মন মতো বয়ে যাক, রয়ে যাক |
পুজোয় শাড়ি না হল, তো কী হল! কিন্তু আবার সেই এক শাড়ি? উঁহু।
একই আঁচলে অন্য টিউন বাজছে, শুনুন। পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায় |
সারা বছরের ব্যস্ত সময় কাটে ওয়েস্টার্ন, কিংবা টুক করে গলিয়ে নেওয়া কুর্তির মতো কেজো পোশাককে সঙ্গী করেই। কিন্তু হাজার হোক, সময়টা পুজো। অন্তত শ’খানেক শাড়ির মধ্যে থেকে দু’টো মাত্র শাড়ি বেছেও খুঁতখুঁত না করলে পুজো পুজো ভাবটা যেন ঠিক ধরা দেয় না। |
কুঁচির অংশটা না ঘুরিয়ে, প্লিট করে উপরে তুলে নিন। বাকি আঁচল
অংশটি পিছন থেকে তেরছা করে তুলে, কাঁধের কাছে এমন ভাবে পিন
করুন, যাতে মনে হয় ওখানে একটি গিঁট মারা হয়েছে। কোমরের
ওপর ভাগে জরির একটি বাস্ট বেল্ট বেঁধে নিন। |
করসেটের সঙ্গে শাড়ি পরলে সাধারণ শাড়ির মতো প্রথমে
কুঁচি করুন। আঁচল অংশ কাঁধের ওপর তুলে কুঁচির অংশ
এক সঙ্গে জড়ো করে পিন করে রাখুন। করসেটের
বদলে চোলিও ব্যবহার করা যায়। |
|
মডেল: পার্নো মিত্র |
পুজোর সকালের জন্য বেছে নিন মিনে করা তাঁত। খোলের ওপর অনেকটা মণিপুরী ঢঙে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নকশা। তাঁতের ওপর করা হচ্ছে অ্যাপ্লিক বা ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে ছোট ছোট জ্যামিতিক প্যাটার্ন। কটন কাঞ্জিভরম বা কটন চান্দেরিও পরা যায়। বেশ হাল্কা, অথচ দূর থেকে দেখলে সিল্কের সঙ্গে তফাতটা চোখেই পড়বে না। আসলে দক্ষিণী সিল্কের চেয়েও দক্ষিণী সুতি শাড়ির চাহিদা এখন অনেক বেশি। কর্ণাটকের তেলিয়া বা নারায়ণপেট, মঙ্গলগিরি, ভেঙ্কটগিরির মতো শাড়িগুলো দেখতে বেশ জমকালো। হাল্কা শাড়ি হিসেবে শিফন বরাবরই জনপ্রিয়, বিশষ করে পাড়টা যদি হয় সরু একঢালা, পার্শি কাজ করা। অল্প জরির কাজ করা পাড়ের মাঝেমাঝে একটা-দুটো করে মোতি বা একটু বড় পুঁতির কাজও বেশ সুন্দর লাগে। হস্তশিল্পের বেস হিসেবে ডিজাইনাররা এখন অনেকেই বেছে নিচ্ছেন ভাগলপুরী তসরকে। একটু চাপা রঙের বেস-এর তসরের ওপর জুটের কাজ অল্পবয়সীদের জন্য আদর্শ। তসরের ওপর অনেক সময় এঁকে ফেলা হচ্ছে কোনও পৌরাণিক কাহিনি। এ বার কাঁথাকাজ করে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এই কাহিনিকে। ছোট ছোট ফ্লোরাল মোটিফ দেওয়া প্রিন্টেড তসরও ভারী ছিমছাম দেখতে লাগে। তসরেরই রকমভেদ ঘিচা তসর। এর ওপর ছোট ছোট ব্লক প্রিন্ট ভীষণ এলিগ্যান্ট দেখতে লাগে।
প্রাদেশিক সিল্কে এখন জুটের কাজের চাহিদা বেড়েছে। জরির সঙ্গে জুটের তফাত সহজে বোঝা যায় না। তবে নরম সিল্কের ওপর ঘন কাজ ধরে না। তাই জরিই হোক, বা জুট কাজ করা সিল্ক কিনতে চাইলে কিছুটা মিশেল পড়বেই। তবে, আর্টিফিশিয়াল কোষার ওপর জুটের বুনুনি, বা আর্টিফিশিয়াল সিল্কে নিমজোরি ডিজাইনের আভিজাত্যে কোনও খামতি নেই। |
বড় পেট ঢাকা ব্লাউজ (কটি ব্লাউজ)-এর সঙ্গে সামনে আঁচল দিয়ে শাড়ি পরতে পারেন। আঁচল একটু লম্বা হবে।
প্লিট করা আঁচল অংশ পিছন থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে কাঁধের ওপর ওড়নার মতো ফেলে রাখবেন। |
মডেল: সুদর্শনা সেনগুপ্ত |
আনকোরা শাড়ি-সম্ভারে হাতের কাজ করা বা বেনারসি বুটি দেওয়া উপাড়া সিল্ক বেশ নজর কেড়েছে ক্রেতাদের। আগে দক্ষিণ ভারতীয় চেট্টিনাড় শাড়ি বলতে সুতির শাড়িই বোঝানো হত। এখন চেট্টিনাড় সিল্কও ঢুকেছে নতুনের তালিকায়। শাড়িতে ফিউশন চাইলে রয়েছে হাফ অ্যান্ড হাফ শাড়ি। তলায় সিল্ক বা তসর, ওপরে হাল্কা সিকুইনের কাজ করা নেট। ঠাসা জরির কাজ করা ব্লাউজের ওপর শাড়ির আঁচল থাকবে এক স্বচ্ছ আবরণের মতো। বাঙালির পুজো-সাজে অবাঙালি ছোঁয়া আনার জন্য রয়েছে লহেঙ্গা শাড়ি। দশ হাত জমির এই শাড়ির কুঁচি লহেঙ্গার মতো, ছড়ানো আর ঠাসা জরির কাজ করা। হাল্কা, আর অল্প কাজের আঁচল হবে ওড়নার বদলি। |
মেক-আপ: অনিরুদ্ধ চাকলাদার
ছবি: আশিস সাহা
কেশ বিন্যাস: নূর আলম (৯৮৩০৮৭৩১৬৩)
স্টাইলিং: সন্দীপ ঘোষাল (স্যান্ডি) (৯৮৭৪৪৫৯৯৮৫) |
|