|
|
|
|
ছাত্রাবাস ছাড়ছেন আবাসিকরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ভূমিকম্পের পর ছাদের বিভিন্ন জায়গায় খসে পড়েছে। কোনও অংশ চিড় ধরে খসে পড়ার উপক্রম। অনেকের ঘরে ফাটল ধরেছে দেওয়ালের মাঝামাঝি অংশে এক দিক থেকে অন্য দিক পর্যন্ত। চিড় ধরেছে রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ হস্টেল ভবনের তিন তলার কংক্রিকেটর স্তম্ভগুলিতে। বারান্দার অংশে মেঝেতেও অনেক জায়গায় ফাটল। ওই সব অংশ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি যা তাতে ছাত্রছাত্রীরা থাকতে ভয় পাচ্ছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওই হস্টেলগুলিতে। রাত হলে এখন ছাত্ররা তাই খাওয়া সেরে আশ্রয় নিচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে। অনেকে সাহস করে থাকছেন একতলায় সাইকেল রাখার ঘরে বা রিক্রিয়েশন রুমে। হস্টেলের রুম থেকে চৌকি বের করে শোওয়ার ব্যবস্থা করছেন নিচতলার প্রবেশ পথের করিডরে। যাতে ভূমিকম্প হলে দ্রুত খোলা আকাশের নিচে নিরাপদ জায়গায় যেতে পারেন। ছাত্রীরা আতঙ্কে রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলিতেই। যাদের সাহসে কুলচ্ছে না বাক্স গুছিয়ে আপাতত বাড়িতে চলে যাচ্ছেন হস্টেল ছেড়ে। শুক্রবারও মৃণালকান্তি বর্মন, তাপস বিশ্বাস, তপন বর্মনদের মতো ছাত্রদের হস্টেল ছাড়তে দেখা গিয়েছে। হস্টেল সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। ছাত্রছাত্রীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভূমিকম্পের পর থেকেই। হস্টেল দায়িত্বে থাকা আধিকারিক বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানালেও তাঁরা বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে জানাতে চাইলেও তিনি বেশ কিছু দিন ধরেই না-থাকায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। এমনকী ফোনেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তাঁরা। উপাচার্যের দফতর থেকে জানানো হয়েছে তিনি বাইরে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সওয়া দশটা নাগাদ মৃদু ভূমিকম্প হতেই ফের আতঙ্ক তাড়া করেছে তাঁদের। অধিকাংশ ছাত্র বৃহস্পতিবার রাতেও খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছেন। হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন ছাত্রীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান জ্যোতিষ বসাক বলেন, “রবিবার ভূমিকম্পের কেউ হস্টলে থাকতে চাননি। ঘটনার পর উপাচার্য ফোন করে ছাত্রছাত্রীদের খোঁজ নেন। তিনি বাইরে রয়েছেন। সব জেনে অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করতে বলেন। পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ত দফতরের বাস্তুকাররাও হস্টেল ভবনগুলি পরীক্ষা করে দেখে গিয়েছেন। প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজও শুরু হয়েছে।” অসীম বর্মন, মানিক পাল, রাজীব সাহাদের মতো ছাত্রদের অভিযোগ, “বাস্তুকাররা পরীক্ষা করে বলছেন তেমন কোনও ভয় নেই। অথচ মাথার উপর ছাদের অংশ খসে পড়ার উপক্রম। ৩ তলা ভবনের বারান্দার স্তম্ভগুলিতে ফাটল ধরেছে। যে কোনও সময় ভেঙে পড়বে। রামকৃষ্ণ হস্টেলে রান্না ঘরের একাংশে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছিল ভূমিকম্পের আগেই। ভূমিকম্পে ক্ষতির পর কিছুই করা হচ্ছে না। ত্রিপল চেয়েও পাইনি।” |
|
|
|
|
|