মিহিদানার শহরে আসছে ‘আনন্দ’।
বইপ্রেমীরা প্রতীক্ষায় ছিলেন অনেক দিন। অবশেষে আজ, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় কার্জন গেটের কাছে বি সি রোড লাগোয়া বড়বাজারে উদ্বোধন হতে চলেছে আনন্দ পাবলিশার্সের ১৫তম গ্রন্থবিপণি-র। উদ্বোধন করবেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুব্রত পাল।
ফলে কলকাতার বাইরে আনন্দ-মানচিত্রে চন্দননগর, শান্তিনিকেতন, শিলিগুড়ি, মালদা, শিলচর, গুয়াহাটি, কৃষ্ণনগরের পরে ঢুকে পড়তে চলেছে বর্ধমান শহরের নামও। জেলায় তৃতীয়। দুর্গাপুর আর আসানসোল আনন্দ-বিপণি পেয়ে গিয়েছে আগেই।
আনন্দ পাবলিশার্সের নতুন এই বিপণির দায়িত্ব বর্তেছে বর্ধমানের ব্যবসায়ী স্বপন দত্তের উপরে। যেখানে বিপণি হয়েছে, সেখানেই গত প্রায় একশো বছর ধরে ছিল দত্ত পরিবারের পারিবারিক ব্যবসা। স্বপনবাবুর কথায়, “আনন্দ পাবলিশার্সকে বর্ধমান শহরে আনতে পেরে আমি গর্বিত। এত দিন এই শহরের মানুষকে আনন্দের বই কিনতে কলকাতা বা নিদেনপক্ষে দুর্গাপুর-আসানসোলে যেতে হত। সেই অভাব এ বার মিটল।” |
বিপণি সেজে উঠেছে শুক্রবারেই। উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন আনন্দ পাবলিশার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর মিত্র। প্রায় দশ হাজার বই নিয়ে শুরু হচ্ছে যাত্রা। যার মধ্যে রয়েছে সর্বনিম্ন ২৫ টাকার অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শকুন্তলা’ থেকে সর্বাধিক ১২০০ টাকা দামে সমরেশ বসুর ‘দেখি নাই ফিরে’। থাকছে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সমগ্র, শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ সমগ্র, মৃনাল সেনের ‘তৃতীয় ভুবন’, অমর্ত্য সেনের ‘তর্কপ্রিয় ভারতীয়’, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সেই সময়’, তারাপদ রায়ের ‘কোথায় যাচ্ছেন তারাপদবাবু’ ইত্যাদি।
সামান্য বেশি টাকার বই কিনলে মিলবে বাড়তি সুবিধাও। যেমন ২০০ টাকার বই কিনলে ক্রেতা পাবেন ৫০ টাকার কুপন। তা অন্য বই কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। ২০০ টাকার উপরে প্রতি ১০০ টাকায় মিলবে অতিরিক্ত ২৫ টাকার কুপন। বিপণি খোলা থাকবে প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। শুধু রবিবার প্রথমার্ধে বিপণি বন্ধ থাকবে।
শহরে গ্রন্থবিপণি খোলার খবরে খুশি কবি-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিমনস্ক নাগরিকেরা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিয়ামের কিউরেটর তথা প্রাবন্ধিক রঙ্গনকান্তি জানার মতে, “এই বিপণি নিঃসন্দেহে বর্ধমানের মানুষের কাছে এক নতুন পুস্তকবিশ্বের দরজা খুলে দেবে।” স্থানীয় ‘আলোবাতাস’ পত্রিকার সম্পাদক, কবি স্বপ্নকমল সরকারের খেদ, “আমাদের অল্প বয়েসে শহরে এ রকম বিপণি থাকল অনেক বেশি পড়ার সুযোগ পেতাম!” উচ্ছ্বসিত ‘বর্ধমান ২০০০’-এর সম্পাদক তথা লেখক কবিতা মুখোপাধ্যায়ও “ ইস্! অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল। ভাবতেই ভাল লাগছে।” |