উৎসবের আলো
আলোর পথযাত্রী
রম অর্থাভাব। মাস দু’য়েক আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এ বছর আর পুজো করা যাবে না। বেহাল আর্থিক অবস্থায় কাহিল পুজো কমিটির সদস্যরা। চাঁদা নির্ভর পুজো, অথচ চাঁদা আদায় হচ্ছে না। গত বছরের পুজোর দেনা রয়ে গিয়েছে। ওই দেনা শোধ করে এ বার পুজো করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাসিন্দারা পণ করেছেন, পুজো এ বার হবেই। ঠাকুরপুকুর রসপুঞ্জ পুজো কমিটি কম খরচে কাপড় ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করছে কাল্পনিক মন্দির। সাবেক প্রতিমা। পুজোর চার দিন মণ্ডপ প্রাঙ্গণেই হবে পাড়ার সবার খাওয়া-দাওয়া।
নাকে নথ। লাল পাড় সাদা শাড়ি। ‘গাঁয়ের বধূ’ রূপে মা দুর্গা পূজিত হবেন বড়িশা যুবকবৃন্দের পুজো কমিটির প্রাঙ্গণে।
রাতে নানা রঙের আলো আছড়ে পড়বে মণ্ডপের চার ধারে। ওড়িশার আদিবাসী গ্রামের পরিবেশে পূজিত হবেন মা দুর্গা। গোন্ড উপজাতির জীবনচর্চার নানা দিক তুলে ধরা হবে বেহালা লস্করপুর পুজো কমিটির মণ্ডপে। ধান ও রঙিন সুতো দিয়ে তৈরি করা হবে ওই উপজাতিদের নানা দেবীমূর্তির মডেল। মণ্ডপসজ্জায় বেত ও পাটকাঠি ব্যবহার করা হবে। প্রতিমা সাবেক। আবার পর্ণশ্রী ক্লাব পুজো কমিটির মণ্ডপসজ্জার জন্য মাসখানেক ধরে বাঁশ থেকে ছোট ছোট আঁশ বের করা হয়েছে। বাঁশের ওই ছড়া ও চট দিয়ে তৈরি হচ্ছে পৌরাণিক মন্দির। থাকছে পৌরাণিক নানা কাহিনির চিত্ররূপ। প্রতিমা সাবেক।

অন্ধকার থেকে আলোর পথে দিশা খোঁজার চেষ্টা। বেহালা গাবতলা লেন পুজো কমিটির এ বারের থিম ‘অন্ধকার সরিয়ে আলোর পথে এস।’
ঠাকুরপুকুর সরশুনা মিলনতীর্থ পুজো কমিটির মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে তিরুপতি মন্দিরে আদলে। প্রতিমা সাবেক। পাড়ার খেলার মাঠে তিরুপতি মন্দিরের আশপাশের পুরো পরিবেশই তুলে ধরা হচ্ছে। সরশুনা ফেস-ওয়ানের পুজোর মণ্ডপ টালির চালের গ্রামের মন্দিরের আদলে। মণ্ডপের চার ধারে ও ভিতরে রয়েছে
বাংলার বিভিন্ন জেলার হস্তশিল্পের নানা মডেল। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, নতুন প্রজন্মের সঙ্গে বাংলার হস্তশিল্পের পরিচয় করিয়ে দিতে চান তাঁরা।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েরা নদী ও খালে ঘুর্ণি জাল দিয়ে মাছ ধরেন। এ এক জীবন সংগ্রাম। বেহালা আচার্য প্রফুল্ল সঙ্ঘ পুজো কমিটির থিম ‘গ্রাম্য মহিলাদের জীবিকা সংগ্রাম’। বেহালা সরশুনা সূর্য সেন নগরের রবিতীর্থ পুজো কমিটির মণ্ডপে প্রতিমা সাবেক।
বেহালা ব্রাহ্মসমাজ রোডে ব্রাহ্মসমাজ ক্লাবের পুজো উদ্বোধনে থাকবেন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূমের কিছু দুঃস্থ লোক। মণ্ডপ হবে গ্রামবাংলার একটি ঠাকুরদালানের অনুকরণে।
পাশাপাশি, বেহালা জেমস লং সরণির কাছে পাশাপাশি দু’টি আবাসন, নিউ জেমস ও অজন্তা অ্যাপার্টমেন্টস-এর বাসিন্দারা মিলিত হয়ে একটিই পুজো করছেন গত একুশ বছর ধরে। পুজোর চার দিন এই মণ্ডপে সন্ধে থেকে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.