তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ দ্রুত শেষ করতে ৭ দফা কর্মসূচির উপর জোর দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শুক্রবার শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে তিস্তা সেচ প্রকল্প নিয়ে সরকারের তৈরি প্রথম ‘হাই পাওয়ার মনিটারিং’ কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে সেচ বিভাগের আধিকারিকেরা ছাড়াও ৬ জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। যে সাত দফা কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া তার মধ্যে প্রথম, অধিগৃহীত জমি থেকে দখলদার উচ্ছেদ করা। দ্বিতীয়, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, তৃতীয়, ই-টেন্ডার পদ্ধতি চালু, চতুর্থ, বর্তমানে হাতে থাকা ৪৫ কোটি টাকা প্রকল্পের দ্রুত রূপায়ণ, পঞ্চম, মামলা ও দখলদারদের উচ্ছেদে বিধায়কদের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া বিষয় স্থির হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি কাজের গুণমান এবং ভুটান হয়ে ডুয়ার্সের সঙ্কোশ থেকে জল এনে তিস্তায় ক্যানালে ফেলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয় খতিয়ে দেখা হবে বলে ঠিক হয়। গৌতমবাবু বলেন, “প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৫ মধ্যে শেষ করতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় এবং সেচ দফতর থেকে বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণ, মামলার বিষয়টি মূলত দেখা হবে। হাতে থাকা টাকার কাজ দ্রুত শেষ করার কথাও বলা হয়েছে। ই-টেন্ডার পদ্ধতিতে বহু কাজ প্রকল্পের করা হবে।” মন্ত্রী জানান, কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি গুণমানের দিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেচ দফতর নজর রাখবে। সঙ্কোশ থেকে জল এলে তিস্তা ক্যানেলে ফেলতে পারলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির ক্ষমতা বাড়ানো যাবে। ১৫ মেগাওয়েটের বদলে ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। ভুটানের সঙ্গে এই বিষয়ে একটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “বাম আমলে বিষয়টি নিয়ে একবার কথা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কমিটিতে ৭ জন বিধায়ক আছেন। তাঁরা নিজেদের এলাকায় বিষয়গুলির নিষ্পত্তি করতে পারলে কাজ দ্রুততার সঙ্গে হবে। বৈঠকে বিষয়টি বলেছি।” তিন দশক আগে শুরু হওয়া তিস্তা প্রকল্পের কাজ বর্তমানে প্রথম পর্যায়েই পড়ে রয়েছে। প্রথম পর্যায়ের স্টেজ-ওয়ানের সাব স্টেজ-ওয়ানের কাজ ২০১৫ মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পর্যায়কে জাতীয় পর্যায় বলেও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। প্রায় সাড়ে ১৬০০ কোটি টাকার অনুদানের কাজ ২০১৫ সালে শেষ করতে না পারলে অনুদান বদলে তা ঋণের আকারে রাজ্যের ঘাড়ে এসে পড়বে। সরকারি সূত্রের খবর, তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে উত্তরবঙ্গের ৯.২২ লক্ষ হেক্টর জমিতে জল পৌঁছানোর কথা। প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩.২৫ লক্ষ হেক্টর জমি। কিন্তু তিন দশকের এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত জল পৌঁছেছে মাত্র ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে। |