১০০ নম্বরে ফোন করে একই সন্ধ্যায় দু’রকম অভিজ্ঞতা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক দিকে ওই নম্বরে ফোন করে পুলিশের তৎপরতায় নিউ টাউনে উদ্ধার হলেন তিন তরুণী। অন্য দিকে, ছিনতাইয়ের পরে ১০০ নম্বরে ফোন করেও যথাযথ সাড়া না-মেলার অভিযোগ উঠল লাগোয়া অঞ্চল সল্টলেকে।
পুলিশ জানায়, ওই সন্ধ্যায় বারাসত পুলিশ কন্ট্রোলে কর্তব্যরত অফিসারের কাছে ফোন যায় এক মহিলার। তিনি পুলিশকে জানান, নিউ টাউনের সিটি সেন্টারের পাশের একটি বহুতলে আটকে রাখা হয়েছে তাঁকে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ফোন করলে ওই মহিলা পুলিশকে জানান, তাঁকে শৌচাগারে গিয়ে লুকিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। সেখানকার জানলা থেকেই ওড়না নাড়ছেন তিনি। পুলিশ তা দেখে এক বহুতলের ন’তলার সেই ফ্ল্যাটে হানা দেয়। সেখান থেকে ওই তরুণী-সহ তিন জনকে উদ্ধার করা হয়। ফ্ল্যাটে তখন ছিল ছয় যুবক। গ্রেফতার করা হয় তাদের।
পুলিশ জানায়, বছর কুড়ির ওই তিন তরুণী দিল্লি, ইলাহাবাদ ও কলকাতার বাসিন্দা। দিল্লি থেকে আসা তরুণীই প্রথম ১০০ নম্বরে ফোন করেন। পুলিশ জেনেছে, কল সেন্টারে চাকরির টোপ দিয়ে তাঁদের গত ১২ তারিখ নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে আনে সেই যুবকেরা। এর পরে ভিআইপি রোড সংলগ্ন একটি পানশালায় নাচগান করার প্রস্তাব দেয় তাঁদের। রাজি না-হওয়ায় ওই তরুণীদের টাকাপয়সা, গয়নাগাঁটি কেড়ে নিয়ে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় নামে ধৃত এক যুবকের একটি গানের দল আছে। তারা ভিআইপি রোডের একটি পানশালায় গানবাজনা করে।
পুলিশের তৎপরতায় নিউ টাউনের ওই তরুণীরা উদ্ধার পেলেও সল্টলেকের সীমা কেডিয়ার অভিজ্ঞতা অবশ্য একেবারেই আলাদা।
ওই সন্ধ্যাতেই আইএ ব্লক থেকে রিকশায় চেপে শপিং মলে যাচ্ছিলেন তিনি। অভিযোগ, দুই মোটরবাইক আরোহী জোরে তাঁর হাতের ব্যাগ টানলে রিকশা থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়েন সীমাদেবী। ছিনতাইকারীরা ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেওয়ার পরে স্বামীকে ফোন করে ঘটনাটি জানান ওই মহিলা। সীমাদেবীর স্বামী তখনই ফোন করেন ১০০ নম্বরে। কিন্তু অভিযোগ, নিজেরা তৎপর না হয়ে পুলিশ তাঁদের বিধাননগর দক্ষিণ থানার ফোন নম্বর দেয়। ওই নম্বরে ফোন করে দেখা যায়, সেটির কোনও অস্তিত্ব নেই। পরে জানা গিয়েছে, নম্বরটি পাল্টে গিয়েছে।
কেডিয়া পরিবারের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ওঁদের অভিযোগ ঠিক নয়। ১০০-তে ফোন করার পরে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় জানানো হয়। সল্টলেকের বিভিন্ন প্রবেশপথে নজরদারি শুরু হয়েছিল।” তাঁর দাবি, “এই ফোন ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে। নিউ টাউনে ১০০-তে ফোন করায় সাফল্য এসেছে। এক মহিলা বিপদে পড়ে ফোন করাতেই নিউ টাউন থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেছে।”
ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃহস্পতিবার সল্টলেকের সেই ছিনতাইকারীরা একাধিক মহিলাকে নিশানা করেছিল। সীমা কেডিয়ার আগে ব্রডওয়ের উপরে এক ব্যাঙ্ককর্মীর ব্যাগ ছিনতাই করে দুই দুষ্কৃতী। সন্ধ্যার দিকেই সল্টলেক স্টেডিয়ামের কাছে একটি রিকশায় চড়ে যাচ্ছিলেন মিজোরামের বাসিন্দা তিন তরুণী। দুই মোটরবাইক-আরোহী তাঁদের জিনিসও ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল। পরে বাইকটি আইএ মার্কেটের দিকে চলে যায়। ওই ছিনতাইকারীদের এক জনকে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |