ঘাটালে বিশ্বকর্মা পুজো
ঘরে-বাইরে চাহিদায় পড়তি, মাথায় হাত পটুয়া শিল্পীদের
বিশ্বকর্মা পুজো আসন্ন প্রায়। কিন্তু ঘাটালের পটুয়াপাড়ার ব্যস্ততা যেন আর পাঁচটা বছরের তুলনায় কম। অতিবর্ষণের জেরে পরপর বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে এ বার এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছেন ঘাটালবাসী। পুজোয় মন নেই তাঁদের। তার উপরে কর্মসূত্রে ভিন্ রাজ্যে বসবাসকারী স্বর্ণশিল্পীরাও প্রতি বছরের মতো এ বার আর মূর্তির অর্ডার দিচ্ছেন না। ফলে মাথায় হাত পড়েছে ঘাটাল মহকুমার মৃৎশিল্পীদের।
হাওড়ার ডোমজুড় কিংবা ঘাটাল-দাসপুর এলাকার যে সব স্বর্ণ কারিগর ও ব্যবসায়ীরা ভিন্ রাজ্যে থাকেন, বিশ্বকর্মা পুজোর সময় তাঁরা ঘাটাল থেকেই প্রতিমা-সহ পুজোর যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে যেতেন। প্রায় দু’দশকের বেশি সময় ধরে এমনই চলে এসেছে। ফোনে-ফোনেই অর্ডার। যথা সময়ে মূর্তি সাজিয়ে, পুজোর উপকরণাদি, এমনকী পুরোহিত পর্যন্ত পাঠিয়ে দেওয়া হত মুম্বই, দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্বর্ণবাজারে। রাজ্যের বাইরে মূর্তি পাঠিয়ে এত দিন ভালই রোজগার হয়েছে ঘাটাল মহকুমার পটুয়াদের। কিন্তু এ বারের ছবিটা অন্য রকম। স্থানীয় প্রতিমা শিল্পী সংগঠনের পক্ষে বিল্টু রায় চৌধুরী বলেন, “প্রতি বছর শুধু ভিন্ রাজ্যেই ঘাটাল-সহ সংলগ্ন এলাকা থেকে দু’আড়াই হাজার প্রতিমা যায়। এ বার খুবই কম অর্ডার এসেছে। যা এসেছে তা-ও কম দামের।” শুধু শিল্পীরাই নন, উদ্বিগ্ন পুরোহিতেরাও। প্রতি বছর ঘাটালের জয়রাম চক্রবর্তী, সঞ্জয় চৌধুরী, বিমল মুখোপাধ্যায়, দাসপুরের অনিল চক্রবর্তীদের মতো শতাধিক পুজারি দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদে পুজোর ডাক পেতেন। এ বার তাঁদেরও ডাক পড়েনি সে ভাবে। ঘাটাল থেকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বকর্মা ঠাকুর ভিন্ রাজ্যে পাঠাতেন যিনি সেই কার্তিক মণ্ডলও অন্য বছরের তুলনায় কম অর্ডার পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ঝাঁকরার মৃৎশিল্পী কালিপদ গায়েন বলেন, “এ বছর আমি মাত্র কুড়িটির মতো অর্ডার পেয়েছি। অন্য বছর অন্ততপক্ষে দেড়শোর মতো ঠাকুর বিক্রি করতাম।”
আকাশছোঁয়া সোনার দামের কারণেই গয়নার বাজারে মন্দার ছোঁওয়া বলে জানিয়েছেন ভারতীয় স্বর্ণশিল্প সেবা সমিতির কর্মকর্তা গোবিন্দ মাইতি। দাসপুরের চাঁইপাটের বাসিন্দা অজিত মাজি, বিজয় মাজির মুম্বইয়ের জাভেরি বাজারে সোনার দোকান। তাঁরা বলেন, “মন্দার কারণে পুজোর জৌলুস কম। কোনও রকমে পুজো করছে লোকজন। বাইরে থেকে বিশেষ প্রতিমা অর্ডার দিয়ে বানানোর উৎসাহ নেই কারও।” একই কথা বলেন দিল্লির স্বর্ণব্যবসায়ী তথা দাসপুরের সুরথপুরের বাসিন্দা অশোক দাসও।
এ তো গেল বাইরের কথা। ঘরের বাজারেও টান পড়েছে যথেষ্ট। ঘাটালে গত দু’মাসে ছোট-বড় মিলিয়ে চার বার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এলাকার আমন ধান-সহ অন্য ফসল জলের তলায় পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গ্রামেগঞ্জে তাই পুজো হচ্ছে কম। ঘাটাল শহরের প্রতিমা শিল্পী কার্তিক চন্দ্র দে এবং সনাতন মল্লিকেরা বলেন, “আমরা বিশ্বকর্মার মূর্তি এলাকাতেও প্রচুর বিক্রি করতাম। এ বার মূর্তি তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত না তেমন অর্ডার পেয়েছি, না তেমন বিক্রি হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.