উৎসবের আলো
থিমের মেলায় ‘আটপৌরে মা’
মাতৃনির্ভরতাকেই এ বার মডেলের সাহায্যে তুলে ধরা হচ্ছে একষট্টি বছরের বাঘাযতীন উদয়ন সঙ্ঘের মণ্ডপে। এই পুজোর থিম ‘মা’। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে বেল, বেলকাঠ ও বেলগাছের ছাল। প্রতিমাও তৈরি হচ্ছে এই সব উপাদান দিয়েই। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার কারিগররা ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই মণ্ডপের কাজ শুরু করেছিলেন। যাদবপুর শ্যামাপল্লি শ্যামা সঙ্ঘের মণ্ডপ সাজাতে পূর্ব মেদিনীপুরের পটশিল্পীরা এসেছেন। তাঁদের আঁকা বিভিন্ন পটচিত্র দিয়েই সাজানো হচ্ছে এই পুজোর মণ্ডপ। এদের থিম: ‘আটপৌরে মা।’
কারুকার্য মণ্ডিত নাটমন্দির দেখা যাবে বাঁশদ্রোণীর পল্লিশ্রী সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপে। পুজো কমিটির সদস্যদের বক্তব্য, সাধারণত পুরনো নাটমন্দিরের চার ধার খোলা থাকত। পল্লিশ্রীর আধুনিক এই নাটমন্দিরের চার ধারে দেওয়াল। আর ওই দেওয়ালে নানা ছবি রং দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রাস্তা দখল এড়াতে ক্লাবের একতলায় পুজোমণ্ডপ।
মাটি খুঁড়ে পাওয়া গিয়েছে জমিদার বাড়ির ভগ্নাবশেষ এবং দেবী মূর্তি। এইচএল সরকার রোডে পঞ্চাশ বছরের পুরনো সরোজ সঙ্ঘ পরিচালিত বাঁশদ্রোণী সম্মিলিত সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপে দেখা যাবে এই দৃশ্য।
বিদ্যাসাগর কলোনির তিন নম্বর ওয়ার্ডের অধিবাসীবৃন্দ পরিচালিত সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপ গুজরাতের এক মন্দিরের অনুকরণে। কারিগরেরা এসেছেন হুগলির ত্রিবেণী থেকে। থাকছে চন্দননগরের আলোকসজ্জা। রামগড় ৪৭ পল্লির পুজোয় এ বারের মণ্ডপ হচ্ছে পারাদ্বীপের একটি গণেশ মন্দিরের অনুকরণে।
বাঁশদ্রোণীর রায়নগর উন্নয়ন সমিতির মণ্ডপে থাকবে সাতটি মন্দির। প্রতিটি মন্দিরের চূড়া হবে আলাদা রঙের। এখানে ফাইবারের মডেলের সাহায্যে তুলে ধরা হবে উমার বাপের বাড়িতে আসার দৃশ্য।
পাহাড়, জঙ্গল দিয়ে ঘেরা থাকবে এনএসসি বসু রোডের নেতাজি জাতীয় সেবাদল ক্লাবের মণ্ডপ। এর মধ্যে থাকবে ঝরনা এবং বিভিন্ন গুহাচিত্রের অনুসরণে তৈরি মডেল। এখানকার প্রতিমাও হবে একটি গুহাচিত্রের অনুকরণে। টালিগঞ্জের গাঁধী কলোনির অভিযান ক্লাবের মণ্ডপ হবে শোলার তৈরি রংবাহারি পুতুল, সুসজ্জিত রঙিন ভাঁড় এবং ঘট দিয়ে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, মণ্ডপসজ্জায় বিভিন্ন রকমের তিন হাজার পুতুল ব্যবহার করা হচ্ছে।
খানপুর রোডের নাকতলা পল্লি উন্নয়ন সমিতির মণ্ডপ হবে ত্রিপুরার রাজবাড়ির অনুকরণে। মণ্ডপ তৈরি করছেন হাবড়ার কারিগররা। পর পর দু’বছর থিমের পুজোর পর এ বার আর থিমের দৌড়ে নেই আদি নাকতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব। পুজো হচ্ছে সাবেক প্রতিমায়।
ম্যুর অ্যাভিনিউর বিবেকানন্দ কলোনির টালিগঞ্জ অভ্যুদয় সঙ্ঘ, প্রগতি সঙ্ঘ, নেহরু কলোনি, আজাদগড় ও নেতাজিনগর কলোনি কমিটির সর্বজনীন দুর্গোৎসব এলাকার অন্যতম সাবেক পুজো হিসেবে পরিচিত। এই এলাকার ভারতমাতার পুজোও খুব আকর্ষণীয়। বিজয়গড়, বাপুজিনগর এবং চণ্ডীতলার ভরাট মাঠের কাছে ভারতমাতার পুজোর আয়োজন করা হয় প্রতি বছর।
এ ছাড়াও এই এলাকায় নজরকাড়া পুজোর লড়াইয়ে রয়েছে অশোকনগর পার্ক, গ্রাহামস রোড, বিজয়গড় মিতালির পুজো এবং রংকল কলোনির পঞ্চদুর্গা।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.