অর্পিতা মজুমদার • দুর্গাপুর |
ফ্যাশন মানেই সেখানে যেন একচেটিয়া অধিকার মেয়েদেরই। এই সে দিন পর্যন্ত মোটামুটি এমনটাই ধারণা ছিল। যুগ বদলেছে। এখন ফ্যাশন নিয়ে মহিলাদের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন পুরুষেরাও। নতুন নতুন স্টাইলের পোশাক বাজারে মিলছে সারা বছর। তবে বাঙালির এই শ্রেষ্ঠ উৎসবে বিভিন্ন বস্ত্র বিপণীর কর্ণধারেরা চেষ্টা করেন আরও নতুনত্ব নিয়ে আসতে।
পুজোর চার দিন এক এক দিন এক এক রকম পোশাক পরুন। কী পরবেন? বিভিন্ন বস্ত্র বিপণীর কর্ণধারেরা নিজেদের মতামত দিয়েছেন। অধিকাংশেরই পরামর্শ, সপ্তমীর সন্ধ্যায় পরুন হালকা রঙের পোশাক। অষ্টমীর সকালে রঙিন পাঞ্জাবির সঙ্গে রঙিন ধুতি, সন্ধ্যায় পছন্দসই জমকালো পোশাক। নবমীর সকালে জিন্সের সঙ্গে সাদা পাঞ্জাবি। সন্ধ্যায় পরুন, জিন্সের সঙ্গেই হাতের কাজ করা কুর্তা বা ট্রেন্ডি টি-শার্ট। আর দশমীতে হালকা রঙের প্যান্টের সঙ্গে রঙিন টি-শার্ট পরুন। রং দিয়ে ভুলে থাকুন দশমীর বিষাদ।
বাজার ঘুরে অবশ্য দেখা গিয়েছে, গত কয়েক বছরের মতো এ বারও দাপাচ্ছে জিন্স ও টি-শার্ট। তবে এ বার যে ভাবে টি-শার্টের রং ও ডিজাইনে বৈচিত্র নজরে এসেছে আগে তা সে ভাবে চোখে পড়েনি। রঙ নিয়ে নানা পরীক্ষা নজরে এসেছে এ বার। যেমন, ঘোর লালের সঙ্গে সবুজের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে যাদের এক সঙ্গে দেখার কথা নয় তেমনই দুটি রঙের দ্বন্দ্বহীন সহাবস্থান দেখা যাচ্ছে এ বার।
বাজারে এ বার ফুলহাতা টি-শার্টের রমরমা। হাতার রঙ আবার বিপরীত। বিক্রেতাদের দাবি, নবীন প্রজন্মের মতে, পোশাকের রঙ হতে হবে উজ্জ্বল এবং নজরকাড়া।
টি-শার্ট নিয়ে যখন এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, জিন্স কিন্তু এ বছর ফিরে গিয়েছে পুরনো স্টাইলেই। আগে যেমন জিন্সের কাটিং ও রঙে বৈচিত্র দেখা যেত এ বার কিন্তু তেমন নয়। রেগুলার কাটিংয়ের রমরমা। রং-ও চলতি। তবে রেগুলার জিন্সের সঙ্গে টি-শার্ট ছাড়াও বিশেষ ধরণের শর্ট হাফহাতা শার্ট বাজারে এসেছে। দু’টি মোটা পকেট, কাঁধ ও হাতায় মিলিটারি পোশাকের ঢঙে কাপড়ের বেল্ট দেওয়া। এই শার্ট দেদার বিক্রি হচ্ছে এ বার।
দুর্গাপুরের সাবেক বাজারে বস্ত্রবিপণীর কর্ণধারেরা জানিয়েছেন, রঙিন পাঞ্জাবি ও রঙিন ধুতি বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক হারে।
নবীন প্রজন্মের সঙ্গে এ বার রঙের দৌড়ে পাল্লা দিচ্ছেন মধ্যবয়সী এমনকী প্রবীণেরাও। আধুনিক ট্রেন্ডি পোশাকের দিকে অবশ্য তাঁদের নজর নেই। রঙ দিয়েই বাজিমাৎ করতে চাইছেন তাঁরা। ডিপ ব্লু জিন্সের সঙ্গে হালকা হলুদ বা হালকা নীল টি-শার্ট বা হাফহাতা শার্ট কিনতে দেখা যাচ্ছে ষাটোর্ধ্বদেরও! গতানুগতিক ঘিয়ে বা সাদা রঙের পাঞ্জাবি ছেড়ে তাঁরা কিনছেন চোখ ধাঁধানো জারদৌসী কাজ করা রঙিন পাঞ্জাবি। “আরে বাবা, গিন্নির সঙ্গে পাল্লা দিতে হবে তো!” হাসিমুখে বলছেন দাদু। |