কেন্দ্রের অভিন্ন মাসুল নীতির জের
সৌর বিদ্যুতে লগ্নি হারাচ্ছে রাজ্য
তিনটি সংস্থা সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে ৪০০ কোটি টাকা লগ্নির সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছু হটে বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়েছে পশ্চিম ভারতে। ২০২২-র মধ্যে সারা ভারতে ন্যাশনাল সোলার মিশনের মাধ্যমে যে ২০ হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে ওঠার কথা, তার ছিটেফোঁটাও পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা পূর্ব ভারতের জুটবে না বলেই আশঙ্কা শিল্পমহলে।
এর কারণ, প্রথমত প্রাকতিক কারণেই পশ্চিম ভারতে বিকিরণ বেশি বলে গুজরাত, রাজস্থানই পছন্দ লগ্নিকারীদের। প্রথম কারণটিকেই আরও প্রকট করে তুলেছে দ্বিতীয় কারণ সারা দেশে সৌর বিদ্যুতের জন্য কেন্দ্রের অভিন্ন মাসুল নীতি। যার জেরে ইউনিটে ১১/১২ টাকা দরে পশ্চিম ভারতে উৎপাদন লাভজনক হলেও পূর্ব ভারতে তা সম্ভব নয়। কেন্দ্রের কাছে নীতি বদলের আর্জি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল ও বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বলেন, “এটা খুবই ন্যায্য দাবি। কেন্দ্রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”
চলতি বছরে বরাত দেওয়া হবে ৩৫০ মেগাওয়াটের। আশঙ্কা, এই বিদ্যুতের মাসুল নির্ধারণে রাজ্যের জন্য বাড়তি হার বেঁধে না-দিলে এ বারও কোনও লগ্নিকারী পূর্ব ভারতে আসবেন না। ‘ওয়েলফেয়ার ফোরাম অফ রিনিউয়েব্ল এনার্জি ইন্ডাস্ট্রিজ’ জানিয়েছে, বেশি বিকিরণ রাজস্থান-গুজরাতে বলেই সেখানে লগ্নিকারীদের আগ্রহ। কেন্দ্র ২০১০-এ সৌর বিদ্যুতের সর্বোচ্চ মাসুল স্থির করেছিল ইউনিট-প্রতি ১৭.৯১ টাকা। তবে ওই দুই রাজ্যে যাঁরা বরাত পান, তাঁদের দর ছিল ইউনিটে ১১/১২ টাকা। সমস্যা হল, বিকিরণ কম বলে এই দরে পূর্ব ভারতে প্রকল্প লাভজনক হবে না। এমনকী সিইএসসি-ও তাদের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ছে গুজরাতে। ফোরাম-এর সাংবাদিক বৈঠকে সম্প্রতি কলকাতার ইন্দো-জার্মান চেম্বারের আঞ্চলিক ডিরেক্টর, বি জি রায় বলেন, “জার্মানি থেকে লগ্নিকারী নিয়ে এসেছি। ‘এলপ্রোটেক’ নামে ওই সংস্থা ২০০ কোটি টাকা লগ্নিতে ১৫ মেগাওয়াটের প্রকল্পের জন্য বাঁকুড়ায় জমিও কিনেছে। কিন্তু সারা দেশে সৌর বিদ্যুতের অভিন্ন দর দেখে তারা পশ্চিম ভারতে চলে যেতে চাইছে।” প্রসঙ্গত, একই ভাবে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় জমি কিনেও পশ্চিম ভারতে চলে গিয়েছে ‘অ্যাস্টনফিল্ড’ (৫ মেগাওয়াট) এবং ‘ভিডিওকন’ (১০ মেগাওয়াট)। এদের মিলিত লগ্নি ছিল ২০০ কোটি টাকার।
রাজ্যের বিকল্প বিদ্যুৎ বিষয়ক পরামর্শদাতা, শান্তিপদ গণ চৌধুরি বলেন, রাজস্থান-গুজরাতের চেয়ে পূর্ব ভারতে বিকিরণের তীব্রতা প্রায় ৮% কম। তাই মাসুল স্থির করার সময় এক একটি অঞ্চলের জন্য এক এক রকম হার দরকার। তাঁর আশঙ্কা, এটা না-হলে পূর্ব ভারত বঞ্চিত হবে বিপুল লগ্নি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে। ভবিষ্যতে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ তৈরি আরও দুর্মূল্য হলে লগ্নির দিক থেকে গুরুত্ব পাবে সৌর বিদ্যুৎ। কিন্তু মাসুল সমস্যা না-মিটলে পিছিয়ে পড়বে পূর্বাঞ্চল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.