‘শহিদ স্মরণ’ তৃণমূলের
লক্ষ্মণ এবং দীপকেরও সাজা হবে, হুমকি দিলেন শুভেন্দু
শাসকদল প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বলে সিপিএম নেতাদের অভিযোগের জবাব দিলেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। সুশান্ত ঘোষ যে ‘হত্যা’ ও ‘লাশ লোপাটে’র মামলায় জড়িয়ে জেলবন্দি, কেশপুরের পিয়াশালায় সেই ‘হত্যা’স্থলে দাঁড়িয়েই বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর দাবি, “রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলেই সুশান্ত ঘোষ জেলে রয়েছেন।” ‘যাঁরা অপরাধ করেও এত দিন পার পেয়েছেন’, ‘এখনও লুকিয়ে রয়েছেন’, তাঁদেরও টেনে আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু। হুমকির সুরেই তাঁর মন্তব্য, “সুশান্ত ঘোষ গ্রেফতার হলেও দীপক সরকার, অনিল বসু, লক্ষ্মণ শেঠরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের মদতেই দীর্ঘ সন্ত্রাস হয়েছে। তাই তাঁদেরও সাজার ব্যবস্থা হবে।” তৃণমূল যুবনেতার এই মন্তব্যকে ‘প্রতিহিংসার আস্ফালন’ বলেই ফের কটাক্ষ করেছে সিপিএম।
ন’বছর আগে ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর এই পিয়াশালায় সিপিএমের সশস্ত্র লোকজনের হামলায় তাদের সাত কর্মী নিহত হন বলে দাবি তৃণমূলের। দু’জনের দেহ উদ্ধার হলেও ৫ জন ‘নিখোঁজ’ই থেকে গিয়েছিলেন এত দিন। রাজ্যে পালাবদলের পরে জুনের গোড়ায় পিয়াশালার কাছে দাসেরবাঁধে মাটি খুঁড়ে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়। সেই হাড়গোড় পিয়াশালা থেকে নিখোঁজদেরই বলে দাবি ওঠে। নতুন করে মামলা দায়ের হয়।
পিয়াশালায় শুভেন্দুর ‘শহিদ স্মরণ’। সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।
সেই মামলার সূত্রেই সুশান্তবাবু-সহ ১৬ জন সিপিএম নেতা-কর্মী জেলবন্দি। এত বছর ‘বিরোধী’ তৃণমূলের কাছে ‘অবরুদ্ধ’ ছিল কেশপুর। শাসক হয়ে সেই কেশপুরে এখন তৃণমূলেরই আধিপত্য। ‘পিয়াশালা-গণহত্যা’য় ‘শহিদ’দের বৃহস্পতিবারই প্রথম স্থানীয় ভাবে স্মরণের সুযোগ পেল তারা।
খুনের পর যে মাঠে দেহগুলি রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ, সেখানেই তৈরি হয়েছিল শহিদ বেদি। ছিল রক্তদান শিবির ও জনসভার আয়োজন। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সভাস্থলে হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। শহিদ পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন। শুভেন্দু বলেন, “দলনেত্রী বলেন, ক্ষমতায় এলে কেশপুর-সহ সন্ত্রাস কবলিত সর্বত্রই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে। অত্যাচারীরা কেউ ছাড় পাবেন না।” পাশপাশি নিজের দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে ইদানীং যে সব ‘বাড়াবাড়ি’র অভিযোগ উঠছে, সে নিয়েও এই যুবনেতা সতর্ক করেছেন কর্মীদের।
এ দিনই আবার এই মামলায় জেলবন্দি গণেশ ঢেঁকি, শ্যামল টাঙি, মুরারি পাত্রকে হাজির করা হয় মেদিনীপুর আদালতে। এর আগের দফায় সুশান্তবাবু-সহ ৯ বন্দির ক্ষেত্রে জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়ে যেমন ৩১ অক্টোবর পরবর্তী হাজিরার দিন ধার্য হয়েছে, গণেশবাবুদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ হয়। এই মামলায় মদন সাঁতরা, বৈদ্যনাথ সাঁতরা-সহ অন্য ৪ বন্দির আদালতে হাজিরার দিন আগামী সোমবার। মদন-বৈদ্যনাথকে ‘রাজসাক্ষী’ করতে চেয়ে আগেই মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে আবেদন করেছিল সিআইডি। সেই আবেদনের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবারই আর্জি জানায় সিআইডি। কিন্তু কয়েক জন অভিযুক্তের আইনজীবী বিশ্বনাথ ঘোষ আপত্তি জানিয়ে বলেন, “আমারও কিছু বলার আছে। আগে কিছু জানানো হয়নি। সময় দেওয়া হোক।” বিচারক মনোজ রাই সরকারপক্ষের আইনজীবীকে ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাড়াহুড়ো’ না-করার কথাই বলেন। আগামী সোমবার শুনানির দিন ধার্য হয়। শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় এর মধ্যেই চার্জশিট দিতে হলে মদন-বৈদ্যনাথকে ‘অভিযুক্ত’ তালিকাতেই রাখতে হবে সিআইডিকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.