|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
সকলই মিশিল গড্ডলিকায় |
বইপোকা |
সকল সম্ভাবনাকে মাঠে মারিয়া ফেলা বঙ্গীয় বইপাড়ার অনেক স্বভাবের একটি। আকর্ষণীয় বিষয়ের গ্রন্থ এই পাড়ায় নিতান্ত সাদামাঠা প্রকারে বি-চিত্র হইয়া প্রকাশিত হয়, আবার অনেক গম্ভীর বিষয়ের গ্রন্থে বহু অপ্রাসঙ্গিক চিত্র অকারণ সন্নিবিষ্ট হয়। অর্থাৎ গ্রন্থের বিষয় এবং লক্ষ্যপাঠক স্থির করিয়া তদনুযায়ী তাহার নির্মাণ করিবার রীতিটি এ পাড়ায় এখনও বহুলাংশে অপ্রচলিত। ইহার ফল প্রায়শ লক্ষ করা যায় গ্রন্থের বিক্রয়-পরিসংখ্যানে। যেমন বাবু শ্রীপান্থ-বিরচিত সেই অপূর্ব সুখপাঠ্য আকর্ষণীয় গ্রন্থ হারেম (দেজ পাবলিশিং)। উহার সাম্প্রতিক সংস্করণটিতে যে মুদ্রণ-বিবরণ আছে তাহা হইতে বুঝা যাইতেছে গ্রন্থটির বিক্রয়ের হাল কী। গ্রন্থটির প্রথম দে’জ সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছিল জুন ১৯৮৬-তে। দ্বিতীয় মুদ্রণ হয় মে ১৯৯৯-এ, তৃতীয় মুদ্রণ মে ২০০৬-এ। অর্থাৎ ২০ বছরে মাত্র তিনটি মুদ্রণ! অথচ গ্রন্থের বিষয় ‘হারেম’, রচনাশৈলীও গুরুগম্ভীর ঐতিহাসিক গবেষণার নহে, শ্রীপান্থর রসিক কলমের স্পর্শধন্য। তথাপি এই হাল কেন? কারণ ইহার নির্মাণ। ইহার প্রচ্ছদ নিতান্ত গ্রাম্য বর্ষণক্লান্ত বৈকালের ন্যায়, ভিতরেও একই নকশার হেডপিস ছাড়া কোনও অলংকরণ নাই, চিত্র ত দূর অস্ত্। গ্রন্থের আকার সাধারণ, কাগজও অতি সাধারণ এবং সর্বত্র সমঞ্জস নহে। অথচ শ্রীপান্থের এই প্রকার গ্রন্থগুলির নির্মাণ কেমন হওয়া উচিত তাহা দেখাইয়াছে বইপাড়ারই অপর এক প্রকাশক। তবে তাহা ব্যতিক্রমই। বইপাড়ার সাধারণ স্বভাবই কল্পনাশূন্যতা, গড্ডলিকা প্রবাহের ন্যায় গ্রন্থ ছাপিয়া তাহার কপিগুলি যুগ যুগ ধরিয়া শম্বুকগতিতে বিক্রয় করিয়া যাওয়া। সেই স্বভাবে পরিবর্তন আসিবে কি? |
|
|
|
|
|