সন্ধ্যায় হঠাৎ কেঁপে উঠল রাজ্য, আতঙ্কে বাসিন্দারা
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল গোটা রাজ্য। উত্তরবঙ্গ-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় কম্পনে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছেন বাসিন্দারা। দিনভর টানা বৃষ্টির পরে সন্ধ্যায় ভূমিকম্পে হওয়ায় বিপর্যস্ত হয় উত্তরবঙ্গ ও লাগোয়া সিকিমের জনজীবন। সন্ধ্যা ৬ টা ১০ থেকে প্রায় ৩০ সেকেণ্ডের প্রবল কম্পনের জেরে পাহাড়-সমতলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাড়িতে ফাটল ধরেছে। উত্তরবঙ্গের সমতল এলাকাতেই পাঁচিল ধসে, বাড়ি থেকে বার হওয়ার সময়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে, রাস্তায় ছুটতে গিয়ে অন্তত ৩০০ জন জখম হয়েছেন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রাত ৮টা পর্যন্ত ২০০ জন জখম এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। শিলিগুড়ির বিভিন্ন নার্সিংহোমে আরও অন্তত ৫০ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “পুলিশ-পুরসভা-প্রশাসনকে সম্মিলিত ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারও চিকিৎসায় যাতে কোনও সমস্যায় না-হয়, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।” রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গে ভূমিকম্পের সময়ে পাঁচিল ধসে ও ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে পড়ে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। তবে মৃত্যুর কোনও খবর রাত পর্যন্ত মেলেনি। ডিজি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতায় তো বটেই, প্রতিটি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ভূমিকম্প কবলিত প্রতিটি থানার ওসি, আইসিদের রাতভর রাস্তায় থেকে পরিস্থিতি তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসায় যাতে কোনও ত্রুটি না-হয়, সে জন্যও পুলিশের তরফে সবরকম সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে নদিয়া-মুর্শিদাবাদ দুই জেলায়। রবিবার ৬টা ২০ মিনিট নাগাদ ওই কম্পন টের পান দুই জেলার মানুষ। মুর্শিদাবাদের সিনিয়র মেটরোলজিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রবীন বিশ্বাস বলেন, “৩০ সেকেন্ড মত ভূমিকম্পন অনুভূত হয়েছে।” এ দিনের ভূমিকম্পে জঙ্গিপুর মহকুমার সাগরদিঘি ব্লকের বালিয়া গ্রামে বেশ কয়েকটি পাকা বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাস্টারদা সূর্য সেনের স্মৃতি বিজড়িত বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্রাবাস প্রাচীন ও ভগ্নপ্রায় ‘কুমার হোস্টেল’-এর এক দিকের অংশ ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাইনি।” অন্য দিকে, নদিয়ায় ৬টা ১২মিনিটে কম্পন অনুভূত হয় বলে নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় জানান। তিনি বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর আসেনি।” ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দুর্গাপুর ও আসানসোল শিল্পাঞ্চলও। বহুতল ও শপিং মলগুলি থেকে মানুষজন আতঙ্কে নেমে আসেন রাস্তায়। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আতঙ্কে শিশুদের কাঁদতে দেখা যায়। বীরভূম জেলায় দু’বার ভূ-কম্প অনুভূত হয়েছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। জেলাশাসক জগদীশ মিনা, বাঁকুড়ার জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি ও পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক ঋষিকেশ মুদি বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।” দক্ষিণবঙ্গের হাওড়ায় বহু মানুষ আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসেন। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সর্বত্রই ভূকম্পন অনুভূত হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং-সহ বিভিন্ন এলাকায় কম্পন টের পান বাসিন্দারা। হুগলির চুঁচুড়ার-সব সর্বত্রই বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাট, তমলুক, কাঁথি-র বিভিন্ন এলাকায় মানুষ কম্পন অনুভব করেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রাম ছাড়া কোথাও কম্পন অনুভূত হয়নি। কোথাও কোনও হতাহতের খবর নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.