জেলা সদর হাসপাতাল
অনলাইনে চটজলদি ওষুধ পাচ্ছে বীরভূম
নির্দেশ জারি হলেও কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে এখনও পর্যন্ত অনলাইনে ওষুধ কেনার প্রক্রিয়া চালু হয়নি। কিন্তু বীরভূমের সিউড়ি সদর হাসপাতাল তা করে দেখিয়ে দিয়েছে। তাও নির্দেশ জারি হওয়ার দু’মাসের মধ্যে।
কী করে সম্ভব হল? আগে প্রয়োজনীয় ওষুধগুলি বীরভূমের ‘রিজার্ভ স্টোর’ থেকে সরবরাহ করা হত। কিন্তু অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ায় এখন ওই স্টোরের পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত কয়েকটি সংস্থার কাছ থেকে ওষুধ মিলছে। কম ওষুধ থাকলে ক্যুরিয়ারে, বেশি থাকলে গাড়িতে করে পাঠানো হয়। ওই সব সংস্থার কাছ থেকে ওষুধ কেনার জন্য তিন মাস অন্তর সরকার থেকে ৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। ফলে টাকা পেতেও সমস্যা হয় না। এর পাশাপাশি আরও কিছু সুবিধার জন্য সিউড়ি হাসপাতালে অনলাইন পরিষেবা চালু করা গিয়েছে।
হাসপাতালর সুপার মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “আগের রাজ্য সরকার নির্দেশ জারি করেছিল, ওষুধে অনভিজ্ঞ কোনও কর্মীকে স্টোরের দায়িত্বে রাখা যাবে না। এই হাসপাতালের স্টোরকিপার অবসর নেওয়ার পরে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে স্টোরের দায়িত্ব পান ফার্মাসিস্ট অমিতাভ দাস। তাঁকে সাহায্য করার জন্য অমলকুমার ভৌমিক নামে আর এক ফার্মাসিস্টকে নিয়োগ করা হয়। দু’জনেই কম্পিউটারে দক্ষ। তাই অনলাইনে ওষুধ কেনার নির্দেশ পেয়ে আমরা সেই প্রক্রিয়া দ্রুত চালু করতে পেরেছি। এর ফলে আর কোনও রোগীকে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে না। সব ধরনের ওষুধই হাসপাতাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্ট মাসে টিটেনাস আক্রান্ত দু’জন কিশোর ভর্তি হয়েছিল। তাদের জন্য দামি ইঞ্জেকশন এক দিনের ব্যবধানে কলকাতা থেকে আনানো হয়েছে। ফার্মাসিস্ট অমিতাভ দাস বলেন, “অনলাইনে ওষুধ কেনার সুবিধার জন্য ওই জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন পাওয়া গিয়েছে।” তিনি জানান, জুন মাসের শেষ সপ্তাহে স্বাস্থ্য ভবন থেকে নির্দেশ জারি হয়, সরকারি নির্বাচিত ওষুধ সরবরাহ সংস্থা থেকে অনলাইনের মধ্যমে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসার সরঞ্জাম কিনতে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই বিএসএনএলের ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিয়ে ২৯ জুন থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু করা হয়। তিনি বলেন, “প্রথম ধাপে স্বাস্থ্য ভবন থেকে ৮ লক্ষ টাকা মিলেছে। তার মধ্যে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে অনলাইনে।”
হাসপাতালের চিকিৎসক রামরঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় ও শিশু বিশেষজ্ঞ হেরেসতুল্লা জানান, তাঁদের অধীনে দু’জন কিশোর টিটেনাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তাদের জন্য ১৪৬০ টাকা করে ৮টি ইঞ্জেকশন কলকাতা থেকে আনানো হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে।
হাসপাতাল সুপার মানবেন্দ্রবাবু বলেন, “অনলাইনে ওষুধ কেনার সুবিধা চালু হওয়ায় আমরা সব ধরনের ওষুধ বেশি পরিমাণে রাখতে পারছি। কিন্তু এর আগে বেশি পরিমাণে রাখা সম্ভব হত না। যেমন কুকুর কামড়ানো বা সাপে কাটা রোগীর জন্য ইঞ্জেকশন পেতে হয়রান হতে হত। এখন আমাদের কাছে সেগুলিও মজুত হয়েছে। এর পরেও যদি কোনও ওষুধ মজুত না থাকে তা হলে বাইরে থেকে আনার জন্য এক দিন সময় দিতে হবে। কিন্তু অনলাইন পরিষেবা চালু হওয়ার আগে ওই ওষুধ আনতে ১০-১২ দিন সময় লেগে যেত। অথবা রোগীকে পয়সা দিয়ে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হত। অনেক সময় গরিব মানুষের ক্ষেত্রে তা কেনা সম্ভব হত না।”
রাজনগর থানার মুক্তিপুর গ্রামের হেমটন টুডুর বাবা রসিক টুডু বলেন, “দিনমজুরি করে আমাদের সংসার চলে। ছেলের কী রোগ হয়েছিল জানি না। ১১ অগস্ট ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। আমাদের ওষুধ কেনারও সামার্থ ছিল না। হাসপাতাল থেকে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। চার দিন পরে ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি নিয়ে গিয়েছি।” একই বক্তব্য দুবরাজপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীরাম বাগদির বাবা মাঝি বাগদিরও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.