|
|
|
|
|
|
|
...সময় এল কাছে |
মা দুগ্গার অস্ত্র সংবরণ
মণ্ডপে সেই ছয়-সাতের দশকের ছোঁয়া। তুষের নকশা কিংবা
লুপ্তপ্রায় জো পুতুল। থিম-বৈচিত্রের সন্ধানে রাজপথ
ছেড়ে গলিতে ঢুকলেন আর্যভট্ট খান
|
|
কলেজ স্কোয়্যার, মহম্মদ আলি পার্ক বা চালতা বাগানের মতো বড় পুজোই নয়, উত্তর কলকাতার অলিগলিতে লুকিয়ে থাকা ছোটবড় বিভিন্ন পুজোর আয়োজন এখন তুঙ্গে।
যেমন আমহার্স্ট স্ট্রিটের (রাজা রামমোহন সরণি) রামমোহন স্মৃতি সঙ্ঘ প্রতি বারের মতো এ বারও থিম দিয়েই চমক দিতে চাইছে। উদ্যোক্তারা জানালেন, এ বছর তাঁদের থিম পরিবেশ ও প্রকৃতি। পরিবেশ সচেতনতার প্রচার দেখা যাবে মণ্ডপে। মণ্ডপ সাজানো হবে পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে। থাকবে মাটির তৈরি বিভিন্ন মডেল। ইকো সিস্টেম কী ভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায় তা নিয়েও প্রচার করা হবে। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই প্রতিমার হাতে অস্ত্রের বদলে থাকবে পদ্মফুল।
|
|
সুকিয়া স্ট্রিটের বৃন্দাবন মাতৃমন্দিরে থাকবে ছয় বা সাতের দশকের বারোয়ারি মণ্ডপের ছোঁয়া। রঙিন কাপড়ের নকশা, বেলোয়ারি ঝাড়লন্ঠন থাকবে, বসবে নহবতও। বাদুড়বাগান সর্বজনীনের ৯৮ বছরের পুজোয় থিম না থাকলেও সাবেকিয়ানায় থাকবে নানা চমক, জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। আমহার্স্ট রো সর্বজনীনের সাবেকি পুজোর সামনে আবার বসছে মেলা।
কৈলাস বোস স্ট্রিট দুর্গোৎসবে খুব সাধারণ জিনিস দিয়েই প্রতি বছর থিম তৈরি হয়। এ বছর মণ্ডপ সাজছে পাটের দড়ি দিয়ে। থাকবে কাঠের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি নানা নকশাও। পূর্ব মেদিনীপুরের কুটিরশিল্পের নিদর্শনও তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
কলেজ স্ট্রিটের কাছে টেমার লেনের পুজো এ বার ৯৬ বছরে পা দিল। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ পুজোয় কখনও থিম হয় না, এ বারও হচ্ছে না। কাছেই ঠনঠনিয়া সর্বজনীনের পুজোও সাবেকি।
|
|
নরেন সেন স্কোয়্যার পুজো কমিটির সদস্যদের দাবি, তাঁদের পুজোয় কোনও চাঁদা তোলা হয় না। পুজো ঘিরে রোজই পাড়ায় খাওয়াদাওয়া চলে। নবমীর দিন থাকে প্রায় ১২০০ মানুষের খাওয়ার আয়োজন। সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের পল্লির যুবকবৃন্দের পুজো এ বছর ৫০ বছরে পা দিল। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ বছর তাঁদের মণ্ডপসজ্জায় থাকছে জমিদারবাড়ির ছোঁয়া। পুজো জুড়ে থাকছে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজন।
শিয়ালদহ অঞ্চলের বেশির ভাগ পুজোই সাবেকি। তবে এর মধ্যে বৈঠকখানা রোডের ৩৭-এর পল্লি থিম দিয়েই প্রতি বছর বাজিমাত করতে চায়। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ বার মণ্ডপ সাজানো হবে তুষের নানা নকশায়। বৌবাজার এলাকার আরপুলি লেনের মধ্য কলকাতা সর্বজনীনে থিম ঝর্নাধারায় নগেন্দ্রনন্দিনী।
উদ্যোক্তারা জানালেন, প্রতিমা থাকবে পাহাড়চূড়ায়। চার দিক থেকে ঝর্নাধারার মতো জল পড়বে। একটা সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে প্রতিমা দেখতে হবে।
শ্রদ্ধানন্দ পার্কের কাছে সূর্য সেন স্ট্রিট এলাকার কানাই ধর লেন অধিবাসীবৃন্দের থিম ‘ফিরে চল মাটির টানে।’
মণ্ডপে থাকবে টেরাকোটা শিল্প। থাকবে টেরাকোটার বল্লমধারী দারোয়ান, সারথি-সহ নানা ধরনের মডেল। |
|
গিরিশ পার্ক জেলিয়াটোলা নবদুর্গার পুজো সাবেকি। প্রতি বারের মতো এ বারও দুর্গার নবরূপ দেখানো হবে। বিবেকানন্দ রোডের সিমুলিয়া সর্বজনীনে প্ল্যাটিনাম জুবিলি উপলক্ষে এ বছর থাকছে বাংলা ব্যান্ডের আয়োজন। সিমলা ব্যায়াম সমিতি ও বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোও সাবেকি।
মানিকতলা এলাকার লালাবাগানের নবাঙ্কুর সঙ্ঘের মণ্ডপ সাজছে মেদিনীপুরের ‘জো পুতুল’ দিয়ে। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, জো পুতুল লুপ্তপ্রায়। এ প্রজন্মের সঙ্গে বর্ণময় জো পুতুলকে পরিচয় করাতেই এই পরিকল্পনা।
প্রতিমার মুখও জো পুতুলের মুখের আদলে গড়া হবে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। কৃষ্ণবাগান নবজীবন সঙ্ঘের মণ্ডপ সাজছে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে শিক্ষাপ্রসারের পরিকল্পনায়।
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|