|
|
|
|
হ্যান-ও করেঙ্গা আবার ত্যান-ও করেঙ্গা
|
এখনকার খোপ খোপ বাড়িঘরে কোথায়ই বা পা ছড়াবেন, আর কোথায়ই বা মাথা গলাবেন। সব কিছুই চলছে গুঁজে-টুঁজে।
তাই দরকার এমন এক জন অলরাউন্ডার, যে স্পেসও বাঁচাবে, স্টাইলও দেবে। সৌরজিৎ দাস |
বুড়োদাদু বা মিষ্টিঠাম্মার আমলের সেই হাত-পা ছড়ানো বাড়ি আজকাল আর ক’টা লোকের থাকে! অধিকাংশ মানুষেরই এখন ফ্ল্যাটসর্বস্ব জীবন। একটা বা দুটো শোওয়ার ঘর, একটা কিচেন, একটা বাথরুম ও এক চিলতে একটা বারান্দা। খাট, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি, ডাইনিং টেবিল-এর বাইরে আর কয়েকটা আসবাব রাখলেই একেবারে ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’ ভাব। জানেন কি, এই সমস্যার একটি সহজ উপায় আছে? মাল্টি ইউটিলিটি ফার্নিচার। অর্থাৎ, এমন আসবাব যেটার একাধিক ব্যবহার আছে।
ডাইনিং টেবিল ঘরের যেখানেই রাখুন, চেহারা ও সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে বেশ ভালই জায়গা দখল করে থাকে। বাজারে এখন অনেক নতুন ডিজাইনের ডাইনিং টেবিল পাবেন। এগুলি দেখতে বেশ কেতাদুরস্ত, জায়গা নেবে কম, আবার নানা ভাবে কাজেও আসবে। ছোট পরিবারের জন্য এক ধরনের টেবিল পাওয়া যায়, যার একটা দিক মুড়ে নেওয়া যাবে। আবার লোক বেশি হলে ভাঁজ করা অংশটা তুলে দিয়ে বড় টেবিল বানিয়ে নিলেন। ডাইনিং চেয়ারের বদলে স্টুল সমেত ছোটখাট ডাইনিং টেবিল কিনে নিন। এতে চেয়ারের অতিরিক্ত জায়গাটুকু বেঁচে যাবে। খাওয়ার সময় টেবিলের ওপর অন্যান্য বাসনপত্র রাখলে খেতে একটু অসুবিধেই হয়। এমন টেবিলও পাবেন যার পায়ায় ক্যাবিনেট বা খোপ করা আছে। |
|
তাতে আপনি অতিরিক্ত থালাবাসন বা খাবারদাবার ঢুকিয়ে রাখতে পারেন। ঘরে বসার জন্য ভাল সোফা রাখার তেমন জায়গা নেই। সে ক্ষেত্রে আপনি কিনতে পারেন এক বিশেষ ধরনের ডাইনিং টেবিল। চৌকো আকারের এই টেবিলটিতে থাকবে চারটি চেয়ার। দরকার হলে এই চেয়ারগুলি জুড়ে দিয়ে আপনি দুজন বসার মতো ছোট দুটো সোফা বানিয়ে ফেললেন।
ড্রইং রুমটা ঠিক মতো সাজাতে অনেক সময়েই আমরা হিমসিম খেয়ে যাই। মনে হয়, টিভিটা কোথায় রাখি? বুক ক্যাবিনেটটা এখানে রাখলে ভাল লাগবে? এখন অনেক ফার্নিচারের দোকানে মাল্টিইউটিলিটি টিভি বা এলসিডি ক্যাবিনেট পাওয়া যায়। এগুলিতে সাধারণত টিভি রাখার জায়গার পাশাপাশি এক দিকে থাকে কাচের শো-কেস ও অন্য দিকে স্টোরেজ স্পেস। ড্রয়িং রুমের কোনও একটা দেওয়াল জুড়ে এটা রেখে দিলেন। দেখতে বেশ লাগবে। এই ধরনের আসবাব আপনি সংশ্লিষ্ট দোকানে মাপ দিয়ে নিজের মতো করে বানিয়েও নিতে পারেন।
