সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে ফের বাগ্যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল আমেরিকা-পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ বন্ধ না হলে আমেরিকা ‘বন্ধু’ হারাবে, বলেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার।
বৃহস্পতিবার পাক সেনাবাহিনী ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে হক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগ আছে বলে সরাসরি দাবি করেন মার্কিন সামরিক কর্তা অ্যাডমিরাল মাইক মুলেন। হক্কানি
গোষ্ঠী তালিবান জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির অন্যতম। ১৩ সেপ্টেম্বর কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের উপরে হামলা সহ বেশ কয়েকটি জঙ্গি হানার পিছনেও পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
আজ এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে পাকিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে গিয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগ বন্ধ না হলে দু’দেশের মৈত্রী রক্ষা সম্ভব হবে না। দু’দেশেরই পরস্পরকে প্রয়োজন। আমেরিকা মহাশক্তি। পাকিস্তান তার সমকক্ষ নয়। কিন্তু, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকেও সম্মান করা উচিত।” এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চৌধুরি আহমেদ মুখতারও। গিলানি বলেন, “মনে হচ্ছে আমেরিকা আমাদের ছাড়া এগোতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে আমেরিকার উচিত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে ভুল বোঝাবুঝি দূর করা। এই ধরনের ভুল বক্তব্যের পরে পাকিস্তানের মানুষকে আমেরিকার গুরুত্ব বোঝানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।” সম্প্রতি উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে জঙ্গিদের গুলিতে আহত হন মেজর জেনারেল স্তরের এক অফিসার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মুখতারের দাবি, পাক সেনার সঙ্গে হক্কানি গোষ্ঠীর যোগ থাকলে এই ঘটনা ঘটত না। রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি মুলেনের মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছেন পাক সেনাপ্রধান পারভেজ আশফাক কিয়ানি। তিনি বলেছেন, “সম্প্রতি স্পেনে অ্যাডমিরাল মুলেনের সঙ্গে একটি বৈঠকে সদর্থক আলোচনা হয়েছিল। তারপরে এই মন্তব্য আমরা বিচলিত।”
পাকিস্তানের এই প্রতিক্রিয়ার পরেও অবশ্য চাপ কমায়নি আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নি বলেছেন,“পাকিস্তানের উচিত হক্কানি গোষ্ঠীর সঙ্গে এখনই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা।” এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। চিনের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস-বিরোধী লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে পাকিস্তান। সংশ্লিষ্ট যে কোনও দেশের উচিত পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করা। |