সিউড়িতে অনশনে শ্রমিকেরা
পুজোর মুখে কারখানায় বন্ধের নোটিস
সিউড়ির একটি বেসরকারি রোলিং মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বোনাস নিয়ে কর্মীদের মনোমালিন্য চলছি গত কয়েক দিন ধরে। এরই মধ্যে সোমবার কর্তৃপক্ষ কারখানায় কাজ বন্ধের (সাসপেনশন অফ ওয়াকর‌্) নোটিস ঝুলিয়ে দেন। এ ভাবে আচমকা বন্ধের নোটিস পড়ে যাওয়ায় পুজোর মুখে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন কর্মী-শ্রমিকেরা।
এর প্রতিবাদে ও কাজ হারানোর আশঙ্কায় তাঁরা শুক্রবার থেকে কারখানার গেটে রিলে অনশন শুরু করেছেন। চলছে বিক্ষোভও। কর্মীদের অবশ্য দাবি, বোনাসের দাবিতে নয়, তাঁদের অনশন কারখানায় ফের উৎপাদন চালুর দাবিতে। একই কথা জানিয়েছেন আইএনটিউসি এবং আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব। মালিকপক্ষের দাবি, কাঁচামালের অভাবেই তাঁরা উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তা ছাড়া, উৎপাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে প্রথমে একদিন ও পরে টাকার জোগান না হওয়া পর্যন্ত বন্ধের নোটিস ঝোলানো হয়েছে।
ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সিউড়ির ‘মিনি স্টিল প্ল্যান্ট’ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে বছর দশেক আগে এক শিল্পোদ্যোগী কারখানাটি কিনে নেন। তার পর থেকে কারখানা এক রকম ঠিকঠাকই চলছিল। যদিও ফি বছরই পুজোর আগে বোনাস নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকপক্ষের কিছুটা মনোমালিন্য চলেছে। আইএনটিউসির বীরভূম জেলা নেতা মৃণাল বসু এবং আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর দাবি, ওই কারখানায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কর্মী-শ্রমিক কাজ করেন। এঁদের অধিকাংশই এই দুই শ্রমিক সংগঠনের সদস্য। ওই দুই শ্রমিক নেতা বলেন, “প্রতি বছরের মতো এ বারেও বোনাস নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক-কর্মীদের কিছুটা মনোমালিন্য দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ ১২ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। আমরা ১৮ শতাংশ দেওয়ার দাবি করি। এই নিয়ে কর্মীরা অল্প আন্দোলনও করেন। গোটা বিষয়টি জেলার সহকারী শ্রম কমিশনারকে জানানো হয়।”
বিকাশবাবু, মৃণালবাবুদের অভিযোগ, “এ সবের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ প্রথমে এক দিনের জন্য ও পরে সোমবার বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেন কারখানার গেটে। কাঁচামালের অভাব বা টাকার জোগান না থাকার মতো যে যে কারণ দেখিয়েছেন কর্তৃপক্ষ, তা আমরা মানতে নারাজ। এ ভাবে পুজোর আগে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া শ্রমিকেরা মেনে নেবেন না। অবিলম্বে কারখানা খোলার দাবিতে এ দিন থেকে তাঁরা রিলে অনশনে বসেছেন।”
কারখানাটির মালিক নিখিল অগ্রবালের যুক্তি, “কারখানা বন্ধ করা হয়েছে মূলত কাঁচামালের জোগান না থাকায়। তা ছাড়া মন্দার বাজারে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ায় আর্থিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। টাকার সংস্থান হয়ে গেলেই কারখানা খোলা হবে।” কারখানা বন্ধের সঙ্গে বোনাস-সমস্যার কোনও যোগ নেই জানিয়ে তাঁর আশ্বাস, আলোচনা সাপেক্ষে সব কর্মী-শ্রমিককেই বোনাস দেওয়া হবে। শীঘ্রই কারখানাও খুলবে এবং কাউকে কাজ হারাতে হবে না। জেলা সহকারী শ্রম কমিশনার সৌম্যনীল সরকার বলেন, “বোনাস নিয়ে সমস্যার খবর পেয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর কারখানায় গিয়েছিলাম। ১৯ তারিখ আমার কার্যালয়ে বৈঠক ডাকি। সেখানে শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতৃত্ব বা প্রতিনিধিরা এলেও সেই অর্থে মালিকপক্ষের তরফে কেউ ছিলেন না। এক জন প্রতিনিধি এলেও তিনি বিশেষ কিছুই বলেননি। সমস্যা যাতে মিটে যায়, তার চেষ্টা করছি।” নিখিলবাবুর দাবি, ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা থেকে পরদিন দুপুর ১টা পর্যন্ত তাঁকে কারখানার মধ্যেই ঘেরাও করে রেখেছিলেন শ্রমিকেরা। তাই ফের ঘেরাও হওয়ার আশঙ্কায় তিনি ওই বৈঠকে যাননি। ঘেরাও হয়ে থাকার কথা অবশ্য তিনি লিখিত ভাবে পুলিশ-প্রশাসনকে জানাননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.