|
|
|
|
|
|
|
পুজোর হাঁড়ি |
জিভে দিন বৈচিত্র
জ্যুসি ল্যাম্ব থেকে জুজেহ্, পোস্ত-মুরগি
থেকে ম্যাঙ্গো পুডিং পুজোর খাওয়ার নানা
স্বাদের সন্ধানে সুচন্দ্রা ঘটক |
|
‘ইয়াম চা’। ক্যান্টনিজ ভাষায় যার মানে ‘চা খাওয়া’।
কোনও অলস সকাল বা দুপুরবেলা বড়সড় এক পেয়ালা ভর্তি চা। তার সঙ্গে নানা রকম মুখরোচক ‘স্ন্যাকস্’। সাধারণত সেই সব খাবার হয় সেদ্ধ বা তেলে ভাজা। থাকতে পারে হাল্কা মিষ্টি কিছুও। চায়ের সঙ্গে ডাম্পলিং, সুই মাই, রাইস নুডলস্ রোল, ম্যাঙ্গো পুডিং ইত্যাদির এই সম্ভারকে একত্রে বলা হয় ‘ডিম সাম’। চিন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় কিছু দেশে এমন রাজকীয় ভাবে সকালের চা খাওয়ার রীতিই ‘ইয়াম চা’ নামে পরিচিত।
বাঙালির অতি পছন্দের চিনা মেনুতে এই পুজোয় টুইস্ট আনছে সেই ‘ইয়াম চা’র নানা পদ। উৎসবের মরসুমে চিনা মেজাজে একটা অলস দুপুর কাটানোর ব্যবস্থা রয়েছে নিজের শহরেই। চা সহযোগে টোফু পাফ, প্যান ফ্রায়েড স্পিনাচ, জ্যুসি ল্যাম্ব বা স্টিমড্ কর্ন ডাম্পলিং, ক্র্যাব কেকের স্বল্প পরিচিত ডিমসামের সঙ্গে আহার জমতে পারে দক্ষিণ কলকাতার ‘মেনল্যান্ড চায়না’য় বসেই।
|
|
জিভ যদি খোঁজে আরও কিছু স্বাদ বদলের ঠিকানা, এ মরসুমে বেছে নেওয়া যায় ইরানি বা মোগলাই খাবার। পুজোর শহরে নতুন সংযোজন ‘ইসফাহান’-এ চেখে দেখা যায় লেবুর রস, পেঁয়াজ আর জাফরান দিয়ে রান্না করা মুরগির মাংসের পদ জুজেহ্। সঙ্গে থাকছে কিমা পোলাও এবং ফালি করে কাটা চিকেন আর ল্যাম্ব দিয়ে তৈরি কাবাব মোমতাজের মতো কিছু ইরানি রান্না।
উৎসবের মরসুমের নবাবি মেজাজটা আরও একটু উস্কে দেওয়া যায় মোগলাই স্বাদেও। ডাল কাবিলা, মুরগ তাওয়া ভরতা, বাদশাহি বিরিয়ানি, দম কা পনির, ঝিঙা পসিন্দার মতো নানা ধরনের নবাবি রান্না নিয়ে ‘জিলান’-এ চলছে খাদ্য উৎসব। এর পাশাপাশি, ‘মার্কোপোলো’ রেস্তোরাঁতেও পুজোর সময়ে থাকছে গলওয়াতে বোটি, সিকন্দর-এ-দম বিরিয়ানি, হায়দরাবাদি মুরগ্ মসালার মতো আরও কিছু মোগলাই রান্না।
|
|
চিন-মুলুকের চেনা স্বাদের বাহারি রান্না থাকছে ‘হাকা’ রেস্তোরাঁর বিভিন্ন শাখায়। ফিশ ইন চিলি কোরিয়েনডার সস্, স্পিনাচ অ্যান্ড টোম্যাটো ফ্রায়েড রাইস, চিকেন তাইপেই, কর্ন কিউব পেপার সল্টের মতো মুখরোচক নানা পদে সেখানে দিব্যি জমিয়ে তোলা যায় পুজোর ভোজ। এমনই আরও কিছু রান্নার সন্ধানে চলে যাওয়া যায় ‘দ্য ওয়াল’-এ। সেখানে মিলতে পারে চিনা খাবারের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় কিছু চেনা পদও।
