চিত্তরঞ্জনের মণ্ডপ সাজছে
ছৌ-গ্রাম চড়িদার আদলেই

পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি থেকে চিত্তরঞ্জনের দূরত্ব শ’খানেক কিলোমিটারও হবে না। কিন্তু দুই প্রান্ত যেন দুই মেরু।
পুরুলিয়ার ছৌ গ্রাম অজানা চিত্তরঞ্জনের বহু মানুষের কাছেই। এ বার তাই আস্ত গ্রামটাকেই রেলশহরে তুলে আনছে ঝিলপাহাড়ি পুজো কমিটি। এ সব নিয়ে গোটা অঞ্চলে এখন সাজসাজ রব।
অযোধ্যা পাহাড়ের গা ঘেঁষে ছোট্ট গ্রাম চড়িদা। ছৌ শিল্পী গম্ভীর সিং মুড়ার সৌজন্যে আন্তর্জাতিক পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসা এই গ্রামে তৈরি হয় ছৌ-এর মুখোশ। গ্রামের প্রায় সকলেই কোনও না কোনও ভাবে এই লোকশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। বৈদ্যুতিক বিনোদনের ঢক্কানিনাদেও ছৌ-এর আবেদন আজও অম্লান। কিন্তু কেমন আছেন ছৌ-শিল্পীরা? নাগরিকদের তা জানাতেই তাঁদের এ বারের থিম এমনটাই দাবি পুজো কমিটির সম্পাদক নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, আট থেকে আশি প্রায় সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মণ্ডপকে প্রাণবন্ত করার জন্য। থিমের পরিকল্পনা এলাকারই শিল্পী দেবজিৎ ভট্টাচার্যের। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করাচ্ছেন। ঝিল পাহাড়ির যেখানে এই মণ্ডপটি হচ্ছে, প্রচুর বড় গাছের জঙ্গল সেখানে। ফলে ছৌ গ্রাম বানানোর কাজ এমনিতেই এগিয়ে রয়েছে অনেকটা। শিল্পী জানালেন, মূল পুজো মণ্ডপটিকে একটি কুঁড়ে ঘরের আদলে বানানো হচ্ছে। মণ্ডপের আশপাশে থাকছে আরও চারটি কুঁড়ে ঘর। মাঠের মাঝখানে একটি আটচালার মন্দির। সব মিলিয়ে ছৌ গ্রামের হুবহু নকল তুলে আনা হবে।
এসেছে এমনই সব মুখোশ। ছবিটি তুলেছেন শৈলেন সরকার।
ব্যবহার করা হবে প্রচুর মুখোশ। পুজোর জন্য চড়িদার শিল্পীরাই সে সব মুখোশ বানিয়ে দিচ্ছেন। সপরিবারে দুর্গা প্রতিমা বানানো হচ্ছে ছৌ নাচের মুখোশ দিয়েই। উদ্যোক্তারা জানালেন, এই পুজো মণ্ডপে হাজির থাকবেন ছৌ শিল্পীরা। প্রতি দিনই মণ্ডপে নাচের অনুষ্ঠান দেখাবেন তাঁরা। উদ্যোক্তারা চাইছেন, মণ্ডপে এসে দর্শনার্থীরা যেন পুরোপুরি ছৌ গ্রামের স্বাদ পান। রাতেও ঠিক দিনের আলোর মতোই গ্রামটিকে তুলে ধরতে প্রচুর জোরালো আলোর ব্যবস্থা থাকছে।
দেবজিৎবাবু জানালেন, নিছকই কল্পনা থেকে নয়। গ্রাম তৈরির কাজে নামার আগে তিনি এবং পুজোর উদ্যোক্তারা বেশ কয়েক বার ওই গ্রামে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। কুঁড়ে ঘরে মাটির দাওয়ায় বসে তাঁদের সঙ্গে মোটা চালের ভাত আর পোড়া লঙ্কা দিয়ে মাখা আলু সেদ্ধ খেয়েছেন। শুনেছেন তাঁদের জীবন ও জীবিকার কথা। এর পরেই তারা কাজে নেমেছেন। মণ্ডপ সজ্জার কাজে হাত দিয়েছেন জুলাই মাস থেকে। মাটি আর কাপড় দিয়ে বানানো হচ্ছে মণ্ডপ। দুমকা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার মাটির খোলা আনা হয়েছে কুঁড়ে ঘরের ছাউনি বানানোর জন্য। মণ্ডপ সাজাতে প্রায় সাতশো মুখোশ আনানো হয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, এ বার তাঁদের মণ্ডপ শিল্পাঞ্চলের দর্শনার্থীদের তাক লাগিয়ে দেবে।
ভয় কেবল বৃষ্টিকে। প্রকৃতিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়েই ‘ছৌ গ্রামে’র থিম নিয়ে হাজির তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.