|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
‘শেষ পর্যন্ত তরোয়াল ধরতে পারবেন কি?’ |
|
লোকসংস্কৃতি গবেষণা-র (সম্পা: সনৎকুমার মিত্র) বিশেষ সংখ্যা: ‘আগুন ও লোকসংস্কৃতি’। নানা দৃষ্টিকোণ থেকে আগুন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সম্পাদকের কথা-য়: ‘আগুন’ বা ‘অগ্নি’ সম্বন্ধে এমন বলা যেতেই পারে যে এ-হলো বিশ্বসভ্যতার আদি উপাদান।... আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি অগ্নিকে নিয়ে সর্বার্থসার্থক একটি সংখ্যা তৈরি করতে।
অলকরঞ্জন বসুচৌধুরী তাঁর ‘সমকালের দৃষ্টিতে ভারতের বৈপ্লবিক আন্দোলনের প্রথম পর্ব’-এ লিখেছেন: শোনা যায়, ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতারা এতে যোগদানের জন্য তাঁর কাছে দূত পাঠালে বিদ্যাসাগর নাকি সোজাসুজি প্রশ্ন করেছিলেন, “দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজন হলে শেষ পর্যন্ত আপনারা তরোয়াল ধরতে পারবেন কি?” সন্ধিৎসা-য় বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে নলিনীকান্ত সরকারের ‘আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়’ পুনর্মুদ্রণের পাশাপাশি ছাপা হয়েছে প্রফুল্লচন্দ্রের বাংলা রচনার নির্ঘণ্ট ও কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য ছবি। সম্পাদক রমাপ্রসাদ দে কবিতা লিখেছেন ‘শ্রীঅরবিন্দ, তুমি’, গত দু’টি সংখ্যা থেকেই এ-পত্রের সম্পাদনার দায়িত্বে তিনি, প্রয়াত সম্পাদক সুভাষ ঘোষালকে নিয়ে ‘২১ ফেব্রুয়ারি’ সংখ্যায় কবিতা লিখেছিলেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত: ‘তিনিই তো অস্তিত্বের একমাত্র নিয়ন্তা, আর তাঁর
পরামর্শে সকলেই এক-একটি চর্যায় নিয়োজিত,
সেই দিক থেকে দেখলে মানুষের বেঁচে থাকবার
তাৎপর্য রয়ে গিয়েছে, এইসব বলেছ তুমি তো!’
ভাঙা আলোর মেলা-মেশায় ‘বিশ্বপরিচয়’ এই শিরোনামের নিবন্ধে আশীষ লাহিড়ী জানিয়েছেন ‘বিশ্বপরিচয় যতটা না বিশ্বের বৈজ্ঞানিক পরিচয়, তার চেয়ে অনেক বেশি করে রবীন্দ্রনাথের মহাজাগতিক সংশয়বাদী মনের পরিচয়।’ এ রকমই আরও বেশ কিছু রচনা নিয়ে এ বারের জলার্ক (সম্পা: মানব চক্রবর্তী)। পলাশ ভদ্রের ‘ধায় যেন মোর সকল ভালবাসা...’ ফাদার পল দ্যতিয়েন-কে নিয়ে। অর্ধ শতাব্দীরও আগে সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ নিয়ে সিদ্ধার্থ রায়ের ‘জন্মভূমির স্মৃতি’ বেশ লাগে পড়তে।
সম্পাদকীয় দপ্তর স্থানান্তরিত হওয়ায় গত প্রায় এক বছর চতুরঙ্গ-এর প্রকাশ স্থগিত ছিল। নতুন দপ্তর থেকে শঙ্খ ঘোষ সুখরঞ্জন সেনগুপ্ত সৌরীন ভট্টাচার্য স্বপন মজুমদার প্রসাদরঞ্জন রায়কে নিয়ে তৈরি নতুন সম্পাদকমণ্ডলীর ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ পেল রবীন্দ্র-জন্মসার্ধশতবর্ষ সংখ্যা। পুনর্মুদ্রণে কাজী আব্দুল ওদুদ, হুমায়ুন কবির, নীহাররঞ্জন রায়। প্রবন্ধাদির মধ্যে অবশ্যপাঠ্য প্রসাদরঞ্জন রায়ের “রবীন্দ্রজন্মের সার্ধশতবর্ষ এবং ‘আকাশবাণী’-বিতর্ক”। আছে সুখরঞ্জন সেনগুপ্তর ধারাবাহিক স্মৃতিচারণ: ‘শেষ পারানির কড়ি’। ‘তাঁর ছবির ভাষাতেও তাঁর মনের ভিতরকার ওঠা-নামা ধরা পড়েছে বারবার।... সামগ্রিক রবীন্দ্রনাথকে বুঝে ফেলার পালা আজও সাঙ্গ হয়নি। রবীন্দ্রনাথের ছবি নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ এবং গবেষণা সম্ভবত এই কারণেই বিশদভাবে একটু দেরিতে শুরু হয়েছে।’ সম্পাদক অতনুশাসন মুখোপাধ্যায়ের এ-মন্তব্যেই দশদিশি-র (সংখ্যা নির্দেশনা: অনুপম গুপ্ত) রবীন্দ্রচিত্রকলা-সংক্রান্ত সংখ্যাটির সূচনা। কবির ছবি নিয়ে বহুবিধ আলোচনার সঙ্গে ছাপাও হয়েছে তাঁর কয়েকটি ছবি। গৌতম ঘোষ-কৃত ‘রবীন্দ্রচিত্রকলা: সময় সারণি’ রচনাটিও জরুরি।
অর্ণব সাহার অনুবাদে স্লোভেনিয়ার চিন্তাবিদ স্লাভই জিজেক-এর সাক্ষাৎকার রাষ্ট্রের চেহারা, প্রতিরোধের ধরন, বিশ্বায়ন ইত্যাদি নিয়ে, কারুবাসনা-র (সম্পা: সব্যসাচী সেন) বিশেষ ক্রোড়পত্র ‘নৈরাজ্য’-এ। তাতে রঞ্জন মৈত্রের ‘নকশালবাদী থেকে মাওবাদী এক নৈরাজ্যের পদাবলী’ রীতিমতো তর্ক উসকে দেবে।
তিতির-এর (সম্পা: সঞ্জয় সাহা) ক্রোড়পত্র ‘রাজবংশী ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক’, অশ্রুকুমার সিকদার জ্যোতির্ময় রায়ের কলমে। ‘ব্যক্তিগত গদ্য’-এ সত্যেন্দ্রপ্রসাদ বিশ্বাস মিহির সেনগুপ্ত অরুণেশ ঘোষ দেবদাস আচার্য নির্মল হালদার। ‘পরমাণু শক্তি!’ একক মাত্রা-র (সম্পা: অনিন্দ্য ভট্টাচার্য) প্রচ্ছদ নিবন্ধের বিষয়। ‘এত বিপদসঙ্কুল হওয়া সত্ত্বেও বার বার এত প্রাণনাশের পরেও পরমাণু শক্তি স্থাপনার এত উন্মুখতা ও তোড়জোড় কেন?’ প্রশ্ন সম্পাদকীয়তে। শান্তনু চক্রবর্তীর মতে ‘পরমাণু শক্তি আইনের মতো আইন, যা জনগণকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পথে বাধা, আমাদের গণতন্ত্রে বর্জনীয়। এই জাতীয় আইনের বিরুদ্ধে এখনি জোরালো আন্দোলন হওয়া দরকার।’ ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর দেড়শো বছরে অহর্নিশ-এর ক্রোড়পত্রে একগুচ্ছ রচনা (সম্পা: শুভাশিস চক্রবর্তী)। কাব্যটির নাট্যাভিনয় নিয়ে পড়তেই হবে গৌতম হালদারের ‘কীভাবে ও কেন মেঘনাদবধ কাব্য’ ও জয় গোস্বামীর ‘মেঘনাদ’, সঙ্গে কাব্যটি নিয়ে আলোচনা। রবিশংকর বলের ‘দোজখ্নামা’ নিয়ে লিখেছেন সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ অমর মিত্র প্রমুখ। আছে পলাশ ভদ্রের নেওয়া চিন্ময় গুহের সাক্ষাৎকার।
কারুকথা এইসময়-এ (সম্পা: সুদর্শন সেনশর্মা) বিশিষ্ট লেখকদের কলমে ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’। ট্রুডবার্টা দাশগুপ্তের প্রচ্ছদে সৃষ্টিকোণ-এর (ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যায়) এ-সংখ্যার বিষয় ‘গাছ’। সমতট-এ ক্রোড়পত্র: ‘দেবনাগরীতে বাংলা সাহিত্য’, সঙ্গে কিছু প্রবন্ধ। ‘মনে পড়ে ছেড়ে আসা যশোরের গ্রাম নিয়ে তাঁর টুকরো-টুকরো অনেক স্মৃতি বুনে যাওয়া। ভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলেমিশে দিন কাটাবার স্মৃতি, নদীখাল গুল্মলতার স্মৃতি, যেসব স্মৃতি দিয়ে ভরে থাকে তাঁর অনুচ্চস্বরের কবিতাগুলি...।’ শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন ‘বন্ধুকথা’য়, প্রয়াত কবি ও ‘অনুক্ত’ পত্রিকার সম্পাদক সুনীলকুমার নন্দীকে নিয়ে, চান্দ্রমাস-এর (সম্পা: গৌরশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়) বিশেষ ক্রোড়পত্র: ‘স্মরণ’-এ। |
|
|
|
|
|