মন্ত্রী যাবেন বলে তৎপর ছিলেন সকলে। হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টার পাশাপাশি কর্মব্যস্ততাও ছিল তুঙ্গে। তাও যত্রতত্র নোংরা পড়ে থাকতে দেখে শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপারকে সতর্ক করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। রাজ্যে পালা বদলের পর শুক্রবার রোগী কল্যাণ সমিতির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর মন্ত্রী ২৫ শয্যার লেবার রুম উদ্বোধন করেন। হাসপাতালের ভেতর দিয়ে যাতায়াতের যাওয়ার সময়ই মন্ত্রীর চোখে পড়ে অপরিচ্ছন্নতা। কয়েকটি জায়গায় ব্লিচিং পাউডার লেপ্টে উপরে নোংরা ফেলার পাত্র রাখা হয়েছে ঠিকই, কাছেই পড়ে রক্তমাখা তুলো, সিরিঞ্জ, ভাত, ডাল। মন্ত্রীকে সুপারের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, “হাসপাতালে পরিষ্কার হচ্ছে না। আজ, আমি আসব বলে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করেছেন। অন্য দিন তো হাল আরও খারাপ হয়। এটা মানা যাবে না। কর্মীরা কেন কাজ করছেন না? যারা কাজ করবেন না তাদের অন্য জায়গায় পাঠান, কাজের লোক নিয়ে আসনু। আপনার একার পক্ষে সব দিক লক্ষ রাখা সম্ভব না হলে অন্য কাউকে ওই দায়িত্ব দিন।” হাসপাতাল সুপার সুশান্ত সরকার কর্মী সংখ্যা কম, অনেক কর্মীর বয়স হয়ে গিয়েছে বলে মন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও গৌতমবাবু অভিযোগ করেন, “যে কর্মী সংখ্যা রয়েছে, তাঁদের ব্যবহার ঠিক মতো হচ্ছে না।” হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছেন ৮৬ জন। চুক্তিভিত্তিক রয়েছেন আরও ১০ জন। হাসপাতাল পরিষ্কার রাখার জন্য ২০ জন স্থায়ী ও ১০ অস্থায়ী কর্মী রয়েছে। মন্ত্রী জানান, শিলিগুড়ি হাসপাতালকে আগামী দুই মাসের মধ্যে পরিকাঠামোর দিক থেকে উন্নতি করা হবে। নিউনেটাল ব্লক, আলট্রাসানোগ্রাফি, সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা হবে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে হাসপাতালকে একটি আধুনিক মানের জেনারেটর দেওয়া হবে। পানীয় জলের জন্য পাম্প হাউস, বসার শেডের ব্যবস্থা করা হবে। অফিসের কাজে ফ্যাক্স, জেরক্স ও ১০টি কম্পিউটার বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রের জন্য টেকনিসিয়ান ও কর্মী নিয়োগ করা হবে। প্যাথলজি সেন্টার আধুনিক মানের করা হবে। বার্ন ইউনিট দ্রুত চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মন্ত্রী নির্দেশ দেন, জরুরি বিভাবে যাতে রোগীরা ঠিকমতো পরিষেবা পান, সে ব্যবস্থা করতে হবে। ২৪ ঘন্টা জরুরি বিভাগ খোলা রাখার পাশাপাশি সেখানে ওষুধ এবং চিকিৎসকরা যাতে থাকেন সে ব্যপারে উদ্যোগ নিতে বলেন মন্ত্রী। সামান্য ব্যাপারে যাতে রোগীদের রেফার করা না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার নির্দেশ দেন। হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর ব্যপারেও আশ্বাস দেন মন্ত্রী। |