ফের চাঙ্গা সীমান্ত-সন্ত্রাস, নিশানায় দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আবার নখদাঁত বার করছে সীমান্তপারের জঙ্গি শিবিরগুলি। বাড়ছে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশও। এ কারণে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর থেকে সন্ত্রাসের কালো ছায়া সরে যাওয়ার কোনও আশু সম্ভাবনা নেই। রাজ্য পুলিশের ডিজি-আইজিদের সঙ্গে বৈঠকে আজ এই বিপদঘণ্টা বাজিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর মতে, জুলাইয়ে মুম্বই এবং সেপ্টেম্বরে দিল্লি হাইকোর্টে বিস্ফোরণ দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নটিকেই ফের সামনে নিয়ে এসেছে।
আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন মনমোহন সিংহ। ১৩০টিরও বেশি দেশের সামনে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে, সন্ত্রাস তার মধ্যে নিঃসন্দেহে বিশেষ গুরুত্ব পেতে চলেছে। এই সফরে পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মনমোহনের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গেও একটি পার্শ্ব-বৈঠকের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। তার ঠিক আগে কৌশলগত কারণেই পাক সন্ত্রাস নিয়ে ভারত সুর চড়াচ্ছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। |
ভোঁতা করতে প্রয়োজন মসৃণ এবং সঙ্ঘবদ্ধ প্রয়াস।” এই সূত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তাও বলেন, “শুধু ভূস্বর্গকে আক্রমণের নিশানা না করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা সন্ত্রাস ছড়াতে চাইছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। মুম্বই-দিল্লি-আমদাবাদ শহরের নামই শুধু বদলে যাচ্ছে। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা ও কৌশল সবই প্রায় একই রকম।”
ঠিক কী তথ্য পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা যে কারণে উদ্বিগ্ন মনমোহন?
তা হল, ভারত বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও মুম্বই হামলার প্রধান মস্তিষ্ক হাফিজ মহম্মদ সঈদ এবং জাকি উর রহমান লকভির মতো জঙ্গি নেতাদের আদৌ নিষ্ক্রিয় করেনি জারদারি সরকার। নামেই গৃহবন্দি, আসলে যথেষ্ট স্বাধীনতাই দেওয়া হচ্ছে তাদের। আগের মতোই প্রকাশ্য সমাবেশে জেহাদের ডাক দিচ্ছে হাফিজ সঈদরা। পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে, বিশেষ করে মুম্বই নিয়ে। অটুট তাদের জঙ্গি নেটওয়ার্কও। নতুন যে জঙ্গিদের তৈরি করা হচ্ছে তার পিছনে এই নেটওয়ার্ক প্রবল ভাবে সক্রিয়। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, “লস্কর এখনও আমাদের জন্য একটি বড় বিপদ। লস্কর একটি বিচ্ছিন্ন জঙ্গি সংগঠন নয়, এটি একটি ধারণা বা মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। যেখানে বহু সংগঠন এবং ব্যক্তি জড়ো হয় ভারতে হামলা চালানোর জন্য সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেতে।” জুলাইয়ে মুম্বই এবং সেপ্টেম্বরে দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য ও প্রমাণ নর্থ ব্লক সংগ্রহ করেছে যার ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে, ভারতের ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন এবং সিমি-র মতো ভারতীয় জঙ্গি সংগঠনগুলিও রয়েছে এই দলে। এরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অস্ত্র এবং অর্থসাহায্যের জন্য যোগাযোগ রেখে চলে ও পারের সন্ত্রাসবাদী কারখানার সঙ্গে।
আমেরিকায় জারদারি-ওবামা তো বটেই, বিশ্বের নেতাদের কাছে এই বিপদের কথা তুলে ধরতে হবে মনমোহনকে। ডিজি-আইজিদের সম্মেলনে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করার পাশাপাশি তার জমিও কিছুটা তৈরি করে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। |