লোক পেতে ঝান্ডা নামিয়েই আন্দোলনের নির্দেশ বিনয়ের
গ্রামের মানুষকে পাশে পেতে প্রয়োজনে লালঝান্ডা ‘নামিয়ে’ আন্দোলনের নির্দেশ দিলেন সিপিএমের কৃষক ফ্রন্টের নেতা তথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় কোঙার। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলির যুক্ত কনভেনশনে বিনয়বাবু এ কথা বলেন।
জরুরি অবস্থায় জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার সময়েও সিপিএম ঝান্ডা নামানোর ‘কৌশল’ নিয়েছিল। শহরের সাধারণ মানুষকে পাশে পেতেই প্রমোদ দাশগুপ্ত, জ্যোতি বসুরা তখন এই কৌশল নিয়েছিলেন। এ বার গ্রামে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও সেই কৌশল নিতে চলেছে সিপিএম।
ক্ষমতায় থাকাকালীন দলীয় পতাকা নামিয়ে মিছিল করার কথা সিপিএম স্বপ্নেও কোনও দিন ভাবেনি। বরং তাদের বিরুদ্ধেই বার বার অভিযোগ উঠেছে, বিরোধী কংগ্রেস বা তৃণমূলের পতাকা নামিয়ে দেওয়ার। কিন্তু বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। গত শনিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাড়োয়া সফরে গোটা যাত্রাপথে সিপিএম বা শরিক দলের কোনও ঝান্ডা চোখে পড়েনি। বিনয়বাবু বলেন, “আমরা ৩৪ বছর মার না খেয়ে বড় হয়েছি। নিজেদের রাজার জাত ভেবেছি। এখন পুরনো অভ্যাস চলবে না। অন্য ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে। কে দুর্বল, কে সবল বিচার না করে সবাইকে জনিয়ে নিয়েই কর্মসূচি পালন করতে হবে।”
নেতাজি ইন্ডোরে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলির কনভেনশন। নিজস্ব চিত্র
বিনয়বাবু বলেন, “আমাদের কৃষকদের কাছে যেতে হবে। তারা যদি আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে থাকে, তা হলেও তাদের কাছে যেতে হবে। আন্দোলনে আসার জন্য তাদের বোঝাতে হবে। আমাদের সঙ্গে আসতে যদি তাদের আপত্তি থাকে, তা হলে বলবেন, দরকারে আমরা ঝান্ডা নামিয়ে নেব। কিন্তু কৃষক স্বার্থে আমাদের সঙ্গে আসুন।” বিনয়বাবুর কথায়, “অবিলম্বে পাটের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকে সঙ্গে পেতে প্রয়োজনে আমরা দলীয় পতাকা রাখব না। মানুষকে বোঝাতে হবে, লড়াইটা বড় কথা। আপনি আমাদের সঙ্গে আসুন।” নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, সন্ত্রাস ও হামলা বন্ধ করা, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ধান, পাট-সহ সব ফসলের লাভজনক দর, কৃষিতে কম দামে বিদ্যুৎ ইত্যাদি দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে কনভেনশন ডাকা হয়। গ্রামাঞ্চলে বামেদের ভিত যে দুর্বল হয়ে গিয়েছে, বিধানসভা ভোটেই তা স্পষ্ট। এই অবস্থায় সিপিএম-সহ বামপন্থীরা আন্দোলনের ডাক দিলে সাধারণ মানুষ তাতে কতটা সাড়া দেবে, তা নিয়ে নেতারাই সন্দেহে। সে কারণেই বিনয়বাবুরা মনে করছেন, ঝান্ডা নামিয়ে আন্দোলনের ডাক দিলে তাঁরা সাধারণ মানুষকে পাশে পেতে পারেন। কনভেনশনে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বা রেজ্জাক মোল্লা মঞ্চের নিচে বসে ছিলেন। অন্যদিকে, সিপিআইয়ের প্রবোধ পণ্ডা, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানি, আরএসপির সুভাষ নস্কর প্রমুখ কৃষক নেতা দীর্ঘক্ষণ বক্তৃতা করেন। সব মিলিয়ে স্পষ্ট বিনয়বাবুর কথা মতোই শরিকদের যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে চায় সিপিএম। সভায় যথেষ্ট ভিড় হয়েছে। তা দেখে নেতারা খুশি। কৃষক সভার সভাপতি মদন ঘোষের অভিযোগ, বর্ধমান থেকে আটটি বাস আসতে দেওয়া হয়নি। একটি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। বাম নেতাদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী দ্বিচারিতা করছেন। মুখে কৃষকদের কথা বলেও তাদের স্বার্থ রক্ষা করছেন না।
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.