার ফ্ল্যাট, সোফা বা চেয়ার প্লেসমেন্ট-এর কিছু কায়দা আছে। বিবরণ। রুমি গঙ্গোপাধ্যায় |
পুজোয় বাড়িতে অতিথির আনাগোনা চলতেই থাকে। আর বাইরের অতিথির জন্য বসার ঘরটাই তো আসল। সেখানে পুরনো ম্যাড়ম্যাড়ে রংচটা আসবাব কোনও রকমে কুশনের আড়ালে কাজ চালাচ্ছে। সোফার অবস্থাও তথৈবচ। নতুন কেনা চকচকে কভারে ঢেকে অতিথির সামনে মুখরক্ষা। সারা বছর কিনছি কিনব করে বছর ঘুরতে চলেছে। তবে আর টালবাহানা নয়। পুজোর আগেই অন্তত বসার ঘরটা সাজিয়ে ফেলুন নতুন কিছু আসবাবে।
আধুনিক জীবনযাত্রার কথা ভেবে তৈরি হচ্ছে সোফা। এদের মধ্যে আবার কোনওটার হেড-রেস্ট ইচ্ছে মতো পরিবর্তন করা যাবে। অনেক ক্ষণ বসার ফাঁকে হেড-রেস্ট নামিয়ে মাথা এলিয়ে খানিক আরাম করে নেওয়া যাবে। মাইক্রো ফাইবার-এর তৈরি তিন আসনের এই সোফা-সেট’এর দাম শুরু ৩০,০০০ টাকা থেকে। এখন চাহিদা বেশি এল-শেপ’এর সোফার। এ ছাড়া নতুন ফ্যাশন-এর তালিকায় রয়েছে ইউ-শেপ’এর সোফা। পিউ লেদার ও ফোমের তৈরি এই সব সোফা দেখতে যেমন সুন্দর, আরামদায়ক বটে। সাবেকি ধাঁচে ঘর সাজাতে চাইলে দেখতে পারেন কাঠ এবং ফোমের তৈরি পুরনো নকশার সোফা-সেট বা গুজরাতি কাজ করা সেগুন কাঠের সোফা-সেট। যাঁদের পিঠে-কোমরে ব্যথা রয়েছে, তাঁদের জন্যও রয়েছে বিশেষ ভাবে তৈরি অপেক্ষাকৃত শক্ত সোফা-সেট। |
বাজেট একটু কম হলে কিনতে পারেন বেতের তৈরি অ্যাপেল বা স্কোয়ার বক্স সোফা-সেট। ছ’টি আসনের এই সেটের দাম পড়বে ১৬,০০০ টাকার মতো। মানানসই কুশন চাপালে এই সোফা দেখতেও ভাল লাগে, আরামদায়কও বটে। তবে বেতের আসবাব একটু যত্ন করতে হয়। দু-তিন বছর পর কালো হয়ে যেতে পারে। তখন গরম জলে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে তা দিয়ে সোফা ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে ব্রাশ দিয়ে ঘষে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নেবেন। এ বার পালিশ করলেই আগের ঔজ্বল্য ফিরে আসবে।
বেত মনে না ধরলে রাখতে পারেন বাঁশের তৈরি সোফা-সেট বা চেয়ার। সোনালি-মেরুন রঙের এই রকম সেটের আলাদা চটক রয়েছে। বাঁশের সোফা রাখলে ঘরে অবশ্যই রাখবেন বাঁশের তৈরি চেয়ারও। পিঠের অংশটি মাত্র একটি বাঁশের তৈরি স্লিক লুক-এর এই রকম চেয়ার বেশ নজরকাড়া। দাম মোটামুটি ভাবে ৮০০ টাকা থেকে। খুব কম খরচে ঘর সাজাতে চাইলে রাখতে পারেন দড়ি-সোফা। কাঠের ফ্রেমে চটের দড়ির কাজ। নকশা তুলতে ব্যবহার করা হয় সাদা কটনের দড়িও। সেগুন, শাল, শিশু বা বাদাম কাঠের তৈরি এই সোফা দশ-বারো বছর ভাল মতো ব্যবহার করা যাবে। দাম শুরু ৮,০০০ টাকা থেকে। তা ছাড়া দড়ির নিজস্ব আরাম রয়েছে। আলাদা করে কুশন লাগে না। কোমরে বা পিঠে ব্যথা থাকলে দড়ির তৈরি কেদারা চেয়ারও ব্যবহার করতে পারেন। দাম ২,৭৫০ টাকা।
|
|
বসার ঘরে সোফা সেটটার পাশে আর একটা কিছু না থাকলে কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। এ ক্ষেত্রে চেয়ার নয়, রাখতে হবে কাউচ। সোফার ফ্রেমের সঙ্গে মিলিয়ে পাবেন। দু’টি অথবা তিনটি আসনের স্লিক লুক-এর এই কাউচের ব্যাকরেস্ট থাকবে না। কাঠের তৈরি কাউচ মিলবে ১২,০০০ টাকায়। অথবা রাখতে পারেন এক আসনের পুপ। কাঠের সোফা-সেট হলে তার সঙ্গে মিলিয়ে চৌকো আকৃতির পুপ বানিয়েও নিতে পারেন। নিচে স্টোরেজ থাকবে। কাঠের কাঠামো তৈরি করে ওপরে মানানসই কুশন রাখলেই পুপ রেডি। আর বসার ঘরে কিছুটা সময় আরাম করে কাটানোর জন্য রাখতে পারেন বিন ব্যাগ।
বসার ঘরে সোফা থাকলেও এক পাশে রাখতে পারেন ডিভান। এক দিকে ফুল-ব্যাক থাকবে। ইচ্ছে হলে সে দিকে শরীর এলিয়ে দিতে পারেন। পুজোয় অতিথি এলে ডিভানেই শোওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। রট আয়রনের তৈরি স্লিক লুক-এর এ রকম একটি ডিভানের দাম শুরু ১২,০০০ টাকা থেকে।
ঘরে ছোট বার কাউন্টার থাকলে তার পাশে অবশ্যই রাখবেন দু’তিনটি উঁচু বার-টুল। অন্য সময় এদেরকেই বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে। বাঁশের সোফা হলে তার সঙ্গে মিলিয়েও বার-টুল পেতে পারেন। দাম ২,৫০০ টাকা।
বারান্দা বা শোওয়ার ঘরের জন্য কিছু চাইলে অবশ্যই দেখবেন রকিং চেয়ার। কাঠের ওপর ফোমের নরম গদি। অনেকটা নৌকো আকৃতিরএ রকম রকিং চেয়ারের দাম পড়বে ৫,৯৯৯ টাকা। একই রকম দেখতে দু’টি আসনের রকিং চেয়ারও পাবেন। পেছনে স্ট্যান্ড থাকে। প্রয়োজন মতো স্ট্যান্ড নামিয়ে এটিকে ইজি চেয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। রাখতে পারেন নরম রিক্লাইনার বা ইজি চেয়ার অথবা লেজি লাউঞ্জার চেয়ার। আধ শোওয়া হয়ে বই পড়ার জন্য এগুলো উপযুক্ত। ছোটদের জন্য, কলমকারি নকশা আঁকা ছোট্ট ইজিচেয়ার মিলবে ১,৩৫০ টাকায়। ফাঁপা স্টিলের তৈরি গার্ডেন চেয়ার বারান্দার জন্য উপযুক্ত। রংচঙে প্যারাশুট কাপড়ের তৈরি এই চেয়ার বেশ টেকসই।
|
ছবি: সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
সৌজন্য: কালেকশন আই, আরবানো, কারিগর |
|
|
|
|
|