উৎসবের আলো: বেঙ্গালুরু
প্রবাসে দুর্গার বশে
খুব ধুমধামের সঙ্গে পুজো হয় বেঙ্গালুরুতে। নানা দিকে নানা কলরবে মুখরিত হয় এখানকার পুজো প্রবাসে যার প্রকৃত অর্থ, নানা ভাষাভাষীর মাঝে মিলেমিশে এক সর্বার্থ সাধনা। যা বস্তুত উদ্ভাসিত এক বৃহৎ মিলনমেলা রূপে, মায়ের আগমনের চিহ্ন হিসেবে।
শুরুটা হয়েছিল অত্যন্ত নম্র ভাবে। খুুবই ছোট আকারে, সামান্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে। তখন এই শহর ‘সিলিকন ভ্যালি’ রূপে প্রকাশিত হয়নি। সেই প্রথম পদক্ষেপে এগিয়ে এসেছিল বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন। সেই ১৯৫০ সাল থেকে যাত্রা শুরু, যা এখনও অব্যাহত। এসেছে অনেকেই, তার মধ্যে ‘নর্থ বেঙ্গালুরু’, ‘প্রবাসী’, ‘জয়মহল’, ‘করমঙ্গলা’, ‘জেপি নগর’ প্রভৃতি বিখ্যাত।
রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে সকলেই নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এ বার এল এক আনকোরা দল, নাম ‘ঐকতান’। এই ক্লাব বহু বছর ধরে সরস্বতী পুজো করে আসছে। এ বার তারাও শুরু করে দিল নানা প্রস্তুতি, নানা ব্লু প্রিন্ট তৈরি হতে লাগল। প্রভাতকুমার সাহা নেতৃত্ব দিলেন। সঙ্গে এলেন উদয়ন, আনন্দ, রিনি, রুমা, ভাস্কর, দীপক, সুব্রত, শর্মিলা, সুভাষ, অনসূয়া এবং আরও অনেকে। নতুন পুজোর মধ্যে ‘ঐকতান’ নিয়ে আসবে বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান, যার মধ্যে থাকবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ও। এ ছাড়া একটি স্মারক পুস্তিকা প্রকাশিত হবে, যার মূল বিষয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এখন বেঙ্গালুরুতে প্রায় সাতাশটি পুজো হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকায় মেতে ওঠে বাঙালির দল। ঢাকি আর শিল্পীরা আসেন কলকাতা থেকে। পুরোহিত কখনও এখানকার, কখনও বা কলকাতার। প্রায় সব পুজোমণ্ডপে চলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। শান বা লোপামুদ্রার মতো শিল্পী, চন্দ্রবিন্দু, ভূমি-র মতো ব্যান্ডের দল এখানে অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন। বাজেট ধরা হয় উচ্চগ্রামে, দাতারাও মুক্ত মনে এগিয়ে আসেন।
বাঙালির খাওয়াদাওয়া ছাড়া কোনও লেখা বা অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার নয়। তাই শেষ করতে করতে যদি এলাহি ভূরিভোজের আয়োজনের কথা না-ই বলা যায়, তা হলে লেখা অপূর্ণ থেকে যাবে। শুধু এইটুকুই বলি, যেখানেই যান শুধু খাওয়া আর খাওয়া। ইলিশ মাছের পাতুরি থেকে ভেটকি মাছের ফ্রাই সব পাবেন।
এখন শুধু পুজো শুরুর প্রতীক্ষা!

লেখক বেঙ্গালুরুতে অধ্যাপনারত




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.