তৃণমূলের দুই নেতার বিবাদে বিপন্ন ‘উলুখাগড়া’ এক লন্ড্রি মালিক!
তাঁর দোকান বন্ধের ফতোয়া দিয়েছেন এক নেতার পুত্র। অন্য নেতাটি পাশে থাকলেও দোকানে হামলা ঠেকাতে পারেননি। ওই লন্ড্রিতে হামলা চালিয়ে জামা-কাপড়ে নোংরা মাখিয়ে দেওয়া হয়েছে। বারাসত থানায় অভিযোগে এমনটাই জানিয়েছেন লন্ড্রি মালিক। ঘটনাটি বারাসতের। লন্ড্রি মালিকের অভিযোগ বুবাই চট্টোপাধ্যায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তিনি বারাসতের তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সমীর চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে। তিনি বারাসত সান্ধ্য কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও বটে। বারাসতের দক্ষিণপাড়ায় সুমন দাসের দোকানে জামা-কাপড় কাচতে দেন গোরাচাঁদবাবু। থানায় দায়ের করা অভিযোগে সুমনবাবু জানিয়েছেন, গোরাচাঁদবাবুর পোশাক কাচা চলবে না বলে হুমকি দেন সমীরবাবুর ছেলে বুবাই। বৃহস্পতিবার কয়েক জনকে সঙ্গে লন্ড্রিতে তিনি হামলা চালান। শুক্রবার বারাসত থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন সুমনবাবু। তিনি বলেন, “ওঁদের হাতে দু’টো বড় ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগ থেকে নোংরা, গোবর, কাদা, সারা দোকানে ছিটিয়ে দেয়। বলে, দোকান খুললে আরও শাস্তি পেতে হবে।” এর পরেই একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দোকান বন্ধ করে দেন সুমনবাবু। শুক্রবার তিনি বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়ের কাছেও দরবার করেন। সুনীলবাবু বলেন, “ঘটনাটা দুঃখজনক। পুলিশ তদন্ত করছে। আমরাও দেখছি।” যাঁর ছেলের নামে এত অভিযোগ, সেই ভাইস চেয়ারম্যান সমীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ সব অভিযোগ ঠিক নয়। ওই লন্ড্রির মালিক আমার জামাকাপড় নিয়েও এক বার ভুগিয়েছিল। আসলে গোরাচাঁদই বদমায়েশি করছে। এ সব করাচ্ছে সে-ই।” বুবাইও ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “এ সব নোংরামি করতে আমার রুচিতে বাধে। চাঁদা তুলে নিজের নামে জমি কিনে সেখানে পার্টি অফিস বানিয়েছেন গোরাচাঁদ। প্রতিবাদ করায় আমাদের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।” গোরাচাঁদবাবুর বক্তব্য, “তৃণমূলের একটি দলীয় অফিস আমরা করেছি ঠিকই কিন্তু সেই জমি ব্যক্তিগত কারও নামে নেই। বাবা-ছেলে মিলে একের পর এক দুর্নীতি ও অন্যায় করে যাচ্ছে।”
তৃণমূলের উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা পর্যবেক্ষক ও রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ ব্যাপারে বলেন, “ঘটনাটা জেনেছি। অনুমতি ছাড়া যদি ওই দলীয় অফিস খোলা হয়, তবে তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর লন্ড্রির ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে কঠিন শাস্তি হবে। কেউ ছাড় পাবে না।” |