|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
ব্যক্তি-লেখকের আত্মপ্রকাশ দেখা যায় |
‘কর্পোরেট সেক্টরের মুনাফার স্বার্থে যেভাবে বিভিন্ন রাজ্য বিশেষ করে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে শাসকগোষ্ঠী জমি-জঙ্গল-পাহাড় থেকে ভূমিপুত্রদের নিষ্ঠুরতম উচ্ছেদের জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধের বাতাবরণ তৈরি করে নজিরবিহীন দেশের সম্পদ লুন্ঠন করেছেন এটা কোনো সুস্থ মানুষ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মানুষ মেনে নিতে পারেন না।’ সম্পাদকীয়তে এ-মত প্রকাশের সঙ্গে ‘চেতনা’-র (সম্পা: চন্দন ঘোষ রাখালরাজ চট্টোপাধ্যায়) এ বারের সংখ্যায় ওড়িশা ঝাড়খণ্ড ছত্তীসগঢ় পশ্চিমবঙ্গে অপারেশন গ্রিন হান্ট-এর বিস্তারিত প্রতিবেদন। পাশাপাশি ‘বিশ্বউষ্ণায়ন’ নিয়ে বিশেষ ক্রোড়পত্র, বিশেষ প্রতিবেদন পশ্চিমবঙ্গে ‘বন্দীমুক্তি ২০১১’ নিয়ে। ‘পাঠশালা’ এ বার থেকে পরিচিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক পাঠশালা’ নামে, কারণ ‘ভারতের সাময়িক পত্রের পঞ্জীকরণ সংস্থান... এই শিরোনামটিই নির্ধারিত করেছেন।’ নতুন সংখ্যাটিও মননশীল নিবন্ধে ঋদ্ধ। ‘পাঠশালা’-র প্রথম সংখ্যায় ছিল সুস্নাত দাশের ‘ঐতিহাসিক নীলবিদ্রোহের প্রেক্ষিতে অবিভক্ত বাঙলার কৃষক আন্দোলন’-এর মতো রচনার পাশেই সুজিত সুরের সুন্দরবনে মুসলমান সমাজের বিবাহপদ্ধতি বিষয়ে একটি ক্ষেত্রসমীক্ষাজাত রচনা, রংগন চক্রবর্তী মৈনাক বিশ্বাস সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় মধুমা মুখোপাধ্যায়ের বাংলা সিনেমার হাল-হকিকৎ বিষয়ে আলোচনা। দ্বিতীয় সংখ্যায় শুভেন্দু দাশমুন্সির ‘কন্দর্প কোহিনুর’-এ রবীন্দ্র কাব্যচূর্ণ” রচনায় ১৯২৬-এ প্রকাশিত ‘শোভা’ বইটির আলোচনা, খাদিজা খাতুনের ‘গণ-আন্দোলনে মুসলমান মহিলা’-র মতো তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধ। ‘পরিচয়’-এর (সম্পা: বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য) ‘সমালোচনা সংখ্যা’র রচনাগুলির ভিতর ব্যক্তি-লেখকের আত্মপ্রকাশ টের পাওয়া যায়, লেখাগুলি তাই বই ঘিরে নিছক সমালোচনার ঘেরাটোপে আটকে না থেকে হয়ে উঠেছে লেখকের দৃষ্টিকোণও। যেমন বর্ণনা গুহঠাকুরতা মণিকুন্তলা সেনের জন্মশতবার্ষিকী রচনাসংগ্রহ নিয়ে লিখতে-লিখতে শেষে মন্তব্য করেছেন ‘মহিলারা থেকে যাচ্ছেন পার্টির নীরব, যান্ত্রিক কর্মী হিসেবে, তাঁরা থেকে যাচ্ছেন পার্টির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে বৃত্ত তার বাইরের কোনও সামাজিক ক্রিয়াকলাপের বৃত্তে... ।’ ‘অসামান্য প্রচ্ছদের পাশাপাশি অনতিক্রম্য কবিতা।... তিনি পূর্ণেন্দু পত্রী। বহতা সময় তরী তাঁকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ধূসর জগতের পারে, সেখানে আমাদের ডাক পৌঁছয় না। কিন্তু আমাদের শ্রদ্ধা, আমাদের প্রণাম পৌঁছয়।’ ‘হান্ড্রেড মাইলস’ (সম্পা: ঐশিক দাশগুপ্ত) পত্রিকার পক্ষ থেকে কবি ও শিল্পী পূর্ণেন্দু পত্রীকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়েছে সম্পূর্ণ একটি সংখ্যা উৎসর্গ করে। কবিতা, পদ্য, সাক্ষাৎকার, চিঠি, গ্রন্থতালিকা সমৃদ্ধ সংখ্যাটি সব অর্থেই সংরক্ষণযোগ্য। শঙ্খ ঘোষ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘আনন্দময়, এই কথাটাকে আমার মনে হয় পূর্ণেন্দুর বেঁচে থাকার আর যা-কিছু সৃষ্টি করার কেন্দ্রীয় শব্দ।’ প্রচ্ছদের দীপ্ত ছবিটি সোমনাথ ঘোষের তোলা।
রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি গল্প নতুন দৃষ্টিতে পড়ে সুতপা ভট্টাচার্য লিখেছেন ‘রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের তিনজন একাকী নারী’। ‘এবং মুশায়েরা’-র (সম্পা: সুবল সামন্ত) এ বারের সংখ্যায় এ রকম আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনা রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত বিমলকুমার মুখোপাধ্যায় লোকনাথ ভট্টাচার্যের। সঙ্গে এক গুচ্ছ কবিতা, গল্প।
মালদহের কবি ও গল্পকার অমিত গুপ্তকে নিয়েই তৈরি ‘আরণ্যক’-এর (যুগ্ম-সম্পা: অসীম গোস্বামী, মোঃ নুরুল ইসলাম) অমিত গুপ্ত সংখ্যা। সংকলনের লেখাগুলির মধ্য দিয়ে সংগ্রামী এক সাহিত্যিকের আন্তরিক ছবিটি ফুটে উঠেছে। |
|
|
|
|
|