একসঙ্গে দেশ-বিদেশের রকমারি স্বাদে পুজোটা জমিয়ে তোলার ঠিকানা ‘ফ্লেম অ্যান্ড গ্রিল’। পাস্তা থেকে ডাল মাখানি, ক্যারিবিয়ান স্পাইস ফিশ থেকে গুলাব জামুন, সবই থাকছে তাদের বুফেতে। এমনই নানা জায়গার স্বাদে পুজোর মেনু তৈরি হয়েছে ‘চারকোল গ্রিল’-এও। স্লাইসড্ ফিশ ইন হট বেসিল সস্ থেকে চিকেন মাখানির মতো নানা পদে ভোজ জমতে পারে বেশ। দেশেরই নানা জায়গার রান্না এক ছাদের নীচে পেতে আবার চলে যাওয়া যায় বাইপাসের ধারের ‘মাচান’ অথবা ‘সিগরি’-তে। মসলাদার পঞ্জাবি থেকে মন মাতানো মোগলাই, সবই থাকছে সেখানকার মেনুতে। |
|
আর উৎসবের মন যদি চায় মা-ঠাকুরমার হেঁসেলের সেই খাটি বাঙালি স্বাদ, তার জন্যও ব্যবস্থা থাকছে শহরজুড়ে। কোথাও একটু নিরীক্ষা তো কোথাও একদম ঘরোয়া সেই ঝোল-ঝাল। এ বার পুজোতেও চেনা-অচেনা নানা ধরনের বাঙালি স্বাদের সম্ভার পরিবেশন করবে ‘ওহ্ ক্যালকাটা’। পুজো উপলক্ষে তাদের বিশেষ আয়োজন লিচুর পায়েসের সঙ্গে থাকছে ধনেখালি কাঁকড়া, পোস্ত-মুরগি, কাঁচা লঙ্কার তরকারি, মাংসের রসভরার মতো কিছু স্বল্প পরিচিত বাঙালি পদ। থাকছে লুচি, কষা মাংস, আম দিয়ে বোয়াল মাছের মতো পরিচিত ঘরোয়া সব রান্নাও।
বাছাই করা কিছু বাংলাদেশি পদ চেখে দেখা যাবে ‘হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনাল’-এ। সেখানে নোয়াখালির কাঁচকলার দম, পুরাণ ঢাকার মুরগি ঝাল ফ্রাই, লাউবড়ির ঘণ্ট, বক্সীবাজারের মাটন রেজালা, পেঁপের চাটনির মতো ও পার বাংলার কিছু বিশেষ স্বাদে মেতে কাটানো যায় উৎসবের কোনও একটা দিন। |
|
সাবেক বাঙালি রান্নাতেও ভোজ সারার জমজমাট ঠিকানা রয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। গন্ধরাজ দিয়ে ঘোলে শুরু করে পেঁয়াজি, পরোটা, তোপসে ভাজা, ভাপা চিংড়ি, বেকড্ রসগোল্লার আহার জমতে পারে দক্ষিণ কলকাতার ‘৬ বালিগঞ্জ প্লেস’-এ। ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে নেই সেক্টর ফাইভের ইন্ডিস্মার্টও। পুজো উপলক্ষে সেখানে স্টার্টার থেকে ডেজার্ট, সবই বাঙালি। মৌরলার পেঁয়াজিতে শুরু করে শেষ পাত জমতে পারে মিষ্টি দইয়ে। ‘হোটেল কেনিলওয়ার্থ’-এও থাকছে সাবেক বাঙালি আহারের ব্যবস্থা। সেখানকার লুচি, পোলাও, মোচা, মাংস, ইলিশে পুজো হয়ে উঠতে পারে জমজমাট। এ সবের পাশাপাশি বাঙালি রান্নার ‘সি ফুড থালি’, ‘আমিষ থালি’, ‘নিরামিষ থালি’র ব্যবস্থা থাকছে ‘তাজ বেঙ্গল’-এর রেস্তোরাঁ সোনারগাঁওয়ে।
|
|
|
|
|
|