|
|
বাড়িতে বাইরের জুতো এমনি এক জায়গায় জড়ো করা থাকলে দেখতে খারাপ লাগে। তেমনই বাজে লাগে দরজার কোণে ঝাঁটা বা ঝাড়ন জড়ো করে রাখলে। এ জন্য দেখতে পারেন মাল্টিপল ইউজ শু র্যাক। এখানে এক দিকে যেমন জুতো রাখার র্যাক রয়েছে, তেমনই আর একটা দিকে রয়েছে ঝাঁটা, ঝাড়ন ইত্যাদি রাখার ক্যাবিনেট। আর এগুলির ওপরে অনেক সময় ড্রয়ার থাকে। সেখানে আপনি গাড়ির বা বাড়ির চাবি বা ছোটখাট অন্যান্য কাজের জিনিস রেখে দিলেন। এ ছাড়া কোনও কোনও দোকানে আবার এমন শু র্যাক পাওয়া যায় যেগুলি ক্রকারি ক্যাবিনেট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। ভেতরে যে র্যাকের পাটাতন রয়েছে সেগুলি খুলে ওপর নীচ করা যায়। ফলে সহজেই ক্রকারি সেট, কাপ, ডিশ এখানে ঢুকিয়ে রাখা যেতে পারে।
মাঝেমধ্যেই বাড়িতে বন্ধুবান্ধদের নিয়ে বেশ জমিয়ে পার্টি হয়। সেখানে কখনওসখনও মদ্যপানের ব্যবস্থাও করতে হয়। কিন্তু এমনি শো কেস-এ দামি ওয়াইন বা স্কচের বোতল সাজিয়ে রাখতে অনেকে পছন্দ করেন না। এখন বাজারে কর্নার শো কেস উইথ এক্সটেনডেবল বার ক্যাবিনেট পাওয়া যায়। ড্রয়িং রুমের কোনও একটা কোণে এটা রেখে দিন সুন্দর কাচের বাসনপত্র দিয়ে। শো কেস-এ একটা ছোট্ট আলোরও ব্যবস্থা থাকে। আর যখন দরকার তখন ধারগুলি টেনে বার করা যায়। ডিঙ্ক সার্ভ করা হয়ে গেলে আবার ধারগুলি ঠেলে ভেতরে ঢুকিয়ে দিন। অভিনব না, কী বলেন?
|
|
এ ছাড়া, একাধিক ব্যবহারের জন্য ছোটখাটো বেশ কিছু জিনিস দেখতে পারেন। যেমন ড্রয়ার এবং হ্যাঙ্গার সহ আয়না। সাইডে হাতে আঁকা কাঠের বর্ডার দেওয়া আয়নার তলায় রয়েছে একটি ড্রয়ার। আর তার তলায় আংটা দিয়ে ঝোলাবার খোপ করা রয়েছে। ড্রয়ারে আপনি ছাবি, কাঁচি, কিংবা সাজগোজের ছোটখাট জিনিস রাখলেন। আর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে দিলেন আপনার জামাকাপড়। অনেক পুরোনো বনেদি বাড়িতে এই জিনিস দেখতে পাবেন। দাম পড়বে ২,৩০০ টাকার কাছাকাছি।
নতুন জামাকাপড় বা জুতো কেনার পাশাপাশি ফার্নিচার ও লাইফস্টাইল স্টোরগুলিতে নজর রাখুন। পুজোর আগে বাড়িতে এমন অভিনব অথচ কাজের আসবাব যোগ করতে ক্ষতি কী!
|
ছবি: সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ মজুমদার
সৌজন্য: ফ্যাব ইন্ডিয়া, স্পেসিয়ো |
|
|
|
|
|