জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ
সুপ্রিম কোর্ট রেহাই দিল আন্দোলনকারীদের
সাজা দিয়েছিল হাইকোর্ট। অব্যাহতি দিল সুপ্রিম কোর্ট।
জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ দ্রুত স্থাপনের দাবি জানানো আন্দোলনকারীদের ‘কারাদণ্ডের’ যে সাজা দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট, তা থেকে তাঁদের রেহাই দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওই সাজা থেকে রেহাই পেয়েছেন পুলিশ-প্রশাসনের ধিকারিকেরাও। সার্কিট বেঞ্চের কাজ দ্রুত শুরু করার দাবিতে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের সামনে ২০০৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে এক টানা এক মাস ‘অবস্থান-সত্যাগ্রহ’ করেছিল ‘সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় সমন্বয় কমিটি’। জেলার মুখ্য বিচারক-সহ অন্য বিচারকেরা এবং কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ একাধিকবার আদালতে গিয়েও আন্দোলনকারীদের বাধায় ফিরে যেতে বাধ্য হন। মুখ্য বিচারক সমস্ত জানান হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে।
এই সময়ের মধ্যে আদালত চালু করার ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসনও উদ্যোগী হয়নি। এক মাস জেলা আদালত বন্ধ করে রাখার ঘটনা ‘সংবিধান হত্যার’ সামিল জানিয়ে ২০০৭ সালের ২ মার্চ কলকাতা হাইকোর্ট নজিরবিহীন ভাবে রাজ্য পুলিশের তৎকালীন ডিজি, জলপাইগুড়ির তৎকালীন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং কোতোয়ালি থানার আইসিকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা হারে জরিমানা করে। ওই ‘অপরাধে’ একই সাজা পান জলপাইগুড়ির বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়-সহ সমন্বয় কমিটির ১৫ জন সদস্য। এই সাজার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোটের্র্ আবেদন করে সমন্বয় কমিটি। সাজাপ্রাপ্ত সরকারি কর্তারাও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। গত ২৪ অগস্ট সুপ্রিম কোটের্র্ মামলার শুনানি হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘ফৌজদারি আদালত অবমাননার’ অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিক-সহ সকলকেই মামলা থেকে রেহাই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এ কথা জানাজানি হতেই জলপাইগুড়ি শহরে খুশির হাওয়া। সার্কিট বেঞ্চ সমন্বয় কমিটির সম্পাদক কমলকৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “এই জয় শহরবাসীর। যে ভাবে সার্কিট বেঞ্চ আন্দোলনের সঙ্গে সর্বস্তরের শহরবাসী সামিল হয়েছেন, সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন।” হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোটের্র্ আবেদন করা থেকে মামলাটির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল জলপাইগুড়ি বার আসোসিয়েশন। তার সম্পাদক তপন ভট্টাচার্য বলেন, “আইনজীবী জি ভেঙ্কট রামন এবং জয়দীপ মজুমদার আমাদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি লড়েছেন। এ দিন দিল্লি থেকে আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের রায় জানিয়েছেন। সার্কিট বেঞ্চের আন্দোলন নিয়ে উৎকন্ঠার অবসান ঘটেছে। আশা করি দ্রুত সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধন হবে।”
সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার পরে আন্দোলনের সাজাপ্রাপ্ত নেতৃত্বের সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করে প্রয়োজনে ফের আন্দোলনে সামিল হওয়ার কথা জানিয়েছেন। বিধায়ক দেবপ্রসাদবাবুর কথায়, “হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করেছে বলে শুনেছি। এই রায়ে সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে আন্দোলনের নৈতিক শক্তি বাড়ল।” জলপাইগুড়ি জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সাধন বসু বলেন, “সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে রাজ্য সরকার যখন আশার আলো দেখাচ্ছে, সেই সময়ে এই রায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।” জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার আসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তীর মন্তব্য, “এই রায়ে প্রমাণিত হয়ে গেল যে আমাদের আন্দোলন গণতান্ত্রিক ছিল।” তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা আইনজীবী সোমনাথ পাল বলেন, “এই রায়ে সার্কিট বেঞ্চ প্রসঙ্গে আইনি জটিলতার অবসান হল।” ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা প্রবাল রাহা বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট কারাদণ্ড থেকে মুক্তি দিয়েছে। সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে ভবিষ্যতেও আন্দোলন হলে প্রথম সারিতেই থাকব।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.