খুদে তারাদের টুইঙ্কল
গোটা ক্লাস ফাইভ কান ধরে দাঁড়িয়ে। প্রবল চিৎকার করছিল এবং বিষয়টি অকল্পনীয়। ফ্যাশন-স্টাইল ইত্যাদি পাকা পাকা কথা। আরে, পাকা কাকে বলছেন? ওরা তো তাও দশের গণ্ডি পেরিয়েছে। দু ফুটিয়াগুলোও আসতে যেতে আয়না দেখে, চুলে আঙুল চালিয়ে স্পাইক তোলে। নিজের খুশি মতো খোকা-খুকুকে সাজানোই এখন ঘোর বিপজ্জনক। হতেই পারে প্যান্ডেলে কিট্টুর সঙ্গে সহপাঠী গাবলুর দেখা হয়ে গেল। আর তার রোবট জামাটি দেখে কিট্টু বাবু ধুলোয় গড়াগড়ি গেলেন। আপনার অষ্টমীর সন্ধেটির ওখানেই ইতি। দিন-কালকে দোষ না দিয়ে খুদেদের ফ্যাশন সম্বন্ধেও একটু জ্ঞান আহরণ করে নিন।
আলমারির পাল্লাটা খুললে
‘চিল্লর পার্টি’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য
ছোটদের সাজানোর সব থেকে বড় মজা হল, যে সব স্টাইলিশ পোশাক পরতে বড়রা একটু কিন্তু কিন্তু করেন, তাতেই ওদের ললিপপের মতো মিষ্টি দেখায়। সব সাইজের খুকিদের জন্য রয়েছে পিঠ খোলা হল্টার নেক বা কাঁধ খোলা অফ শোল্ডার গাউন, হট প্যান্টস।
ছোট্ট রাজকন্যার জন্য প্রচুর পাবেন ডবি ভিক্টোরিয়ান ড্রেস। নেটের ফুলহাতা, ফেয়ারি ড্রেসগুলোর কাটে প্রচুর লেয়ারিং রয়েছে, থাকে থাকে নেমে এসেছে প্রায় গোড়ালি পর্যন্ত। আর নীচের অংশটা রূপকথার রানিদের আদলে একটু লোটানো।
খোকা-খুকু উভয়ের জন্য নতুন ডেনিমের হারেম প্যান্টস। ফেড হওয়া একটু কোঁকড়ানো ডেনিম, হাঁটু ছুঁয়েই শেষ। সেলর প্যান্টসও বলা যেতে পারে। ও, ওই ফাইভ-সিক্সের সদ্য সাজুন্তিদের একটা লিপস্টিক রঙের কর্ডরয় ট্রাউজার্স কিনে দেবেন। নইলে স্কুল থেকে কাঁদতে কাঁদতে ফিরবে। আর বয়স যা-ই হোক, টপ, স্কার্ট, ডেনিম, ডাঙ্গারিজ, প্যাডল পুশার (কেপরির একটি প্রকার), যা-ই পরান হালকা রং কখখনও পরাবেন না। জামায় কাদা আর কালি লাগায় না, খাবার ফেলে না, এমন শিশু গোটা দুনিয়ায় বিরল।
এই দুশ্চিন্তা থেকেই বাজারে এসেছে মাল্টি-পার্পাস জামা। একই পোশাকে অনেকগুলো লুক পাওয়া যাবে। এ সব জামায় সোজা-উলটো বলে কিছু নেই। হাতার বিভিন্ন অংশও দরকারমতো খোলা-পরা করা যেতে পারে। মাঝরাস্তায় খোকাবাবু স্কটিশ চেকটায় আইসক্রিম মাখলেই উলটো করে পরিয়ে দিন, দিব্যি সবুজ রঙের নতুন জামা। হাতায় চিকেনের ঝোল লাগালে চেন টেনে হাতাটাই খুলে দিন। আপনার শান্তি, ও দিকে মিনিটে মিনিটে জামা বদলাতে পেরে সে ফোকলা মুখে খিলখিলখিল।
এক্কেবারে ভুতুবাবুদের কয়েকটা অ্যানিম্যাল হুডস কিনে দিতে পারেন। এই সব কটা হুডই ইচ্ছে হলে খুলেও রাখা যায়। অন্য জামার সঙ্গেও হ্যাট হিসাবে ব্যবহার করা যায়। জামার পিছনে ঝুলতে থাকা হুডটা মাথায় পরিয়ে দিলেই ছোট্ট সোনা নিমেষে ডালমেশিয়ান কুকুর লিলির মত কানঝোলা আহ্লাদি। খাড়া কান বেনি বানি খরগোশ, বা ফুটফুটে কোনও পোকেমন।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল কার্টুন আঁকা টি শার্ট। দস্যি দল এখন ছোটা ভীম আর কৃষ্ণার অন্ধ ভক্ত। তাদের ছবি আঁকা পোশাকই পরিয়ে দিলে বন্ধু-সমাজে ওরা খুব হাততালি কুড়োবে। একটু বড় মেয়েরা পরবে পপস্টার টি। হানা মন্তানা আঁকা।

