জাতীয় উদ্যানে গন্ডার মারতে এসেছিল চোরাশিকারির দল। তবে এ বার গন্ডারের দিকে রাইফেল তাক করার আগেই, বনরক্ষীদের গুলির নিশানা হল তিন শিকারি। এই ঘটনায় তিন চোরাশিকারির মৃত্যু হয়েছে। চতুর্থ জন অবশ্য পালিয়ে গিয়েছে।
বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র কাজিরাঙা বরাবরই চোরাশিকারিদের পয়লা পছন্দের জায়গা। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি, প্রায় ২১০০ একশৃঙ্গ এশিয় গন্ডারের বাস এখানে। খড়্গের লোভে চোরাশিকারের চেষ্টা অনবরত চলছেই। গত বছর বনরক্ষিদের হাতে ১১ জন চোরাশিকারির মৃত্যু হয়। এই বছর এটাই চোরাশিকারি মৃত্যুর প্রথম ঘটনা। দু’দিন আগেই, অগোরাতলি রেঞ্জে তিন চোরাশিকারিকে গ্রেফতার করে রাইফেল, সাইলেন্সার ও গুলি উদ্ধার করেছিল বনকর্মীরা। চলছিল তল্লাশি। কিন্তু অর্থের লোভে প্রাণভয় তুচ্ছ করে ফের কোহরায় হানা দিল শিকারিরা।
আজকের ঘটনার শুরু ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ। ডিএফও দিব্যধর গগৈ জানান: পুজোর আগে, নগদ অর্থ উপার্জনের জন্য শিকারের ঘটনা বাড়বে বলে আশঙ্কাই করা হচ্ছিল। আমাদের কাছে খবর আসে, ব্রহ্মপুত্র পার হয়ে শিকারির দল জঙ্গলে ঢুকতে পারে। সেই মতো বনকর্মীরা জঙ্গলের নানা অংশে আচমকা হানা দেওয়ার ছক কষে। আজ সকালে হালালপাত বন শিবিরের কাছে, নলতলি এলাকায়, এমনই এক শিকারির দল বনকর্মীদের মুখোমুখি পড়ে যায়। প্রায় আধঘণ্টা দুই তরফে গুলির লড়াই চলে। দুই শিকারি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তাদের কাছ থেকে খড়্গ কাটার কুড়ুল, শুকনো খাবার ও টর্চ মেলে। গগৈ বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে রক্তের ধারা জঙ্গলের ভিতরে চলে গিয়েছে দেখে আমরা বুঝতে পারি জখম কোনও শিকারি জঙ্গলে আত্মগোপন করে রয়েছে। হাতির পিঠে ও পায়ে হেঁটে শুরু হয় তল্লাশি। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ জখম অবস্থায় তৃতীয় শিকারির সন্ধান পাওয়া যয়। ওই অবস্থাতেও রাইফেল তুলে সে গুলি করার চেষ্টা করছিল। তবে বনরক্ষীরা তার আগেই তাকে গুলি করে। তার মৃত্যু হয়।” পলাতক অপর চোরাশিকারির সন্ধানে তল্লাশি চলছে। এই বছর এখন অবধি, কাজিরাঙায় এটিই চোরাশিকার নিধনের প্রথম ঘটনা। গত বছর মোট ১৪ জন চোরাশিকারিকে গ্রেফতার করা হয়। এই বছর গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে। |