ফের পোশাক-বিতর্কে জড়াল স্কুল।
সালোয়ার না শাড়িএই বিতর্কের কেন্দ্রে এ বার উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর রামপ্রসাদ বিদ্যাপীঠ। শুক্রবার সালোয়ার কামিজ পরা নিয়ে বহিরাগত কয়েক জন ও সহকর্মীদেরই একাংশের সঙ্গে বাদানুবাদের জেরে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঝুমা বিশ্বাস নামে ভূগোলের ওই শিক্ষিকাকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতালে জানিয়েছে। বছর খানেক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের স্কুলে এই ধরনেরই পোশাক বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। কিছু শিক্ষিকা সালোয়ার কামিজ পরে আসার প্রতিবাদে স্থানীয়দের বিক্ষোভের জেরে স্কুলে তালাও পড়েছিল।
স্কুল সূত্রে খবর, সালোয়ার পরা নিয়ে হালিশহরের ওই স্কুলটিতেও বিতর্ক চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। কয়েক জন শিক্ষিকার সঙ্গে এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের একাংশের ‘ঠান্ডা লড়াই’ও চলছিল। স্কুলের পক্ষ থেকে সরাসরি আপত্তি না করা হলেও ৩০ সেপ্টেম্বর স্কুল-কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষিকাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ঝুমাদেবী-সহ কয়েক জন শিক্ষিকা তা মানতে চাননি। বুধবার থেকে সালোয়ার পরেই স্কুলে আসা শুরু করেন তাঁরা। তাতেই সমস্যা জটিল আকার নেয়। |
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকার অভিযোগ, “এ দিন দুপুরে প্রধান শিক্ষক ঝুমার সালোয়ার কামিজ পরা নিয়ে আপত্তি জানান। সাধক রামপ্রসাদের নামাঙ্কিত স্কুলে কেন সালোয়ার কামিজ পরে আসবেন শিক্ষিকারা, সে প্রশ্ন তুলে ওকে বকাবকি করা হয়। সঙ্গে ছিলেন কিছু বহিরাগত।” তাঁর আরও দাবি, “ঝুমাকে প্রধান শিক্ষকের ঘরে অনেকে ঘিরে ধরে হেনস্থা করেন। ভয়ে অচেতন হয়ে যায় ও।” যে শিক্ষিকারা সালোয়ার কামিজ পরে এসেছিলেন, তাঁরা জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এই পোশাক পরে স্কুলে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই। ঝুমা এ কথা প্রধান শিক্ষককে বলায় তিনি রায়ের প্রতিলিপি দেখতে চান। তা নিয়েই বিতর্ক বাধে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবময় ভৌমিকের অবশ্য দাবি, “সালোয়ার কামিজ পরা, না পরা নিয়ে বিবাদ ছিল না। ব্যক্তিগত ভাবে আপত্তিও করিনি। কিন্তু পরিচালন সমিতিতে আলোচনার পরে সালোয়ার কামিজ পরার কথা বলেছিলাম। এটা স্কুলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ওই শিক্ষিকাকে এম এ পরীক্ষার জন্য ছুটির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। আজ এই সব অপবাদ মাথায় নিতে হচ্ছে!” তবে এই ঘটনায় পুলিশের কাছে বা শিক্ষা দফতরে রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। |