নিজস্ব সংবাদদাতা • বাউড়িয়া |
দেড় বছর আগে গ্রামবাসীদের সোনার গয়না এবং টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল হাওড়ার বাউড়িয়ার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। অবশেষে পুলিশ তাঁকে ধরতে পারল। বুধবার রাতে হাওড়া শহর থেকে অসিত বাগ নামে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। ঠিক কত টাকা তিনি প্রতারণা করেছেন, তা বোঝার জন্য গ্রামবাসীদের আটকে থাকা গয়না বা না-পাওয়া টাকার ব্যাপারে প্রমাণপত্র-সহ দরখাস্ত করতে বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে বহু দরখাস্ত।
ধৃতের বাড়ি হুগলির চণ্ডীতলায়। ৩৫ বছর ধরে তিনি বাউড়িয়া বাজারে একটি সোনার দোকান চালাচ্ছিলেন। বেশির ভাগ দিন দোকানেই থাকতেন। বানানোর পাশাপাশি তিনি গয়না বন্ধক রেখে গ্রামবাসীদের টাকাও দিতেন। চকমধু, খাজুরি, খাসখামার প্রভৃতি গ্রামের বহু জরির কারিগর-সহ কয়েকশো মানুষের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল।
বছর দেড়েক আগে অসিতবাবুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েক জন গ্রামবাসীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। তিনি অগ্রিম টাকা নিয়েও অনেককে গয়না বানিয়ে দেননি এবং অনেকে বন্ধক দেওয়া গয়না ছাড়ানোর জন্য টাকা দিয়েও গয়না পাননি এমনই অভিযোগ।
থানায় সেই অভিযোগ দায়েরও করা হয়। তা জানতে পেরেই দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান অসিতবাবু। চণ্ডীতলায় বাড়িতে এবং আত্মীয়-স্বজনের কাছে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পায়নি পুলিশ।
অসিতবাবু গ্রেফতার হয়েছেন জানতে পেরে বৃহস্পতিবার থেকে দলে দলে গ্রামবাসী ভিড় করছেন থানায়। অনেকে প্রথম দিকে আটকে থাকা গয়না বা টাকার দাবিও জানান। শুক্রবারই থানায় এসেছিলেন চকমধু গ্রামের বাসিন্দা, জরির কারিগর শেখ সিরাজ। তিনি বলেন, “বন্ধকী গয়না ছাড়ানোর টাকা মিটিয়ে দিয়েও গয়না ফেরত পাইনি। থানায় দরখাস্ত জমা দিয়েছি।” একই কারণে থানায় এসেছিলেন ওই গ্রামেরই শেখ লাল্টু। তিনি বলেন, “এক ভরি সোনার হার গড়ানোর জন্য নগদ টাকা এবং সোনার আংটি জমা দিয়েছিলাম। অসিতবাবু হার বানিয়ে না দিয়ে ঘোরাচ্ছিলেন। এক দিন দেখলাম, তিনি দোকান বন্ধ করে চম্পট দিয়েছেন।”
পুলিশের অনুমান, কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন অসিতবাবু। তাদের দাবি, জেরায় ধৃত ব্যক্তি জানিয়েছেন, গয়না বন্ধক রাখা বা টাকা নেওয়া সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাঁর কাছে আছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। সব দরখাস্ত পাওয়ার পরেই এত টাকা ও গয়না নিয়ে তিনি কী করলেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে। ওই টাকা বা গয়না তিনি কী ভাবে ফেরত দেবেন, তা-ও তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |