|
|
|
|
প্যান্ডেলভিড়ে আনারকলি, স্ট্র্যাপলেস, চিতাবাঘ প্রিন্ট |
অঞ্জলির মন্ত্রোচ্চারণের ফাঁকেই টুক করে দেখে নিন না এ কালের রাজকন্যেদের নতুন ফ্যাশন-মন্তর।
তার পর নয় দীক্ষা-টিক্ষা নিয়ে নিজেই রূপকথা হবেন... চিরশ্রী মজুমদার |
পুজো আসলে শুরু হয় সেই দিন, যে দিন আপনি সব চিন্তা দূর হটিয়ে ভাবতে বসেন, পাঁচটা দিন ঠিক কী কী পরবেন। কী কী কিনবেন, শপিং অভিযানের আগে থাকতেই ছকটা কষে নিলে সময়, পরিশ্রম, টেনশন স-ব বাঁচে। অতএব, তথাস্তু!
এথনিক
অতি পরিচিত সালোয়ার স্যুটের এখন দু’টি প্রকার। কলিদার হল এক কাটের, ঈষৎ ত্রিভুজাকৃতিতে নামে শরীর বেয়ে। তাতে এখন লেয়ারিংয়ের চল। কাপড়টা দু’টো স্তরে ভাগ করা। রঙিন শিমার জর্জেট কাপড় চিকচিক করছে, তার লম্বা কোটের মতো নেট। বুকের কাছে আলগোছে বোতাম আটকানো। অপরটি আনারকলি, সেই পঞ্চাশ বছর আগে মুঘল-এ-আজম-এ মধুবালা পরেছিলেন। শরীরের সঙ্গে লেপ্টে থাকা ফ্রক কাটের মুঘলাই চুড়িদার। এ বারে তার ওপরে এসেছে জ্যাকেটের চল। বেনারসি, জামেয়ার, র’সিল্ক-এর কামিজ, আর সঙ্গে থাক থাক চুড়ি পা। অনেক কামিজের ডিজাইন আবার আংরাখা কাটের আদলে। ক্রাশ্ড কাপড় দিয়ে তৈরি স্যুট কিনলে আবার ফিটিংস-এর চিন্তাও থাকবে না। তন্বী বা ঈষৎ পৃথুলা সবার শরীর বুঝে খাপে খাপ বসে যায়, দিব্যি দেখায়।
থিম যখন পশ্চিম
একটা পাবেন শিফট ড্রেস, এক রঙা, ছোট ঝুলের, অনেকটা টেপ ফ্রকের মতো দেখতে। টিউনিকের মতো দেখতে ড্রেস এক রঙা, বা বাই কালার হয়। অনেক ক্ষেত্রে কোমরের কাছে একটা চওড়া বেল্ট থাকে। ওই কোমরবন্ধের জন্য আকর্ষক আকারও মেলে। রাজকুমার উইলিয়ামের ফ্যাশন সচেতন নববধূ ও শ্যালিকাটি এই পোশাক খুব পরেন। সাদা বা অফ হোয়াইট রঙের। ওঁরা অবশ্য জালিদার সুদৃশ্য একটি হ্যাটও পরেন সঙ্গে। কলকাতার রাজকুমারীরা সেটা বাদ দিলেও সঙ্গে একটি হিল ওয়ালা বুট নিশ্চয়ই পরবেন।
পরুন রেট্রো প্যান্টস। অর্থাৎ লাল, সবুজ বা হলুদ রঙের ট্রাউজার্স। সঙ্গে ছোট ঝুলের প্রিন্টেড শার্ট বা নিটেড মেটেরিয়ালের টপ। এই দ্বিতীয় প্রকারটি বুনে তৈরি করা, দেখতে একেবারে কার্ডিগানের মতো, দারুণ সুন্দর। কিন্তু গরম লাগে না মোটেই। লম্বা ঝুলের নিটেড টপ পরলে থ্রি কোয়ার্টার লেগিংস বা জেগিংস পরুন। খুব কমনীয় দেখাবে।
জমিয়ে রাখুন কাউল নেক টপ। এর কোনও কোনওটার নেকলাইন অ্যাডজাস্টেবল। প্রয়োজনে অফশোল্ডার করে নেওয়া যায়।
প্লিট করা মাঝারি উচ্চতার স্কার্টও বলরুম পর্যায়ের ফ্যাশনেবল। এমন পোশাকও দেখবেন যেটা আদতে টিউনিক, কিন্তু প্রস্তুতিগুণে টু-ইন-ওয়ান। মনে হয় যেন টপ ও প্লিট করা স্কার্ট। প্লিট ফ্যাশনটা ফিরে এসেছে খাকি ট্রাউজার্সেও। সঙ্গেই ফিরে এসেছে শার্ট বা টপ গুঁজে পরার ফ্যাশন। খাকি ট্রাউজার্সের সঙ্গে চেক শার্ট গুঁজে পরুন। একটা জঙ্গুলে বিলিতি সিনেমার লুক আসবে। ফ্লোরাল প্রিন্টের শার্টও গুঁজে পরতে পারেন। ফুল-পাতা এ বারে প্রচুর জামা-কাপড়ে দেখতে পাবেন। ওই যে... ‘ইন ফ্যাশন’। ‘ইন ফ্যাশন’-এর কথাই যদি উঠল, ইনিয়ে বিনিয়ে সেগুলোর সবই প্রায় বলে দিয়েছি, শেষ প্রহরে রইল বাকি এক। সেটা হচ্ছে অ্যানিম্যাল প্রিন্ট। এ দেশেও জেব্রা, চিতাবাঘদের চামড়া প্রিন্ট করা পোশাক প্রচুর এসেছে। পরতেই পারেন। তবে একটা কথা খেয়াল রাখবেন। এই সাজটি আসলে সাহসী, বোল্ড। এর সঙ্গে অ্যাকসেসরিও একটু উগ্র ধরনের না পরলে, ব্যাপারটা জমবে না। যেমন নেটের স্টকিংস, লেস দিয়ে তৈরি ফ্যান্সি বডিস ইত্যাদি। এ সকলে প্রবৃত্তি না থাকলে, অ্যানিম্যাল প্রিন্ট থেকে দূরে থাকাই ভাল। ইচ্ছে হলে লেপার্ড প্রিন্ট-এর একটা ফুল স্লিভস টপ কিনে নিতে পারেন। ডেনিমের সঙ্গেই পরবেন না হয়। তাতেও কিন্তু, বন্ধুদলে ঠাকুর দেখা, নিশিনিলয় বা ‘ওগো, হ্যাঁগো’টির সঙ্গে মোমবাতি-ডিনার শারদসুন্দরী সম্মান কোত্থাও অধরা থাকবে না। তিন সত্যি আর গড প্রমিস।
|
সৌজন্য: অনিতা ডোংরে।
ছবি: অনিরুদ্ধ মজুমদার |
|
|
|
|
|