নিজস্ব সংবাদদাতা • উলুবেড়িয়া |
বাবাকে খুন করার দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে এক যুবকের। এই কাজে তার সঙ্গী ছিল খুড়তুতো ভাই। একই সাজা হয়েছে তারও। শুক্রবার উলুবেড়িয়া ফাস্ট ট্র্যাক (১) আদালতের বিচারক অসীমকুমার দাস দু’জনের এই সাজা ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হল শেখ হুমায়ুন ইসলাম ও তার খুড়তুতো ভাই শেখ জাহাঙ্গির। দোষীদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে দেড় বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। এ ছাড়াও, প্রমাণ লোপের দায়ে বিচারক দু’জনের ৩ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত ছ’মাসে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ শুনিয়েছেন। এই মামলার সরকারি আইনজীবী অদৃতকুমার হাজরা বলেন, “দু’টি সাজা একই সঙ্গে চলবে।” |
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের ঘটনাটি ঘটে ২০০৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর। হাওড়ার শ্যামপুরের রাধাপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ মহম্মদ আলিকে সেই রাতে কুপিয়ে খুন করা হয়। শেখ মহম্মদ আলি (৫৫) ছিলেন পেশায় একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। রাধাপুরের পাশের গ্রাম হল কমলপুর। এখানেও একটি বাড়ি ছিল মহম্মদের। স্কুল থেকে তিনি প্রতিদিন প্রথমে আসতেন কমলপুরের বাড়িতে। সেখানে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে ফিরতেন রাধাপুরের বাড়িতে।
২ সেপ্টেম্বর রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত ১০টা নাগাদ তিনি কমলপুর থেকে রওনা দেন রাধাপুরের দিকে। সেখানে একটি বাঁশঝাড়ের আড়ালে হাতে তরোওয়াল নিয়ে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করছিল মহম্মদের ছেলে হুমায়ুন এবং জাহাঙ্গির। সাইকেল থামিয়ে মহম্মদকে দাঁড় করায় দু’জন। তাঁর উপরে তরোয়াল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শরীরের বিভিন্ন অংশে মোট ১৮টি আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মহম্মদের। এরপরে বস্তায় তাঁর দেহটি ভরে মহম্মদেরই সাইকেলে চাপিয়ে হুমায়ুন এবং জাহাঙ্গির সেটি ফেলে দেয় রূপনারায়ণ নদে। দু’দিন বাদে সকালে গাদিয়াড়ায় সরকারি ট্যুরিস্ট লজের কাছে নদীতে বস্তাটি ভাসতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে।
মহম্মদের আর এক ছেলে শেখ বাদশার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে হুমায়ুন পরে জাহাঙ্গিরকে গ্রেফতার করে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই দু’জন মহম্মদকে খুন করে। উদ্ধার হয় তরোয়ালটিও। |