রিপোর্ট বা কাগুজে খতিয়ানে সন্তুষ্ট না-থেকে সরেজমিনে কাজ দেখতে বেরোবেন বলে আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তিনি মন্ত্রীদের সাফ জানিয়ে দিলেন, কাজ না-হওয়ার কোনও অজুহাত শুনবেন না। শুক্রবার মহাকরণে চার মন্ত্রীর সঙ্গে
বৈঠকে মমতা বলেন, “কাজ করতে গিয়ে অসুবিধা হলে যে-ভাবে হোক তা দূর করতে হবে। কোনও অজুহাত শুনব না।”
উন্নয়নের কাজ কোথায় কেমন হচ্ছে, তা দেখতে পুজোর পরে তিনি জেলায় যাবেন বলেও মমতা এ দিন মন্ত্রীদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বসে থাকলে চলবে না। পাহাড় থেকে জঙ্গল সব এলাকার অবস্থা দেখব আমি।”
গত ২৪ অগস্ট টাউন হলে এক বৈঠকের পরে মমতা তাঁর সরকারের ৯০ দিনের কাজের বিবরণ প্রকাশ করেছিলেন। তার পরে চলতি মাসে দু’দফায় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আগামী দিনে কোন দফতর কোন কাজকে অগ্রাধিকার দিতে চায়, লিখিত ভাবে তা জানাতে বলেন। সেই উদ্যোগের সূত্র ধরেই এ দিন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্দেশ্য ছিল, ওই সব দফতরে বিভিন্ন কাজের অগ্রগতি কেমন, সেই বিষয়ে একটা ধারণা তৈরি করা।
বৈঠকে ওই চার দফতরের সচিব ও পদস্থ অফিসারেরাও ছিলেন।
তিস্তা প্রকল্পের জল কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ কেমন এগোচ্ছে, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তা জানতে চান। সৌমেনবাবু বলেন, “খাল কাটা হয়ে গেলে তিস্তার জলে এক লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা হবে। এর প্রস্তুতি চলছে।” জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পে এক বছরে ৫৮ হাজার পুকুর খোঁড়া হবে। আগামী মার্চের মধ্যেই কাটা হবে ১০ হাজার পুকুর।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যা করবেন, দ্রুত করবেন।” মমতার পরামর্শ, কৃষি, সেচ, ক্ষুদ্রসেচ ও বন দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পকে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে জুড়ে নিতে হবে। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ টাকা ফেরত যাওয়া বন্ধ হবে। বিভিন্ন প্রকল্প-জাত পণ্য আরও আকর্ষক করে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপরেও জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “গ্রামের মুড়ি ভাল মোড়কে বিক্রি করতে পারলে তার কিন্তু ক্রেতা আছে।” সারের জোগান যাতে ঠিক থাকে, চাষিরা যাতে ঠিক দামে সার পান, কৃষিমন্ত্রীকে সে-দিকে নজর রাখতে বলেন মমতা। তিনি শেওড়াফুলির নিয়ন্ত্রিত কৃষি-বাজার সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন। মমতা পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা রক্ষা, বছরে ১০০ দিনের কাজে অগ্রাধিকার এবং সময় বেঁধে প্রকল্প শেষ করার দিকে নজর দিতে হবে। |