গতিতে রাশ দিয়ে দৌড়ের ছাড়পত্র ‘ডবল ডেকার’কে
বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করে অবশেষে ৫০ কোটি টাকার দোতলা ট্রেনকে চালানোর ছাড়পত্র দিলেন চিফ রেলওয়ে সেফটি কমিশনার (সিআরএস)। তবে কবে থেকে, এবং কী ভাবে হাওড়া-আসানসোল রুটে সেটি চালানো হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।
ভিড় সামলাতে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোতলা ট্রেন চালানোর কথা বলেছিলেন। রেল-কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ওই ট্রেনের কামরা তৈরির বরাত দিয়ে দেন রেলের কোচ নির্মাণ সংস্থাকে। কিন্তু নকশায় ত্রুটি থাকায় ট্রেনটি চওড়ায় বেড়ে যায়। তাতেই হয় বিপত্তি। পরীক্ষামূলক দৌড়ে দেখা যায়, গতি বেশি হওয়ায় ট্রেনে আড়াআড়ি দুলুনি (হরাইজন্টাল অসিলেশন) হচ্ছে সাংঘাতিক, ফলে কামরাগুলো প্ল্যাটফর্মে জবরদস্ত ঘষা খাচ্ছে। প্ল্যাটফর্ম কেটেও সুরাহা হয়নি। পরে রেলের সেফটি কমিশনারও কয়েক দফা পরীক্ষা করেন। প্রতিটা পরীক্ষায় ডাহা ফেল করে যায় ‘ডবল ডেকার।’ যাত্রার ছাড়পত্রও মেলে না। এই অবস্থায় গত বছরখানেক ধরে হাওড়া কারশেডে সেটি স্রেফ পড়ে রয়েছে।
তবে এ বার তার কপালে শিকে ছিঁড়তে চলেছে। রেল বোর্ডের অন্যতম মুখপাত্র চন্দ্রলেখা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “দোতলা ট্রেন চালানোর অনুমতি মিলেছে। কবে থেকে এবং কখন, কী ভাবে চালানো হবে, তা ঠিক করা হচ্ছে।”
রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, নতুন ‘ডবল ডেকার’ সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি। লাইন ঠিক থাকলে তার ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে ছোটার ক্ষমতা রয়েছে, যা কিনা রাজধানী বা শতাব্দী এক্সপ্রেসের চেয়েও বেশি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তাকে এত জোরে ছোটার অনুমতি দেওয়া
হবে না। উপরন্তু রেলপথে বাঁক থাকা ১৫টি জায়গায় গতি যথেষ্ট কমিয়ে রাখতে হবে নিরাপত্তার স্বার্থে। সব মিলিয়ে দোতলা ট্রেনের হাওড়া থেকে আসানসোল পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘণ্টা ২০ মিনিট। অর্থাৎ অন্যান্য মেল বা এক্সপ্রেসের মতোই।
• গড় গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার
• ১৫টি স্থানে গতি বাঁধতে হবে ১৫ কিলোমিটারে
• সব সময়ে চলবে থার্ড লাইন দিয়ে
• সকালে আসানসোল থেকে হাওড়ামুখী
• সপ্তাহে পাঁচ দিনের বেশি চালানো যাবে না
এবং নির্ধারিত গতিবেগ ও অন্যান্য ট্রেনের সার্বিক সময়সূচির প্রেক্ষিতে স্থির হয়েছে, ‘ডবল ডেকার’ সকালে আসানসোল থেকে হাওড়া আসবে। বিকেলে যাবে হাওড়া থেকে আসানসোল। কিন্তু এই ব্যবস্থা কতটা যুক্তিসম্মত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, সকালে আসানসোল থেকে হাওড়ামুখী যে কোনও ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় গড়ে অন্তত ৫০% আসন ফাঁকা থাকে। সে ক্ষেত্রে আপাদমস্তক বাতানুকূল দোতলা ট্রেনে যাত্রী কত হবে, সে ব্যাপারে সংশয় যথেষ্ট। রেল বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুরের কথায়, “সকালে হাওড়া থেকে চালাতে পারলেই যাত্রীরা উপকার পেতেন। আসানসোল থেকে ছাড়লে লাভ ততটা হবে না। সে রকম যাত্রী হবে না।”
আর যাত্রীই যদি না-হয়, তা হলে এত তোড়জোড় করে ‘ডবল ডেকার’ চালানোর যৌক্তিকতা কী? রেল-কর্তারা এখন সেটাই ভাবছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.