বৃষ্টি পড়ছেই। তার উপর মাঝে মধ্যে লোডশেডিং। এই জোড়া সমস্যায় পুজোর মুখে বিপাকে বাঁকুড়ার মৃৎ শিল্পীরা। একই সমস্যায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। বাসিন্দারাও তিতিবিরক্ত হচ্ছেন।
ক’দিন বাদেই দুর্গাপুজো। কিন্তু, আকাশ কালো করে মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি নামছে। প্রতিমা রোদে শুকোনোর কাজ তাই ব্যাহত হচ্ছে। অনেক শিল্পীর ভরসা তাই ‘ব্লোয়ার’। কিন্তু, ব্লোয়ার দিয়ে ঠাকুর শুকোনোর খরচও বেড়ে গিয়েছে। ‘বাল্ব’ জ্বেলে তার তাপেও অনেকে শিল্পী ঠাকুর শুকোনের কাজ করছেন। শেষ মূহূর্তে দ্রুত কাজ সারার জন্য অনেক রাত পর্যন্ত শিল্পীরা জাগছেন। রাতে কাজ করার জন্য আলোর দরকার। কিন্তু, মাঝে মধ্যেই কয়েক ঘণ্টার জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে, শিল্পীদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বাঁকুড়ার মৎশিল্পী তারক চন্দ ও নিখিল চন্দরা বলেন, “বৃষ্টির জন্য প্রতিমা ঠিকমতো শুকোনো যাচ্ছে না। তার উপর মাঝে মধ্যেই রাতে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। অথচ, পুজোর আর বেশি দেরি নেই। পুজো উদ্যোক্তারা দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কী ভাবে যে কাজ শেষ করব ভেবে পাচ্ছি না।” বাধ্য হয়ে মৃৎশিল্পীরা ইমার্জেন্সি আলো, কুপি জ্বেলে কাজ সারছেন। একই ছবি বিষ্ণুপুর, খাতড়া, সোনামুখী, বড়জোড়া-সহ জেলার প্রায় সর্বত্রই। |
সন্ধ্যা নামলেই দোকানগুলিতে পুজোর বেচা-কেনা জমে ওঠে। কিন্তু, লোডশেডিংয়ের জন্য ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়েছেন। জেনারেটরের সীমিত আলোই তখন তাঁদের ভরসা। বাঁকুড়ার বস্ত্র ব্যবসায়ী নীলাজ চক্রবর্তী, গৌর দত্তের ক্ষোভ, “যখন-তখন লোডশেড়িং হচ্ছে। বিদ্যুৎ এক বার গেলে ঘণ্টা খানেকের আগে ফিরছে না। অন্য দিকে, জেনারেটর থেকে টানা বিদ্যুতে বেশি আলো জ্বালানোর সমস্যা রয়েছে। ফলে, পর্যাপ্ত আলো না থাকায় পোশাকের রঙ বাছতে ক্রেতাদের অসুবিধা হচ্ছে। অনেক ক্রেতা লোডশেডিংয়ের সময় এই কারণে দোকানে ঢুকতে চাইছেন না। দিনের বেলায় আসবেন বলে তাঁরা ফেরত যাচ্ছেন।” প্রতাপবাগানের বধূ সংঘমিত্রা বিশ্বাস, শিখোরিয়া পাড়ার নীলিমা গুপ্তরা বলেন, “সন্ধ্যাতেই বরাবর পুজোর বাজার করতে যাই। কিন্তু, এ বার সন্ধ্যায় লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় পোশাক কেনাকাটি করতে অসুবিধা হচ্ছে। তার উপর রাস্তায় আলো থাকে না। ফলে, জল-কাদায় ভরা রাস্তায় অন্ধকারে যাতায়াত করাও সমস্যা।”
বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা’র অভিযোগ, “পুজোর আগে এ ভাবে লোডশেডিং চলায় ব্যবসার খুব ক্ষতি হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই সমস্যায় পড়েছেন। প্রশাসনের সমস্যা সমাধানে নজর দেওয়া উচিত। এ ভাবে চলতে থাকলে আমরা আন্দোলনে নামব।” পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদু্যৎ বন্টন কোম্পানি লিমিটেডের এস পি মৈত্র বলেন, “বৃষ্টির জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে, কর্মীরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।” |