পূর্ব কলকাতা
সমাধানের আশ্বাস
জল অমিল
বেলেঘাটার চাউলপট্টি লেনের বাসিন্দা বুবাই বসুকে প্রতি দিন খুব সকালেই উঠে পড়তে হয়। কারণ, দেরি হলেই পাশের পাড়ার টাইমকলে পানীয় জলের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। শুধু বুবাইবাবু নন, চাউলপট্টি-সহ বেলেঘাটার খাল ধারের কয়েকটি অঞ্চলের বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন পানীয় জলের এই সমস্যা ভোগ করছেন। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, আপাতত ওই সব এলাকায় পুরসভার গাড়ি জল সরবরাহ করছে। পুরসভা শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বেলেঘাটায় ৩৩, ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের খালের ধারের কয়েকটি জায়গায় বাগমারি জলাধার থেকে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব জায়গায় তা পৌঁছয় না। তাই পুরসভার জলের গাড়ি যেতেই দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। সেই জল শেষ হয়ে গেলে জল কিনতেও হয়।
৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের চাউলপট্টি রোড, নবাব বাগান, বংশীসাহা বাগান, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের গগন সরকার রোড-সহ কয়েকটি এলাকায় জলকষ্ট বেশি। স্থানীয় বাসিন্দা রীনা তালুকদারের কথায়: “পাশের এলাকা বাগমারির পরিস্রুত জল পাচ্ছে। অথচ আমরা বঞ্চিত। কাউন্সিলরকে বলেও কোনও ফল হচ্ছে না।” একই অভিযোগ চাউলপট্টি রোডের বাসিন্দা শ্যামল আদকের। তিনি বলেন, “প্রায় প্রতি দিনই পানীয় জল কিনতে হয়। তিন টাকায় পাঁচ লিটার।”
বেলেঘাটার এই ওয়ার্ডগুলি ৩ নম্বর বরোর অধীন। বরো চেয়ারম্যান তৃণমূলের স্বপন সমাদ্দার বলেন, “বরোর ৯টি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ হয় বাগমারি পাম্পিং স্টেশন থেকে। ওই এলাকাগুলি একেবারে শেষ প্রান্তে। দূরত্বের কারণেই চাপ কম। তাই ঠিকমতো জল যায় না।” বিষয়টি সমাধানের জন্য ইতিমধ্যেই বরো-কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে স্বপনবাবু জানান। ওই বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের সমীর চক্রবর্তীর বক্তব্য, “একে জলের চাপ কম, তার উপরে জনসংখ্যা বাড়ছে। ফলে সমস্যা তীব্র হচ্ছে।” ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লকের ঝুমা দাস বলেন,“সমস্যার কথা মেয়রকে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যেই সমস্যা নিয়ে পুর-অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওখানে আলাদা করে একটি মিনি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তা হলে সমস্যা মিটবে।” তিনি আরও জানান, বুস্টার স্টেশনের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। স্বপনবাবু জানান, চাউলপট্টি রোডে খালের ধারে সেচ দফতরের একটি জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। জায়গাটি মিনি বুস্টার স্টেশনের পক্ষে উপযুক্ত। সেচ দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি মেয়রকে জানানোও হয়েছে।

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.