নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
হুগলি ডিস্ট্রিক সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক সাধারণ সভার বৈধ্যতা নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। শুক্রবারের ওই বৈঠকে অনেক গ্রামীণ ঋণদান সমবায়কে ডাকা হয়নি অভিযোগ তুলে চুঁচুড়ায় বিক্ষোভ হয়। পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। শুধু ওই বৈঠকই নয়, বর্তমান পরিচালন সমিতির বৈধ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কিছু সমবায় কর্তার অভিযোগ, মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পরিচালন সমিতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে নিয়মরীতির তোয়াক্কা না করে। সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “পরিচালন সমিতির মেয়াদের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিষয়টি সরকারি স্তরে বিবেচনাধীন। তবে সাধারণ সভা নিয়ে অনিয়ম হয়নি।”
হুগলি ডিস্ট্রিক সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের অধীনে সারা জেলা জুড়ে অন্তত ৪৯০টি গ্রামীণ ঋণদান সমবায় সমিতি রয়েছে। ওই সমিতিগুলি সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের অধীনে। সমবায় সমিতিগুলি মারফত কৃষকেরা ঋণ-সহ নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ওই সব ছোট ছোট সমিতির মনোনীত কর্তারাই সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে নিজেদের সমবায়গুলির প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ সূত্রের খবর, চলতি বছরের জুন মাসের ১৪ তারিখে ব্যাঙ্কের বর্তমান পরিচালন সমিতির কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাঁরা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও তাঁদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিছু কিছু সমবায় সমিতির পক্ষে এই ঘটনারই তীব্র বিরোধিতা করে পরিচালন সমিতির বৈধ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই একটি আইন হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে পরিচালন সমিতির কার্যকাল পাঁচ বছর স্থায়ী হবে। এত দিন পরিচালন সমিতির মেয়াদ ছিল তিন বছর। ঋণদান সমিতিগুলির যুক্তি, নতুন নিয়ম হয়েছে চলতি বছরে। বর্তমান পরিচালন সমিতির কাজ করছে পুরোন নিয়মের ভিত্তিতে। তাই নতুন নিয়মের ফলে পূর্বে মনোনীত কোনও পরিচালন সমিতি তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না। শুধু কাজ করাই নয়, শুক্রবার পরিচালন সমিতি অতিরিক্ত সাধারণ সভা ডাকে। কিছু সমিতির অভিযোগ নিজেদের ‘পেটোয়া’ সমিতিগুলিকে ওই মিটিংয়ে ডাকা হয়েছে। ধনেখালির বেলমুড়ি ঋণদান সমিতির সম্পাদক গিরিধারী কর বলেন, “অন্তত দেড়শো সমিতিকে ডাকা হয়নি। পুলিশ দিয়ে সাধারণ সভা হয়ে গেল। আমরা রেজিস্ট্রার অব কো-অপারেটিভকে অভিযোগ জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের শুনানিতে ডাকা হয়েছে।”
সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভের এক কর্তা বলেন, “বর্তমান পরিচালন সমিতির কার্যকাল নিয়ে প্রশ্ন আছে। মুম্বাইয়ে এই একই প্রশ্নে বিষয়টি হাইকোট পর্যন্ত গড়ায়। সেখানে হাইকোট পরিষ্কার রায় দেন, পুরনো নিয়মে নির্বাচিত কোনও পরিচালন সমিতি তিন বছরের বেশি কাজ করতে পারবে না। ওই বিষয়টি আবার সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়। তাই পুরো বিষয়টিই এখন সরকারের বিবেচনাধীন। কিন্তু এই প্রশ্নে সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরেও প্রশ্ন রয়েছে।” ঋণদান সমবায় সমিতিগুলিকে এড়িয়ে সভা করার প্রশ্নে ওই আধিকারিক বলেন, “কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে মিটিংয়ের কথা জানানো হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু যে ক্ষেত্রে সভায় ঢোকার কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না, তাঁদের কেবল অনুমতি দেওয়া হয়নি।” |