সন্ধে নাগাদ একটা চ্যানেলের শো-তে ছিলাম। আলোচ্য বলতে শোয়েব আখতার। ওখানে ছিল ওয়াকার ইউনিসও। হাসতে হাসতে বলল, শোয়েব আখতার নয়। ওর নাম হওয়া উচিত ‘শোয়েব অ্যাক্টর’! ঠিকই বলেছে ওয়াকার। ওয়াসিমও তো প্রায়ই বলে, ওকে নিয়ে কী বলব! আমি তো ক্যাপ্টেন থাকার সময় আগের রাতে জানতাম না সকালে উঠে ও সুস্থ থাকবে কি না!
অ্যাক্টরই বটে। স্রেফ নিজের বই বিক্রি করতে ভারতে এসেছে শোয়েব। বইটা বিক্রি করতে গেলে যে সব ভাঁড়ামো দরকার হয়, সবই করছে আর আমরা দেখছি। আমার প্রশ্ন, কেন ওকে ভিসা দেওয়া হয়েছে? বই বিক্রি করতে এ দেশে আসবে, সচিন-দ্রাবিড়ের মতো ক্রিকেটারদের নামে যা নয় তাই বলে চলে যাবে, আর আমরা সেটা দেখব? এক কথায় বলতে হয়, ওর মাথাটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে। রাতের দিকে শুনলাম একটা চ্যানেলে ও নিজের বক্তব্য ব্যাখ্যা করে বলছে, ও অবসর নেওয়ার পরে নাকি সচিন রান করছে! রাহুল পরিণত হয়েছে! হাস্যকর। ও তো অবসরই নিল বিশ্বকাপের সময়। মাস পাঁচেক হল সবে। তার মানে এত দিন সচিন বা রাহুল কোনও রান করেনি?
সচিন ম্যাচ উইনার নয়, রাহুল নিজের জন্য খেলেও নিজে ক’টা ম্যাচ জিতিয়েছে? খেলেছে তো মোট ৪৬টা টেস্ট, উইকেট মাত্র ১৭৮! সেখানে সচিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৩ হাজারের উপর রান, দ্রাবিড়ের ২৩ হাজারের উপর। কথা বলতে গেলে তো একটা যোগ্যতা লাগে! তা-ও ওয়াসিম আক্রম বললে একটা মানে দাঁড়াত। এ তো পাগলের প্রলাপের মতো শোনাচ্ছে। কেরিয়ারের শুরুতে ইডেনে সচিনকে এক বার বোল্ড করেছিল শোয়েব, মানলাম। তার পর কত বার সচিনকে আউট করেছে? সচিনকে সবচেয়ে বেশি বার আউট করার কৃতিত্ব তো জেমস অ্যান্ডারসনের। সচিনের হাতে কম ঠ্যাঙানি তো শোয়েব খায়নি। ও কি ২০০৩ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিয়নের ঠ্যাঙানিটা ভুলে গেল?
দেখলাম আইপিএলে শাহরুখ খান টাকা দেয়নি বলে কান্নাকাটি করেছে শোয়েব। কে ওকে টাকা দেবে? কেন দেবে? একটা ম্যাচ খেললে যে পাঁচটা ম্যাচ বসে, তাকে টাকা দেওয়াটা বোকামি। দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ছাড়া কোনও ম্যাচ কেকেআরকে জিতিয়েছে বলে তো আমার জানা নেই। খুব সংক্ষেপে, আমরা এই যে লেখালিখি করছি তাতে তো শোয়েবেরই লাভ। ও প্রচারটা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আসলে শোয়েব আখতার বিশ্ব ক্রিকেটের একটা বর্ণময় চরিত্র মাত্র, যে বল ছুড়ে বা ড্রাগ নিয়ে শিরোনামে এসেছিল। ১৭৮ টেস্ট উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলারদের মধ্যেও ও আসবে কি? |