ছোট্ট ছোট্ট টিপস
বাজারে পাবেন বেন-টেন-এর অমনিট্রিক্স-এর আদলে তৈরি ঘড়ি। না পেলে দক্ষযজ্ঞটি বাঁধা। মেয়েদের জুতোয় আছে বেল্ট বাঁধা অ্যালিস ব্যালেরিনা, আর খোকাবাবুদের জন্য চলতে ফিরতে আলো জ্বলা স্পোর্টস শু।
কিনে দিন ‘টোয়েলরি’। টোয়াইলাইট সিরিজ অনুপ্রাণিত জুয়েলারি। আছে ইসাবেলা-র মুনস্টোন রিং, কি চেন, রিস্টলেট বা নেক পিস, বেল্ট। টাই বা লকেটে থাকে এডওয়ার্ড বা বেলার ছবি। আপনার কাছে এ সব হিব্রু ঠেকলে ক্লাস সিক্সটিকে জিজ্ঞেস করুন। গড়গড়িয়ে বলে দেবে।

সাজগোজের বেলায় শুধু মা-কে কপি করা...
শ্রীলেখা আর ঐশী
আমার মেয়ে ঐশী চুড়িদার ভীষণ পছন্দ করে। যে কোনও সাজগোজের সময় মা’কে কপি করা চাই-ই। কিন্তু আমি একদম ওকে এই ধরনের জামাকাপড় কিনে দিই না। আসলে বাচ্চাদের বাচ্চা-বাচ্চা ভাবটাই ভাল। অন্য ধরনের জামাকাপড় পরার বয়স তো আছেই। ওর অবশ্য চমৎকার একটা লহেঙ্গা আছে। কিন্তু সাধারণত অষ্টমী বা দেওয়ালির মতো বিশেষ দিনের জন্যই তোলা থাকে। অন্য সময় অনেক ফ্রিল দেওয়া ইংলিশ ফ্রকগুলো ওকে পরাতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। ডেনিম, বেলুন টপ এগুলো তো আছেই। শর্টসও প্রচুর কিনে দিই। তবে আমার মেয়ের একটা সুন্দর ছোট্ট ভুঁড়ি আছে কি না, তা-ই শর্টসগুলো খুব তাড়াতাড়ি টাইট হয়ে যায়। এ বার সপ্তমী আর অষ্টমীতে ওর নাচের অনুষ্ঠান আছে। ওই দিন শাড়ি পরানো হলে সে সবও ওর পুজোর কেনাকাটার মধ্যেই ঢুকে যাবে। সমস্ত কিছু ওর ম্যাচ করে কিনতে হবে। তাই জামার সঙ্গে মিলিয়ে কাঁড়ি-কাঁড়ি হেয়ারব্যান্ড, ক্লিপ আর রবার ব্যান্ড কেনা হয়, অবশ্য কোনওটাই বেশি দিন টেঁকে না। জুতোর ব্যাপারে আমি সাধারণত স্বাচ্ছন্দ্যর দিকে নজর দিই। ঐশী অবশ্য ছোট ছোট হিল দেওয়া জুতোগুলোও দিব্যি ম্যানেজ করে নেয়। কেনাকাটার সময় ঐশীকে আমি নিয়েই যাই। এক তো ওর পছন্দের একটা ব্যাপার থাকে। তা ছাড়া বাচ্চাদের জামাকাপড়ে সাইজের খুব সমস্যা হয়। সঙ্গে থাকলে ট্রায়ালটাও দিয়ে নিতে পারি।

শার্টে ফোলা ফোলা লাগে
জয়া শীল আর তাতিন
তাতিনের পুজোর বাজার এখনও শুরুই হয়নি। আসলে পুজোর মর্মটা ও এখনও তেমন বোঝে না। তবে, মামার বাড়ি থেকে অনেক জামাকাপড় আসে। আমার শাশুড়িমাও পুজোয় টাকা দিয়ে দেন ওর পছন্দ মতো জামা কেনার জন্য। কারণ, নাতির পছন্দ-অপছন্দ ভয়ানক বেশি। খুব স্টাইলিশ আমার ছেলে। সদ্য কেনা ডেনিমটার ওপর শার্ট ফেলে দেখে কোনটা ভাল মানাবে। আমিও ওর পছন্দ-অপছন্দটাকে গুরুত্ব দিই। ফাঙ্কি লুক ও খুব পছন্দ করে। সাউথ সিটি আর ইমামি মার্কেটে আমার পছন্দের কয়েকটা দোকান আছে, সেখান থেকেই ওর জন্য জামাকাপড় কিনি। ষষ্ঠীর দিনটা ওকে সাধারণত কুর্তা-পাজামা পরাই। অন্যান্য দিনের জন্য অবশ্যই শার্ট-প্যান্ট। টি-শার্ট খুব পছন্দ করে। বেনটেন, ব্যাটম্যান বা স্পাইডারম্যান-এর টি পেলে খুব খুশি। ভাল মেসেজ থাকলে, মেসেজ টিও কিনে নিই। তবে আমার ছেলে তো রোগা, তাই শার্টটাই বেশি পরাই। তবু যদি একটু ফোলা ফোলা লাগে!

ছবি: শুভেন্দু চাকী



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.