‘ফ্রম বন্ডেজ টু ফ্রিডম দ্য নেশন’স জার্নি’। স্বাধীনতা ইতিহাসের টুকরো টুকরো ছবি জুড়ে এক প্রদর্শনী।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পদার্পণ থেকে পলাশির যুদ্ধ, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের দৃঢ় ভিত্তি, ক্রমে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্ম, মহাত্মার নেতৃত্ব সবই ঠাঁই পেয়েছে খড়্গপুর আইআইটি’র গ্যালারিতে। স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত হিজলি শহিদ ভবন চত্বরে শুক্রবার এই প্রদর্শনী-কক্ষের উদ্বোধন করেন আইআইটি’র ডিরেক্টর দামোদর আচারিয়া। তাঁর কথায়, “দেশ-বিদেশের বহু মানুষ এখানে আসেন। এই কক্ষ তাঁদের জন্য।” গ্যালারিটি গড়ে উঠেছে আইআইটি’র নেহরু মিউজিয়াম অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্যোগে। |
১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ঘটে হিজলি হত্যাকাণ্ড। ইংরেজদের গুলিতে প্রাণ হারান দুই বিপ্লবী। এক জন সুভাষচন্দ্র বসুর সহপাঠী সন্তোষ মিত্র। অন্য জন, মাস্টারদা সূর্য সেনের সহকর্মী তারকেশ্বর সেনগুপ্ত। ওই ঘটনার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষেই এই প্রদর্শনী কক্ষ। এখন যেখানে খড়্গপুর আইআইটি’র পুরনো ভবন, পরাধীন ভারতে সেখানেই ছিল হিজলি বন্দি নিবাস। অদূরে প্রথম মহিলা জেল। ১৬ সেপ্টেম্বরের সেই রাতে হিজলি বন্দি নিবাসে ‘পাগলা ঘন্টা’ বাজিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায় ইংরেজ পুলিশ। খবর পেয়ে সুভাষচন্দ্র ও যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত হিজলিতে আসেন। হিজলি ও চট্টগ্রাম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ওই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এক সভা হয়। সভাপতিত্ব করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। হিজলি শহিদ ভবনের পাশেই শহিদচক। প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর এখানেই শহিদ দিবস পালিত হয়। শুক্রবারও সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিরেক্টর দামোদর আচারিয়া, নেহরু মিউজিয়াম অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি সেন প্রমুখ।
প্রদর্শনীতে ২০টি ফাইবার শিটে স্বাধীনতার ইতিহাসের ২০টি মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে। অবয়বগুলো তৈরি করেছেন প্রখ্যাত ভাস্কর সুনীল পাল। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ, স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের ভূমিকা, মেদিনীপুরের তমলুক ও কাঁথি অঞ্চলে নারী স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী ‘ভগিনী সেনা’র জন্ম, ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেসের আত্মপ্রকাশ, বঙ্গভঙ্গ ও স্বদেশি আন্দোলন, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড সবই রয়েছে। অবয়বের নীচে বাংলা, ইংরাজি ও হিন্দিতে প্রতিটি ঘটনার বিবরণ। ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেছিলেন, “স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরতেই আমাদের এই উদ্যোগ।” শহিদ ভবনের দেখভালের দায়িত্বে থাকা অর্ণব হাজরা জানালেন, এ বার হিজলি জেলের ইতিহাস ও মেদিনীপুর জেলার ইতিহাস নিয়ে এমন গ্যালারি তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। |