|
|
|
|
রাস্তায় নামবে এ বার ধুন্ধুমার |
এ পুজোয় স্ট্রেট ফিট ডেনিম আর হুডেড-টি নাকি খানদানি আলিগড়ি পায়জামা, কোনটা?
পুরুষ-ফ্যাশনের বাহার দেখে নাকি মেয়েরাও বলছে, ‘ছেলে হলে ভাল হত!’ যাজ্ঞসেনী |
বিশ্ব জোড়া ফ্যাশন পরিবারের উন্নতিসাধন বা আধুনিকীকরণ (যা বলেন), সবই হচ্ছে উল্কার গতিতে। আর শুধু মেয়েমহলই যে তাতে আনন্দে কুটোপাটি হচ্ছেন, তা নয়। ছেলেদেরও যথেষ্ট আহ্লাদিত ও পুলকিত হবার মতো কারণ ঘটছে নিরন্তর। পরিস্থিতি এমন, অতিশয় সাজুন্তিরাও দুঃখ করে ফেলেন, ‘আজকাল ছেলেদের ফ্যাশনে কত অপশন, কী বাহার দেখেছিস, ছেলে হতে কী যে লোভ হয় মাঝেমধ্যে!’ আসন্ন শারদীয়ায় ছেলেদের ফ্যাশনটাও কিন্তু অপুর সাইজের একটি হাঁ করে দেখার মতো।
শেরওয়ানি-ধোতি প্যান্টস
আগেকার দিনে রাজা-মহারাজারা যে অত-শত রানিতে পরিবৃত হয়ে থাকতেন, পুরোটাই কি দৌলত আর গা-জোয়ারি? উঁহুহু, তাঁরা অনেকেই কিন্তু যথেষ্ট সুপুরুষ ছিলেন। তবে খুঁটিয়ে দেখলে তাঁদের রাজকীয় গ্ল্যামারের অপর একটি কারণ খুঁজে পাবেন। রাজবেশ। পুজোর সময় এথনিক পরার যে হিড়িক থাকবে, সেই সুযোগে কয়েকটা ওই রকম বাদশাহি ভারতীয় পোশাক কিনে রাখতে পারেন। শেরওয়ানি স্টাইলের লং কুর্তা এসেছে। এ বার কিন্তু ডেনিমের সঙ্গে কুর্তা পরার রেওয়াজটি আর নেই। তার বদলে খানদানি আলিগড়ি পায়জামা, অর্থাৎ চুড়ি পা পরুন। বুটিকের পাঞ্জাবি তো দেখা মাত্রই নজর কাড়ে। খাদি বা তসরের কাপড়ের ওপর বিচিত্র বর্ণ ও প্রকারের কারুকাজই সেখানে বেশি। ব্রোকেড সিল্কের পাঞ্জাবিতে নিমজরির নকশা বা বোতামবিহীন টি শার্ট আকৃতির পাঞ্জাবি এ বছরের নতুন অতিথি। আর কাঁথাস্টিচের কাজ তো বরাবর ছিলই।
ধুতি পোশাকটি পরার শখ থাকলেও, পরা ও সামলানোটা শক্ত। ছেলেদের জোয়াব বা ধোতিপ্যান্টস একটু বিশেষ দোকান ছাড়া পাওয়া মুশকিল। তবে বিয়ের পোশাক যাঁরা বিক্রি করেন, তাঁদের কাছে আর একটি মুশকিল আসান পোশাক পাবেন। রেডিমেড কোঁচানো ধুতি।
শুধুই পশ্চিম
উঠতি বয়সের ছেলেদের পছন্দের গোটাটাই গ্রাফিক টি-র দখলে। অর্থাৎ বুকের ওপর নানা ছবি আঁকা টি শাটর্। প্রতি বছরই তাতে নতুন কায়দা আসে। এ বার সেটায় শুধুই মাইকেল জ্যাকসন। কলার গোটানো চেক শার্ট কিন্তু সব্বাই এক ধারসে গায়ে চাপাবে, তাই ওই স্টাইল ছকটি মাথায় রেখেই একটু নতুন কিছু ভাবতে হবে। একটা গ্রাফিক টিই না হয় পরলেন, এ বার তার ওপরে একটা চেক শার্ট জ্যাকেটের মতো পরে নিলেন। বোতামগুলো আর আটকালেন না। এ বার স্ট্রেট ফিট ডেনিম (দোহাই স্কিন ফিট না, ওটা মেয়েমহলেই বেশি মানায়)। ফ্যাশন ম্যাগাজিন এই চেহারাটিকেই বলবে, বাইকরাইডার লুক। টি শার্টের বুকে ও হাতায় নম্বর সেলাই করা, জার্সি ডিজাইন কম বেশি সব বয়সেই পুজোর দিনে মানিয়ে যাবে।
কলেজে যারা ‘ফাঙ্কি’ নামে খ্যাত, দোকানে গিয়েই স্প্রে ডেনিম খুঁজবেন। ছাই নীলচে অ্যাসিড ডেনিমের ওপর কেমন ছোপ ছোপ রং ছেটানো। সঙ্গে যাবে হুডেড টি। টি-র জিপারটা নাও আটকাতে পারেন। তা হলে, ভেতরে একটা দারুণ ভেস্ট পরবেন কিন্তু।
পুলওভারের মতো দেখতে একটা দারুণ টি, তার ভেতর দিয়ে উঁকি দেয় বিপরীত রঙের গেঞ্জি। হাতা গুলো আবার সম্পূর্ণ উলটো কিসিমের। যেন উল দিয়ে বোনা। দেখলে মনে হয়, একটার ওপর একটা করে অনেকগুলো জামা পরা হয়েছে, আসলে পোশাক একটাই। এটাই লেয়ারড লুক।
ছেলেদের পোশাকে শাইনি মেটেরিয়াল থাকলে সাজ-সাজ মনে হয়। ক্যাজুয়ালের মধ্যে স্প্যানডক্সের ট্রাউজার্স, আর ফর্মালের মধ্যে গ্লসি কাপড়ের শার্ট ও ফ্ল্যাটফ্রন্ট ট্রাউজার্স। পুজোয় অফিস যাব না, তাই ফর্মাল কেন পরব বলে এড়িয়ে যাবেন না। ওই চকচকে দেখতে ফর্মালসই পার্টিওয়্যার। কায়দা করা টাই পরুন সঙ্গে। সেটা সাহস করে গলায় বাঁধতে পারলে বা অন্তত একটা বো টাই জোগাড় করতে পারলে তো ফাটাফাটি।
ডেনিমের ওপরে ভাল শর্ট শার্ট একটু খানি ঝুলিয়ে পরুন। এর ওপর একটি ওয়েস্টকোট পরতে পারলেই হয়ে গেল সেমি ফর্মাল।
পোশাকের মেটেরিয়াল হিসাবে ডেনিমে অরুচি? স্বাদবদল তালিকায় লিনেন, কর্ডরয় এবং বিস্কিট রঙের কারগো। কারগো প্যান্টসকেই তার পকেট সংখ্যা অনুযায়ী সিক্স পকেটস, ইলেভেন পকেটস ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।
একটি দুধ সাদা স্লিম ফিট শার্টের আকর্ষণ উপেক্ষা করা শক্ত। কিন্তু সবাই যদি পরে? আচ্ছা, সাদা শার্ট কিনতে গিয়ে দেখে নিন তার হাতা, কলার ইত্যাদিতে অন্য কোনও ডিজাইন আছে কিনা। থাকলে অবশ্যই কিনুন। শুধু ওই অন্যরঙা হাতা অংশে একটা ভাল দেখে কাফলিংক আটকে নেবেন। নেভি ডেনিমের সঙ্গে টাক ইন করে পরবেন। কিংবা ওই শার্টটা অল্প ঝুলিয়ে অল হোয়াইট একটা লিনেন ট্রাউজার্স।
ব্যস! এ বারটা এই পর্যন্তই থাক। ললনাকুলের কটাক্ষবাণ আর কতই বা সামলানো যায়?
|
ছবি: অনিরুদ্ধ মজুমদার |
|
|
|
|
|